জীবনের হিসাব – দুর্ভাগ্য নয়, সৌভাগ্যের জন্ম দিন | Tc-Computer

জীবনের হিসাব - দুর্ভাগ্য নয়, সৌভাগ্যের জন্ম দিন | Tc-Computer
জীবনের হিসাব – দুর্ভাগ্য নয়, সৌভাগ্যের জন্ম দিন | Tc-Computer

জীবনের হিসাব – দুর্ভাগ্য নয়, সৌভাগ্যের জন্ম দিন | Tc-Computer

জীবন কখনও সরল সোজা পথ নয়, এটি চ্যালেঞ্জের এক অপূর্ব মিশ্রণ। প্রতিটি বাধা আমাদের সামনে দু’টি পথ তৈরি করে—আমরা কি এটিকে দুর্ভাগ্যের গল্প হিসেবে দেখবো, নাকি সৌভাগ্যের সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করবো? Tc-Computer বিশ্বাস করে, প্রযুক্তি এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।

এই চিন্তাধারার সঙ্গে একমত হয়ে আসুন, আমরা একসাথে আবিষ্কার করি জীবনের নতুন দিগন্ত, যেখানে প্রত্যেক চ্যালেঞ্জ হবে জয়ের নতুন সুযোগ। আপনার জীবনের এই যাত্রা ইতিবাচকতার আলোয় উদ্ভাসিত হোক।

পরাজয়কে জয় করার অনুশীলন:

আমরা যদি প্যালেস্টাইনের দিকে তাকাই তাহলে অনায়াসেই দেখতে পাই তার করুন চিত্র। যুদ্ধ বিদ্ধস্ত, ক্ষত-বিক্ষত, প্রহৃত, দুর্দশাগ্রস্ত তবুও দেশ ছাড়তে রাজি নয় প্যালেস্টাইনের নাগরিক ও যোদ্ধারা। মরণপণ তাদের যুদ্ধ । এভাবেই যুগের পর যুগ ধরে তাদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে আসছেন তারা। তাদের মনোবল, শক্তি, ধৈর্য্য একটি চরম আগ্রাসী মারণাস্ত্র ব্যবহারকারী দেশ ও তার যোদ্ধাদেরকেও পিছু হঠতে বাধ্য করেছে বার বার। সেই প্যালেস্টাইনের জাতির পিতা কালজয়ী মহান নেতা ইয়াসির আরাফাত সারাটি জীবন সংগ্রাম করে গেছেন প্রিয় জন্মভূমির জন্য।

তিনি প্রতিটি পদক্ষেপে বিজয়ী হয়েছেন তার দেশ ও জাতির কাছে। বার বার আক্রমণ, রাতের অন্ধকারে হামলা এসব কখনই তাকে জয়ের আকাঙ্ক্ষা থেকে দূরে রাখতে পারেনি। তার স্বপ্ন ছিল মরণপণ স্বাধীনতা। তার যোদ্ধারা মহা শক্তিধর ইসরাইলের প্রতিটি আঘাতের পাল্টা জবাব দিতে ভুল করেননি। তাদের এ পাল্টা জবাব হল পরাজয়কে জয় করার অনুশীলন।

যে জাতি আত্ম-রক্ষার যুদ্ধে যুগের পর যুগ ধরে নিজেদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে জানে তারা সর্ব অবস্থাতেই বিজয়ী। পরাজয় কখনই তাদের কাম্য নয়। তারা পরাজয়কে মেনে নিতে জানে না। বিজয় তাদের স্বপ্ন। এ স্বপ্ন পূরণের জন্য তারা আজও সংগ্রাম করে চলেছেন অনবরত। জিততে তাদের হবেই। তারা দৃঢ় সংকল্প নিয়ে যুদ্ধ ক্ষেত্রে বিচরণ করেন এবং জয়ী হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করেন; ফলে পরাজয়ের গ্লানিও তাদেরকে কখনও নিরুৎসাহিত করতে পারে না; বলেই তারা যুগ যুগ ধরে মরণপণ যুদ্ধে নিজেদের জন্মভূমিকে রক্ষা করে চলেছেন।ভুল করে বসত ।

শিক্ষক তাকে উপদেশ দিয়েছিলেন যে, প্রতিদিন তুমি কি কি ভুল করছ? কোন্ কোন্ ভুলত্রুটিগুলো তোমার ব্যক্তিত্বে বাধা তৈরি করছে নিরবে নিভৃতে সেগুলোকে আবিস্কার কর এবং যেন সেগুলোর পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার প্রতি খেয়াল রাখ । একদিন দেখবে তোমার আর কোন ভুলই হচ্ছে না এবং ধীরে ধীরে সাফল্যের দ্বার উন্মুক্ত হচ্ছে। এভাবেই তুমি একদিন সফল

হবে।

শিক্ষকের এ উপদেশ ছাত্রটির মনে অসীম উৎসাহের জন্ম দিল । সেদিনই রাতে ঘুমোতে গিয়ে তার আর ঘুম এল না। শিক্ষকের কথাগুলোই বার বার মনে পড়ছিল। শেষ রাতে কিছুক্ষণ ঘুম এলেও হঠাৎ তা ভেঙ্গে গেলে পুনরায় সেই কথাগুলো তার মনে পড়তে লাগল । নিজের ভুলগুলো আবিস্কার না করে কিছুতেই তার পক্ষে ঘুমানো সম্ভব ছিল না। অন্ধকারে শুয়ে সে ভাবতে লাগল, কেন সাফল্যে বাধা গ্রস্থ হচ্ছি। ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও সাফল্যের পথে পৌঁছানোর জন্য কোন্ কোন্ উপায়ের সন্ধান করা যায় ।

এক সময় সে তার শিক্ষকের উপদেশগুলোর পুনরাবৃত্তি করতে লাগল । ভাবল তার আরও অনেক কিছুই শেখার আছে। সে নিজের আত্ম-বিশ্লেষণ করতে লাগল । এখান থেকেই তার কর্মপন্থা শুরু হল। একদিন সে সাফল্যের সু-উচ্চ চূড়ায় পৌছে গেল। শিক্ষক তার সাফল্যে মুগ্ধ হয়ে একখানা প্রশংসা পত্র লিখে পাঠালেন

আপনার জন্য শিক্ষা হচ্ছে, গঠনমূলকভাবে আত্ম-বিশ্লেষণ করুন। আপনার অক্ষমতাগুলোকে সক্ষমতায় পরিণত করার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করুন। আপনার উচ্চাকাঙ্ক্ষা হবে বলিষ্ঠ প্রত্যয়যুক্ত। জীবন প্রতিষ্ঠায় আপনি একজন সুদক্ষ কারিগর হিসেবে নিজেকে তৈরী করার গভীর ইচ্ছা শক্তি নিয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করুন।

ভুলে যাবেন না আপনি যদি পেশায় ছাত্র হয়ে থাকেন তাহলে এখানে কর্ম বুঝাতে আপনার প্রতিদিনের স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর পাঠ অধ্যয়ন করা। সময়কে যথাযথ ব্যবহার এবং সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার দৃঢ় সংকল্প। নিজেকে প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার পূরণে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা ।

এভাবে ব্যক্তি হিসেবে আপনি যে পেশারই হোন না কেন, মানুষ হিসেবে সাফল্য অর্জনের মূলমন্ত্র একই ।

যে পথে লক্ষ লক্ষ ইয়াসির আরাফাতের আত্ম-ত্যাগের স্মৃতি মিশে আছে সে পথে একটি ফিলিস্তিনি যোদ্ধা বেঁচে থাকলেও যুদ্ধ চলবে এই মনোভাবের জন্যেই ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ করে চলেছে। এ তাদের চিরন্তনী বিজয়ের যুদ্ধ। পরাজয়কে জয় করার জ্বলন্ত প্রমাণ এখানেই। তিক্ত, নির্মম পরাজয়কে জয়ে পরিণত করার অদ্ভুত রহস্যের সন্ধান আমরা এ সত্য কাহিনী থেকেই জানতে পারি

প্রথিতযশা ও সফল ব্যক্তিদের জীবন অধ্যয়ন করলে দেখা যাবে যারা জীবনে অসীম সাফল্য অর্জন করেছেন তারা সকলেই জীবনে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। কঠিন বাধার সম্মুখে তারা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন, শিখেছেন পরাজয়কে পদদলিত করে সাফল্যের পথে এগিয়ে চলতে ।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় যুদ্ধক্ষেত্র হচ্ছে জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার যুদ্ধ। বিজয়ীদের জন্য এ যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ অনস্বীকার্য। তাই কোন কারণে জীবনে ব্যর্থতা নেমে এলে পরাজয়কে প্রশ্রয় না দেয়া। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে জয়-পরাজয় নিয়েই মানব জীবন। পরাজয়কে জয়ে পরিণত করাই এ জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

আপনার প্রতিটি পরাজয় থেকে কিছু উদ্ধার করার সিদ্ধান্ত নিন। কোন কাজে অগ্রসর হলে যদি ভুল করে বসেন তাহলে সুস্থ মস্তিষ্কে ভেবে চিন্তে ভুলের কারণটা খুঁজে বের করুন। এভাবে প্রতিটি ভুলের কারণ বিশ্লেষণ করলে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। পরাজয়কে জয়ে পরিণত করার শিক্ষা এখান থেকেই পাওয়া যায়।

নিজেকে সর্বদা জয়ের জন্য প্রস্তুত করুন। বার বার মনে করিয়ে দিন যে মানুষের পক্ষে যতটা নিখুঁত হওয়া সম্ভব আপনি ততটা নিখুঁত করে নিজেকে তৈরী করতে সদা সচেষ্ট। এবার নিজেকে গভীর মনোযোগের সাথে তৃতীয় পক্ষের মত বিশ্লেষণ করুন। আপনার এমন কোন ত্রুটি আছে কি যা আপনার সাফল্যের পথে কিংবা জয়ের জন্য বাধা তৈরী করছে।

খুঁজে দেখুন । এমন সব ত্রুটিগুলোকে একের পর এক সংশোধন করে নিন। আপনার মত অনেক মানুষই এমন সব ভুলত্রুটিগুলোকে সংশোধন না করে শেষে তার স্বভাব চরিত্রে এসব এতই বেশি অভ্যস্ত হয়ে যায় যে পরে সে তার উন্নতির পথটাই খুঁজে পান না। BOF RESE

অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র তার শিক্ষকের কাছে প্রায়ই একই রকম ভুলগুলোকে এড়িয়ে যেতে সক্ষম হলো ফলে দু’টি ম্যাচেই সে জিতে খেলায় সমতা ফিরে আনল এবং এর সুবাদে তার যে আত্ম-শক্তি আত্ম-বিশ্বাসের জন্ম দিল তাতে পঞ্চম ম্যাচেও জয়ী হল বাংলাদেশ। পর পর দু’টি ম্যাচে যে ভুলগুলো পরাজয় নামের হতাশার কাফন জড়িয়েছিল বাংলাদেশ দলকে। সে ভুলগুলো থেকেই যে শিক্ষা লাভ করেছিল অধিনায়ক বাশারের দল তা তাদেরকে পরবর্তী তিনটি ম্যাচ জয় করে বিজয় মুকুট পরিয়ে দিল ।

নাফিস, মাসুদের দূরন্ত ব্যাটিং ও রফিক, মানজারুলদের দ্রুত উইকেট শিকারে জিম্বাবুয়ের দূরন্ত ব্যাটিংয়ে ধ্বস নেমে এল। সীমাহীন আত্ম-শক্তিতে বলীয়ান হল বাংলাদেশ দল। ৫০ ওভারের আগেই গুটিয়ে গেল তাতেন্দা তাইবুর দল । জিতে গেল বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ম্যাচ জেতার কারণে যে আত্ম-বিশ্বাস জাগল বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের মনে তাতে তাদের মনোবল আরও সুদৃঢ় হওয়াতে সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে এবং নিজেদের জয়ের তৃতীয় ম্যাচটিতেও এক অবিস্মরণীয় জয়ের মাধ্যমে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আনন্দে মেতে উঠল পুরো দেশ ও জাতি। সিরিজ জয়ের তৃতীয় ম্যাচে মোঃ রফিক ও আফতাব আমদের দূরন্ত ব্যাটিং সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। বিশ্ব ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও এ রকম ব্যাটিং প্রশংসার দাবীদার। ক্রিকেট দলের সবাই এ জয়ের অংশীদার।

Paps এ জয়ের থেকে আমরা কি শিক্ষা অর্জন করতে পারি? এ কথা সত্য যে এক সময় বাংলাদেশকে ১৭০ কিংবা ১৮০ রানের টার্গেট পূরণ করতে সমস্ত উইকেট ব্যয় করতে হত কিন্তু টার্গেট পূরণ হত না। আবার দু’শো রানের টার্গেটও পূরণ করতে গিয়ে সবাই অল আউট হয়ে যেত।

কিন্তু এখন বাংলাদেশ প্রথম বারের মত শক্তিশালী ক্রিকেট দল বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে সে আত্ম-বিশ্বাস ও আত্ম-শক্তির সন্ধান লাভ করেছে তাতে সে সব সময়ে মনে করে ২৫০ রানের টার্গেট ওভার করে এ দেশ বিজয়ী হওয়ার ক্ষমতা রাখে। যার প্রমাণ জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। তাহলে এ দলের লক্ষ্য হবে যে, সব সময়ে বিপক্ষ দলের রান স্কোর যেন খুব বেশি হলেও ২৫০ এর উপরে না ওঠে

আবার স্বাভাবিক অবস্থায় যেন ২২০ এর উপরে না যায়। এবং যদি এ ক্রিকেট দলটি সব সময় ব্যাটিং, ফিল্ডিং ও বোলিং উভয় ক্ষেত্রেই লক্ষ্যমাত্রা

  • উদ্দেশ্য প্রতিষ্ঠার সংকল্প করা।
  • স্বপ্ন নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্য স্থির করা।
  • কীভাবে কাজ চালিয়ে যাবেন তার একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা।
  • সময় ও কাজের পরিমাপ করা।
  • কাজের পরিবেশগত ধারণা লাভ করা
  • একনিষ্ঠ মনে কাজ করা।
  • সব সময় ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করা।

আপনার কোন না কোন ভুলের জন্য ব্যর্থতা এসে ভীড় করছে জীবনের গতি পথে। বুদ্ধিমানের মত আগে ভুলগুলিকে সনাক্ত করুন। কোন কারণে হেরে গেলে কেন হেরে গেলেন তা বুঝে নিন এবং এখান থেকে নতুন কিছু শিখে নিন । তাহলে পরবর্তীতে আপনি আর একই ভুলের জন্য ব্যর্থ হবেন না । এখানেই আপনার সফলতা।

এবার আমার বাস্তব দেখা থেকে উদাহরণ দিচ্ছি। আমি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখছি। বাংলাদেশ ব্যাটিং করছিল। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে দল। ইংরেজি ধারাভাষ্যকার যে ভুলগুলোর সমালোচনা করেছিল ঠিক একই রকম ভুল দ্বিতীয় ম্যাচটিতেও ব্যাটিং-ফিল্ডিং উভয় ক্ষেত্রেই বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা করে বসল।

ফলে পর পর দু’টি ম্যাচেই তারা পরাজিত হল। অথচ ঐ একই ধরনের ভুল পরের ম্যাচে সংঘটিত না হলে বাংলাদেশ নিশ্চিত ভাবেই খেলায় জিতে যায়। শুধুমাত্র ভুলের পুনরাবৃত্তি ভুলের জন্যই বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের কাছে দু’ম্যাচ হেরে পিছিয়ে পড়ল।

প্রথম ম্যাচে যেমন মিস ফিল্ডিং-এর কারণে রান স্কোর বেড়ে যায় তেমনি ব্যাটসম্যানদের লক্ষ্য স্থির না থাকার কারণেও উইকেট পড়ে চাপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ দল, ফলে স্কোর পর্যন্ত পৌঁছতে তাদের সব উইকেট শেষ হয়ে যায়।

নিশ্চিত ভাবেই পরাজয় মেনে নিতে হয় বাশারের দলকে। অথচ এ ম্যাচে বাংলাদেশ অনায়াসেই জিততে পারতো যদি রান স্কোর নিয়ন্ত্রণ অথবা ব্যাটসম্যানরা শতর্কভাবে প্রতিটি বলকে মোকাবেলা করত। পরবর্তী ম্যাচেও একই ভুল করে বসে বাংলাদেশ দল, ফলে এ ম্যাচেও পরাজয় মেনে নিতে হয় তাদের। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ ম্যাচে পূর্বের ভুলগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়ায় মনোবল ফিরে পায় বাংলাদেশ দল। এ মনোবলের জোরেই সে তার

দশম সর্বোপরি সময় এবং শ্রমের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্তে নিজেকে কর্মে ব্যস্ত রাখা ।

ভাগ্যকে দোষ না দিয়ে যে ভুলগুলির জন্য আপনার জীবনে ব্যর্থতা নেমে এসেছে বলে আপনি মনে করেন সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করে দেখুন। কখনও হেরে গেল শিখে নিন।

গভীরভাবে জেনে নিন; দুর্ভাগ্য, হতভাগ্য, দুরাশা, দুশ্চিন্তা, হতাশা এগুলোকে পদদলিত করে আপনাকে সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে হবে সুতরাং নিজের মনোবলকে অধিক শক্তিশালী ও আত্ম-নির্ভরশীলতার সাথে পরিচালিত করুন। তাহলে অবশ্যই আপনি সাফল্যের মুখ দেখবেন।

দুর্ভাগ্য নয় সৌভাগ্যের জন্ম দিন
দুর্ভাগ্য নয় সৌভাগ্যের জন্ম দিন

দুর্ভাগ্য নয় সৌভাগ্যের জন্ম দিন:

আমাদের মাঝে অনেকেই স্বীয় ব্যর্থতার জন্য ভাগ্যকে দোষারোপ করে থাকি আর নিয়তিকে মেনে নিই। অথচ বিশ্ব সাহিত্যের ইতিহাস অধ্যয়ন করলে দেখা যাবে যে অনেক বিখ্যাত মনীষীরাও একাধিকবার ব্যর্থ হয়েও হাল ছাড়েননি। ভাগ্যকে দোষারোপ করেননি, নিয়তিকে কখনই মেনে নেননি বরং ব্যর্থতা থেকে চরম শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। সে শিক্ষাই পরবর্তীতে সফলতা অর্জনে সহায়তা করেছে। তাঁরা মনে মনে ভেবেছেন ব্যর্থতার কারণ অবশ্যই আছে।

কারণ ছাড়া পৃথিবীতে কোন কিছুই সংঘটিত হয় না; আগে কারণটাকে আবিস্কার করেছেন। তারপর আবার ভেবেছেন যে, সৌভাগ্যের বিপরীত শব্দ হচ্ছে দুর্ভাগ্য (যার বিপরীত শব্দ আছে মূলত তার দু’টি দিকই আছে। তাই যে দিকটি ভাল সেটিই তার একান্ত প্রয়োজন। এবং ভাল দিকটিকে অর্জন করতে নিশ্চয়ই বিশেষ কিছু গুণাবলীর প্রয়োজন। আগে সেই গুণাবলীগুলো অর্জন করতে হবে । তারপর দুর্ভাগ্যকে সৌভাগ্যে পরিণত করার কঠিন প্রয়াস থাকলে সৌভাগ্য জীবনে আসবেই।

বোকার মত ভাগ্যের কিংবা নিয়তির উপর আস্থা রেখে জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করার নির্মম নজীরও রয়েছে পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ ব্যর্থ মানুষের জীবন

নির্ধারণ করে খেলার মাঠে তার বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়। তাহলে অবশ্যই তারা নিজেদেরকে মর্যাদার লড়াইয়ে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে উন্নীত করতে সমর্থ হবে। এভাবেই তারা একদিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবে।

তাদের যা প্রয়োজন তা হল লক্ষ্য মাত্রা অর্জনে দৃঢ় সংকল্প হওয়া, বোলিং, ব্যাটিং ও ফিল্ডিং এর সমন্বয় ও সংযোগ স্থাপন। উদ্দেশ্য কঠোরভাবে প্রতিপক্ষকে আঘাত হেনে দুর্বল ও নিরুৎসাহিত করতে পারলেই যে কোন দলের পক্ষে বিজয় ছিনিয়ে আনা সম্ভব। যদি তার আকাঙ্ক্ষা সুগভীর ও দৃঢ় সংকল্প মনোভাবের সাথে প্রতিপক্ষের মোকাবেলায় সীমাহীন আত্ম-বিশ্বাসে নিজেকে আত্ম-শক্তিতে বলীয়ান করে তুলতে পারে।

তাহলে তার ব্যাটিং যেমন হবে, ফিল্ডিংও ঠিক তেমন হবে এবং সাথে সাথে বোলিংও তাই। ফলে সে দল অনায়াসেই বিজয়ী হতে পারবে। আত্ম-বিশ্বাস, আত্ম-শক্তি, দৃঢ় প্রত্যয়, দৃঢ় সংকল্প, উচ্চাকাঙ্ক্ষা, উদ্দেশ্য প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায় এমনি অলৌকিক শক্তি ও ফলাফল প্রদর্শন করে যা সীমাহীন ও অদৃশ্য বস্তুর ন্যায় অদ্ভুত রহস্যের সৃষ্টিকারী অসীম আভাসপূর্ণ । দেখা যায় বল অনেক উপরে উঠে গেছে যা ক্যাচ ধরাও মুশকিল অথচ ফিল্ডার আত্ম-বিশ্বাসী হয়ে লাফ মারতেই বল তার তালু বন্দী হল।

তার কাছে এ ক্যাচগুলো মাঝে মাঝে সত্যিই অলৌকিক মনে হয়। সে আরও আত্ম-বিশ্বাস ফিরে পায়। ব্যাটসম্যানের ক্ষেত্রেও এমনটি হয় যে বল সে আত্ম-বিশ্বাসের সাথে বড়জোর মোকাবেলা করতে চায় অলৌকিকভাবে তা ছক্কা-চারের কোঠায় চলে যায়। বোলারের অনেক বলও তাই একটু দৃঢ়তার সাথে বল মারতে মারতেই অলৌকিকভাবে মিডল স্ট্যাম্প, অফ স্ট্যাম্প, লেগ স্ট্যাম্প এভাবে একটিতে না একটিতে লেগেই উইকেই শিকার হয় । এর সবই উপরোক্ত গুণগুলির কারণে সংঘটিত হয় । আর তখনই একটি দল বিজয়ী হয়। বিজয়ের গুড় রহস্য মূলত এখানেই ।

এবার আমাদের শিক্ষার্থীর জন্য কি কি গুণাবলীর প্রয়োজন তা লক্ষ্য করুনঃ প্রতিদিনের ভুলগুলো সনাক্ত করে তা শুধরানোর ব্যবস্থা নেয়া। কীভাবে সফলতার সহিত কাজ করা যায় তার একটি কর্মসূচী তৈরী করা। দৃঢ় প্রত্যয়, দৃঢ় সংকল্প ও উচ্চাকাক্ষার সাথে কাজ করা। কোন কাজে ব্যর্থ হলে তা থেকে আত্মোপলব্ধি জ্ঞানের সঞ্চার করা এবং অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো ।

বিজয়ী হওয়ার মনোবাসনা:

মানুষ তার নিজ জীবনের স্থপতি। সে দৃঢ়ভাবে যা কামনা করে তা সে পায়। তার এ পাওয়ার মাঝে অনেকগুলি গুণের সমন্বয় থাকে। সে গুণগুলিকে যদি সে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে তবে সে আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সফল হতে পারে । আর যদি তার গুণের সংযোগ না হয় তবে সে কিছুই আশা করতে পারে না।

সে যদি তার সময়কে সঠিকভাবে ভাগ করে নিজ কর্তব্য সম্পন্ন করে নেয়, তবে সে জীবনে সফলতা অর্জন করবেই। কিন্তু সে যদি জীবনের প্রতি তার কর্তব্য ও কর্মের প্রতি ঔদাসীন হন। তাহলে তার ব্যর্থতা অনিবার্য হয়ে পড়ে। দিন দিন তাকে দুর্ভাগ্যজনক অস্তিত্বকে টেনে নিয়ে বেড়াতে হয়।

এ জীবনে কষ্ট ছাড়া কিছুই লাভ হয় না। বাস্তবিক পক্ষে বাধা-বিঘ্ন না থাকলে জীবন নিরানন্দ হয়ে পড়ে। খেলায় যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকে আর পূর্বেই ফলাফল জানা যায়, তবে সে খেলায় কোন আনন্দ অনুভব হয় না । তাই খেলায় তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলে বিজয়ী ও পরাজিত উভয় পক্ষই পরম আনন্দ লাভ করে।

সে জন্যে জীবনে দুঃখ-কষ্ট, ব্যর্থতার মাঝেই আপনাকে বিজয়ী হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা পোষণ করতে হবে। এবং কঠোরভাবে শ্রমের প্রতি আগ্রহ দেখাতে পারলেই আপনি সফলতার আনন্দ খুঁজে পাবেন যা আপনাকে লক্ষ্যে পৌঁছার অনুপ্রেরণা যোগাবে।

আপনার বিজয়ী হওয়ার গভীর মনোবাসনা থাকা চাই । আপনি মন থেকে যা ইতিবাচক ভাববেন বাস্তবে তা ইতিবাচকই হতে বাধ্য। মনে রাখবেন, মানব মনের প্রত্যেকটি ইতিবাচক ভাবনাই তাকে আত্ম-বিশ্বাসী ও দৃঢ় প্রত্যয়ী করে তোলে । তার আকাঙ্ক্ষা হয় সুদৃঢ়, স্বপ্ন হয় সুউচ্চ কর্মক্ষেত্র হয় সুগম। কারণ বিজয়ের উচ্চাশা পোষণকারীরাই সাফল্যের পথযাত্রী। যদি আপনি (Positive attitude) ইতিবাচক ভাবনার অধিকারী হন ।

আপনার বিজয়ী মনোবাসনার সামনে পৃথিবী হবে একটি আয়নার মত; আপনি হাসলে সেও হাসবে; আপনি ভেংচি কাটলে, সেও ভেংচি কাটবে। যদি আপনি একে লাল কাঁচের ভেতর দিয়ে দেখেন তাহলে সবই লাল ও গোলাপী মনে হবে। এরূপ আপনার ইতিবাচক মনোভাবে জীবনকে যেভাবে দেখবেন সেভাবেই মনে হবে। নীলের ভেতর দিয়ে দেখলে সবই নীল; ধোঁয়াটে কাঁচের মধ্য দিয়ে

কাহিনীর মাঝে। যিনি নিয়তিকে মেনে নেননি। চরম ব্যর্থতার মধ্যেও যিনি সামনে অগ্রসর হওয়ার দৃঢ় সংকল্পে বিচলিত হননি। বার বার নিজের ব্যর্থতার কারণগুলো নিয়ে রাতদিন আত্ম-বিশ্লেষণের মাধ্যমে সাফল্যের পথে ব্রতী হয়েছেন তিনি হলেন মার্কিন যুক্ত রাজ্যের মিশিগানের ডিয়ারবর্ণের মেয়র অভিল হাবার্ড।

তিনি ১৭ বছর যাবৎ এক নাগাড়ে ডিয়ারবর্ণের মেয়র পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং দেশের নাগরিক প্রশাসনের সবচেয়ে উজ্জ্বল ও সম্মানিত কর্মকর্তা হিসেবে সর্বাধিক জনপ্রিয়তা ছিল তারই। অথচ ডিয়ারবর্ণের মেয়র হওয়ার পূর্বে দীর্ঘ দশটি বছর ব্যর্থতার পেছনের ভুলগুলোর পুনরাবৃত্তি করেছেন তিনি ।

এখানে হয়তো তিনি দুর্ভাগ্যের অজুহাত দেখিয়ে নিয়তিকে দোষারোপ করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যেতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। দৃঢ় সংকল্পের সাথে বার বার সাফল্যের কথা ভেবেছেন। তার এ স্বপ্ন সফলও হয়েছে।

প্রায় চিরস্থায়ী বিজেতা হয়ে ওঠার আগে অভিল হাবার্ড মেয়রের পদে মনোনীত হওয়ার চেষ্টায় তিনবার ব্যর্থ হয়ে দুর্ভাগা প্রমাণিত হয়েছিলেন তবুও তিনি হাল ছাড়েননি। তিনি তিনবার রাজ্যের সিনেটর পদে নির্বাচিত হওয়ার প্রয়াসে ব্যর্থ হয়েছেন। একবার কংগ্রেসের মনোনয়নের দৌড়ে পরাজিত হন।

তবে তিনি পরাজয়গুলিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে নিত্য নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের পর নানা রকম ব্যবহারিক দিক অধ্যয়ন করেছিলেন। তার মতে ব্যর্থতা থেকে তিনি সীমাহীন রাজনৈতিক ও ব্যক্তিত্বের চরম শিক্ষা লাভ করেছেন যা তাকে অত্যন্ত বিচক্ষণ ও দূরদর্শিতাসম্পন্ন প্রায় এক অপরাজয় রাজনৈতিক সফল নেতার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছিল।

সক্রেটিস পদ্ধতির একটি বিশেষ দিক ছিল মানুষকে নৈতিক শিক্ষা দেয়া। তিনি বলতেন, “মানুষ বড় হয় জ্ঞানে, পোশাকের পারিপাট্য তার সত্যিকারের পরিচয় নয় ।

সবচেয়ে বড় যে শিক্ষা তিনি মানবের চিন্তা-চেতনায় যুগ যুগ ধরে বীজ বপন করে গেছেন তা হল নো দাইসেল্ফ, ‘নিজেকে জানো’। মানব চিন্তা- চেতনার মহা নায়ক সক্রেটিসের এ পরিপূর্ণ জীবনেও তাকে অপমৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হয়েছে এর বিবরণ আমার হাউ টু সার্ক্সীড্ ইন লাইফ বইয়ে আছে।

বিজয়ী হওয়ার মানোবাসনা ছাড়া কেউই জগতে বিজয়ী হতে পারেননি এটাই চিরসত্য। টমাস আলভা এডিসনের কথা আমরা সকলেই জানি । তিনি ছিলেন মার্কিন বিজ্ঞানী। ব্যক্তি জীবনে প্রচণ্ড একগুঁয়ে স্বভাবের লোক ছিলেন এডিসন। তখনকার আমেরিকায় এমন একগুঁয়ে লোকের সংখ্যা অতি নগন্য । তিনি বিজয়ী হওয়ার মনোবাসনায় কতই না ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তা আমরা এখন জানব। বৈদ্যুতিক বাল্ব আবিস্কারের আগে তিনি কয়েক হাজার বার গবেষণা করেছিলেন।

এতে একের পর এক ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো তার চোখের সামনে স্পষ্ট হয়ে যেতো এবং পরে সেগুলো শুধরে নিয়ে নতুন উদ্যমে কাজ চালিয়ে যাওয়ায় মনোযোগী হতেন। এভাবে হাজার বার গবেষণায় নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রমের দ্বারা তিনি আলোর বাল্ব আবিস্কারে সফল হন। তাঁর বিজয়ী হওয়ার মনোবাসনা ছিল কত দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ তা এখান থেকেই প্রতীয়মান হয়। সব উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ কারীদের মাঝেই অদ্ভুত চেতনা শক্তি লুকিয়ে আছে কিন্তু তারা তাকে কাজে লাগাতে সমর্থ হন আর যারা তা পারেন না তারা জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে ব্যর্থ হন।

যাদের মাঝে দৃঢ় সংকল্প আছে, কঠোর অধ্যবসায়ের জন্য যারা সদা প্রস্তুত থাকেন, যারা কোন কাজকেই অবহেলার চোখে দেখেন না; তাদের মধ্যেই অদ্ভুত সাফল্যময়ী সম্ভাবনার দিপ্তী বার বার উঁকি দেয় । তারাই জীবনে পরম সুখের সন্ধান লাভ করেন।

আপনার সমস্যা তখনই দুঃসাধ্য হয়ে উঠবে যখন মনে করবেন যে এর কোন সমাধান নেই । বিজয়ী হওয়ার কথা ভাবুন আর কঠোর শ্রমে আত্মনিয়োগ

দেখলে সবই ঝাপসা ও মলিন মনে হবে। তেমনি জীবনকে সফলতার সিঁড়িতে দাঁড় করালে জীবন হবে সাফল্যময় যদি নেতিবাচক ভাবনায় ব্যর্থতার সিঁড়িতে দাঁড় করানো হয় তবে জীবন হবে ব্যর্থতার সঙ্গী। ইতিবাচক মনোভাবের গুরুত্ব তো এখানেই ।

মহাজ্ঞানী সক্রেটিসের কথাই বলি-প্রাচীন এথেন্সের স্বার্থান্বেসী পাদ্রীরা তার ঘোর বিরোধী ছিলেন। তারা ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো দখল করে ভেবেছিলেন সক্রেটিস আর কোন তরুণকে তার নীতি শিক্ষা দিতে পারবে না । তখন নানা শিক্ষার কেন্দ্র স্থল ছিল ধর্মীয় উপাসনালয় তথা ধর্মসভাসদ যা পাদ্রীদের কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত। তখনকার পাদ্রীরা ছিল সম্পূর্ণ আত্ম-কেন্দ্ৰিক । ধর্মান্ধতার কবলে ফেলে নানা বিধি বিধানে মন গড়া বিধান রচনা করে জনগণকে শোষণ করত।

সক্রেটিস যখন সত্যের প্রচার করতে লাগলেন তখন তারা তার উপর ক্ষেপে গেলেন। তখনকার দিনে কোন স্কুল ব্যবস্থা ছিল না। সক্রেটিস শত বাধা সত্ত্বেও ইতিবাচক দৃষ্টি ফেললেন, ভাবলেন তিনি নতুন পন্থা বের করবেন। কীভাবে তরুণদের শিক্ষা দেওয়া যায়। তিনি স্থির করলেন তাদেরকে স্বাধীন নীতি ও সত্য দর্শনের শিক্ষা দেবেন। পাদ্রীরা বাধার প্রাচীর নির্মাণ করল । তিনি ইতিবাচক মনোভাব থেকে একটুও দমলেন না। তিনি তার দর্শন সকলকে শিক্ষা দেবেনই।

এক সময় তিনি ধর্মীয় সভাসদের পরিবর্তে (আজকের স্কুল ব্যবস্থার বিকল্প) রাস্তায়, বাজারে যেখানে যুব সমাজকে পাওয়া যেত সেখানেই তিনি শিক্ষা দিতেন । তিনিই প্রথম মানুষের চিন্তা-ধারায় একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দেন। আর আজ তাঁর মৃত্যুর তেইশ শতাব্দী পরেও তাঁকে সম্মান জানানো হয় মানবের চিন্তাধারার চরম বিপ্লববাদী পরিবর্তনকারী জ্ঞানী বলে ।

তিনি সব সময় মানুষকে বিজয়ী হওয়ার মনোবাসনা প্রকাশের শিক্ষা দিয়েছেন। নেতিবাচক দৃষ্টির পরিবর্তে ইতিবাচক মনোভাবের অধিকারী করার অনুপ্রেরণা যোগান দিয়েছেন ।

মানুষকে জ্ঞানের কথাগুলো সহজভাবে বোঝানোর জন্য সক্রেটিস এক অসাধারণ কর্ম-কৌশলের আশ্রয় নিতেন । তিনি ছিলেন অত্যন্ত কৌশলী ব্যক্তিত্ব । তাঁরা পুরো কৌশলের নাম সক্রেটিসের পদ্ধতি (Socrates method)।

করতে পারে। বরং তার মহৎ কর্মের জন্যেই, অধ্যবসায়ের জোরেই সে জগতে অমর হয়ে থাকে। গৌরবময় কীর্তিতেই মানুষের আসল পরিচয়। যার কোন কীর্তি নেই তার কথা মৃত্যুর পরে ও আগে কেউ স্মরণ করেন না। মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী থেকে তার নাম বিলীন হয়ে যায় ।

তার পৃথিবীর মহাজ্ঞানী, গুণী ও পণ্ডিত ব্যক্তিগণ তাদের গৌরবজনক কীর্তির জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। নামের জন্য নয়, বরং কর্মের জন্যই তাঁরা বিখ্যাত হয়েছেন। জীবনে বিজয়ীর আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।

কোন সদ্য জন্মগ্রহণকারী শিশুর নামের সঙ্গে যদি কোন বিখ্যাত ব্যক্তির নামের অংশ জুড়ে দেয়া হয়, তা হলে ঐ শিশু যে একজন মহান ব্যক্তিত্বে পরিণত হবে তা নয় । অতএব এ কথা নিঃসন্দেহে বলতে হয় যে, নামের জন্যে মানুষ জগতে খ্যাতি লাভ করে না, বরং মহৎ কর্ম, অধ্যবসায় ও কঠোর অনুশীলনই মানুষের নামকে বিখ্যাত করে তোলে । তাই মানব জীবনে নামের কোন ভূমিকা নেই। মানুষ তার কর্মের দ্বারা নামকে বড় করে তোলেন।

জীবন পুষ্পশয্যা নয়:

(Life is not a bed of roses)

জীবন পুষ্পশয্যা নয়, পরাজয়কে জয়ে পরিণত করার অনুশীলনই জীবন । ইংরেজিতে বলা হয় Life is not a bed of roses, failurs is the pillar of suc cess. জীবন পুষ্পশয্যা নয়, যিনি বিফলতার তিক্ত অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে অধ্যবসায়ের সাথে কার্যে অগ্রসর হন, সফলতা তার জন্য সুনিশ্চিত।

অনেক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে আমাদেরকে সুখের স্বর্গ রচনা করতে হয় । পথ দীর্ঘ দেখে পথিক যদি তার যাত্রা বন্ধ রাখে আবার কিছুদূর গিয়ে যদি ফিরে আসে তবে সে কোনদিন গন্তব্য স্থানে পৌঁছতে পারে না। গন্তব্যে পৌঁছতে হলে তাকে পথের ক্লান্তি স্বীকার করতেই হবে।

জীবনে যারা সিদ্ধি লাভ করেছেন, তাদের প্রত্যেককেই বহু বাধা-বিঘ্ন ও দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে। মানুষের মহৎ সাফল্য সাধনা সাপেক্ষ । জীবনে করুন। সমস্যা দেখা দিলেই তা সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।

চলার পথে যখনই বাধার সম্মুখীন হবেন তৎক্ষণাৎ তার মোকাবেলার জন্য নিজেকে কঠিন আত্ম-বিশ্বাসী করে তুলুন। মনে রাখবেন, যে কোন পরিস্থিতিতে আপনি যা দৃঢ়তার সাথে কামনা করবেন তাই আপনার চোখের সামনে ফুটে উঠবে তাই পরাজয়কে পরাজিত করুন। বিজয়ী হওয়ার মনোবাসনা প্রকাশ করুন; আপনি অবশ্যই বিজয়ী হবেন।

নাম মানুষকে বড় করে না:

নাম মানুষকে নয় বরং মানুষই নামকে বড় করে তোলেন। পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষের অনেক সুন্দর সুন্দর নাম আছে। কিন্তু নাম দ্বারা কেউ স্না জগতে খ্যাতি লাভ করতে পারেননি। যদি নাম দিয়ে কেউ খ্যাতি লাভ করতে পারতো তাহলে বিখ্যাত মনীষীদের নামগুলো নিলামে বিক্রি হতো। হাজার হাজার কোটি কোটি ডলার হত তার দাম।

যাদের অঢেল সম্পদ আছে তারাই হত খ্যাতির মালিক। এমনকি পিতার বিখ্যাত নামের অংশীদারীত্বেও পুত্রের খ্যাতির ভূমিকা নেই। যদি থাকতো তাহলে পিতার খ্যাতিকে পুত্র তার নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতো। বাঘের বাচ্চা বাঘ হয় এটা সত্যি তবে বাঘের বাচ্চা বাঘের মত লড়াই করেই বাঘে পরিণত হয়। নয়তো বাঘ এবং বিড়ালের আকৃতিতে তেমন পার্থক্য নেই। বাঘ গঠনে বড় বিড়াল গঠনে ছোট। এই হল তফাৎ ।

নাম কখনই মানুষকে বড় করে না; বরং মহৎ কার্যাবলী, সীমাহীন অধ্যবসায়, দৃঢ় সংকল্প ও বিজয়ী হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষাই মানুষকে বিখ্যাত করে তোলে ।

এক সময় সীমাবদ্ধ জীবনের অবসান ঘটিয়ে মানুষকে এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয়। পেছনে পড়ে থাকে তার নাম। অনেক মানুষেরই হয়তো ধারণা হতে পারে নামই মানুষকে অমর করে রাখে। আসলে এ কথাটি সত্যি নয়। নামের মধ্যে এমন কোন গৌরব নেই যার জন্যে মানুষ অমরত্ব লাভ কথা নয় ।

প্রতিটি বিজয়ী মানুষের ইচ্ছা শক্তির অভিব্যক্তিতে সব সময়ই দৃঢ় সংকল্প, সীমাহীন উচ্চাশা ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকবে। বিজয়ীদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য হয় উদ্দেশ্যভিত্তিক। (Objective set)

তাই Objective এর প্রতিশব্দ সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকা অত্যাবশ্যক। আপনার প্রতিটি কাজের সফলতার প্রয়োজনে প্রতিশব্দগুলোকে বার বার Replace করুন। (Purpose, Aims, Goals, Terget, Mission, Result), তাহলে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে, আমাদের আকাঙ্ক্ষাকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, একটি কর্ম-পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়িত করার পদক্ষেপ গ্রহণ ।

আমাদের লক্ষ্য অর্জনে যে স্বপ্ন (Dreams) থাকবে তা নিম্নরূপ- পরিকল্পনা

  • নির্দিষ্ট সময়
  • আত্মনিয়োগের অঙ্গীকার
  • কর্ম সম্পাদনের দৃঢ় প্রত্যয়
  • মরণপণ প্রতিজ্ঞা
  • সাফল্যের উচ্চাকাঙ্ক্ষা।

উপরোক্ত গুণগুলোর সঠিক প্রয়োগ করতে পারলেই আমরা বিজয়ী হতে পারব ।

সফলতা লাভ করতে হলে আপনাকে সকল বাধা-বিপত্তিকে জয় করেই সফলতার পথে অগ্রসর হতে হবে।

প্রাচীন শাস্ত্রে আছে, “কর্মহি সত্যমেব জীবন” অর্থাৎ কর্মের মধ্যেই জীবনের সাফল্য বীজ নিহিত । তাই শত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও আমাদের কাজের মাধ্যমেই জীবনকে গৌরবময় করে তুলতে হবে। কিন্তু কাজ করার জন্য চাই সুষ্ঠু ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা। কারণ বিশৃঙ্খল চিন্তার ফসল যে কাজ তা মানব কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণই বয়ে আনতে পারে।

তাই আমাদের প্রথমে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মধ্যে সমন্বয় থাকা আবশ্যক। কেননা, অনেক কিছুই পরিকল্পনা করা হল, কিন্তু আদৌ বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া হল না। এমন পরিকল্পনার কোন মূল্য নেই ।

আপনার বাস্তবায়নহীন পরিকল্পনা মিথ্যা মরীচিকা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই আপনি যেটুকু পরিকল্পনা করবেন সেটুকুর প্রকৃতি অনুযায়ী কাজের মাঝে নিজেকে নিয়োজিত রাখাই জ্ঞানীর পরিচয়। কারণ যে কাঠ জ্বলেনি তাকে আমরা যেমন আগুন বলি না, তেমনি বাস্তবায়নহীন পরিকল্পনাও কিছুই নয়। নিজেকে সব সময় কাজে ব্যস্ত রাখুন। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে ধীরে ধীরে বৃহৎ পরিকল্পনায় হাত দিন। এভাবেই আপনার জীবন স্বার্থক

হবে।

আমাদের ক্ষুদ্র জীবনকে সফল ও স্বার্থক করে তোলার অনেক কিছুই ভাবতে হয়, শিখতে হয়, এবং নানাবিধ গুণাবলীর অধিকারী হতে হয় । শিক্ষার কথাই বলি, ব্যক্তি জীবনে আমরাঁ যে শিক্ষা অর্জন করে থাকি সে শিক্ষায় আমাদের দু’ধরনের আত্মোপলব্ধি জ্ঞানের সন্ধান প্রয়োজন। প্রথমটি হল, কী করে জীবিকা অর্জন করতে হয় আর দ্বিতীয়টি হল, তার সাথে সাথে কীভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত তথা সফল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা যায় ৷

যশ, খ্যাতি, সফলতা, বিজয়ী ইত্যাদি নানা গুণের অধিকারী করে কীভাবে ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও সীমাহীন যোগ্যতা অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে বিজয়ীর আসনে সমাসীন করা যায়। দ্বিতীয় শিক্ষাটি হচ্ছে এই ।

আপনি যদি কাউকে তার জীবনের লক্ষ্যের কথা জিজ্ঞেস করেন তাহলে সে অনায়াসেই বলবে সে সফল হতে চায়, জীবনে সুখি হতে চায় এবং সারাটি জীবন স্বচ্ছল জীবন যাপন করতে চায় । এগুলো তার ইচ্ছার কথা ইচ্ছা শক্তির

সাথে মহান স্রষ্টার অস্তিত্বের সন্ধান পেয়েছেন। মহামানব হযরত মুহাম্মদ (দঃ) যে অস্তিত্বের বিশদ বর্ণনা তার প্রবর্তিত ধর্ম ইসলামের মাঝে দেখিয়ে দিয়েছেন ।

যে কোন ধর্মই হোক না কেন ধর্ম মানব জীবনকে সুন্দর একটি গতিপথ নির্দেশ করে। যদিও পৃথিবীতে একমাত্র মুহম্মাদ (দঃ)-এর ধর্ম ও দর্শনই সর্বশ্রেষ্ঠ তবুও প্রচলিত সব ধর্মই মানব মুক্তির ও মঙ্গলের জন্যেই। সব ধর্মেই সব মহামানবই স্রষ্টার ভয়, পরকালীন জীবনের কথা মানব চিন্তা-চেতনায় ঢুকিয়ে দিয়ে তার জীবনকে করেছেন নিয়ন্ত্রিত, যুগিয়েছেন মহৎ দর্শনের সন্ধান ।

সে ভেবেছে মানব কল্যাণের কথা, পরকালের অনন্ত জীবনের কথা: মুক্তির কথা। আপন করতে সক্ষম হয়েছে মানুষকে। সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে সমাজে। মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডায় আরও নানা ধর্মীয় উপাসনালয়ে একত্রিত করে মানুষকে করতে পেরেছে সমাজবদ্ধ, সুসংবদ্ধ, সভ্য ও সুরুচির কারিগর। পরস্পরের মাঝে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সুসম্পর্কের বন্ধন। তার চিন্তা-চেতনায়, ধ্যান-ধারণায়, কর্মে -অনুপ্রেরণায় স্রষ্টা ও সৃষ্টির আত্মোপলব্ধি জ্ঞানের ধারা বয়ে গেছে । ক্রমে ক্রমে মানুষ বুঝতে পেরেছে তার এ জীবন ক্ষণস্থায়ী। অতি অল্প।

এ অল্প ইহকালীন জীবনের পরে আরেকটি দীর্ঘ জীবনের সন্ধান রয়েছে সকল ধর্মে সে জীবনই তার প্রকৃত জীবন। দীর্ঘস্থায়ী জীবন। দুনিয়ার সুখ, শান্তি, ভোগ, বিলাস যেখানে তুচ্ছ। সকালের একটি ফুল যেমন বিকেলেই ঝড়ে যায় দুনিয়ার জীবনও ঠিক তাই। পৃথিবীর এ জীবনই শুধু তার কাম্য নয়। সে পরজীবনের সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও ভোগ বিলাসের সন্ধান পেতে চায়। আর তখনই সে ধর্মে বিশ্বাস করে, স্রষ্টার অস্তি ত্বকে স্বীকার করে। আপন করে পেতে চায় তাকে। স্রষ্টার সন্তুষ্টির জন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ধর্ম। আর ধর্ম ও স্রষ্টার সান্নিধ্যের কাছে যাওয়ার জন্যই প্রতিষ্ঠিই হয়েছে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা সহ আরও নানাবিধ উপাসনালয়, ধর্ম যেই হোক না কেন সব ধর্মেই, সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়, কল্যাণ-অকল্যাণ ও মানব মুক্তির দর্শন রয়েছে।

এগুলোকে বুঝে যে মহা সত্যের ভিত্তিতে স্রষ্টাকে স্মরণ পূর্বক প্রচলিত ধর্মের বিধি-মোতাবেক জীবনকে পরিচালিত করতে পারবে সেই পরকালীন জীবনের সন্ধান লাভ করবে। অবশ্য মুহাম্মদ (দঃ)-এর প্রবর্তিত ধর্ম ও দর্শনের মাঝে এ জীবনের সন্ধানের বিশদ বর্ণনা দেয়া হয়েছে। তাই যে ধর্মের,

মানুষের জন্য ধর্ম, ধর্মের জন্য মানুষ নয়:

স্রষ্টার এ বিশাল সৃষ্টি জগতের মধ্যে মানুষই একমাত্র জীব যাকে নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। মানুষ ছাড়া অন্যান্য জীবকে ভাবতে হয় না; সিদ্ধান্ত নিতে হয় না; বা সে ভাবনাশক্তি ও সিদ্ধান্ত-জ্ঞান স্রষ্টা সে জীবে দেননি। বিবেক-বুদ্ধি বোধ জ্ঞান যে জীবের মধ্যে নেই শুধু সে জীবেই নয় রবং এ বিশাল পৃথিবীর সমস্ত সৃষ্টি, প্রকৃতির সমস্ত কিছুই স্রষ্টা মানুষের মঙ্গলের জন্যই সৃষ্টি করেছেন ।

আর মানুষের মঙ্গলের জন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ধর্মের। মানুষের জন্যেই ধর্ম; ধর্মের জন্য মানুষ নয় । যেখানেই ধর্মের সন্ধান মেলে, সেখানেই স্রষ্টার অস্তিত্বের খোঁজ পাওয়া যায়।

তবুও স্রষ্টাকে কেউ মানেন, মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন, অস্তিত্বকে স্বীকার করেন; আবার কেউ এসব করেন না। তবে স্রষ্টাকে যারা মানেন না বা স্বীকার করেন না, তাদের এ ব্যাপারটা মৌখিক। কেননা, তাদের আত্মা কোন না কোন ভাবে স্রষ্টার অস্তিত্বকে স্বীকার করেন। হতে পারে তা অজান্তে-অজ্ঞাতে । এ দিক থেকে বিচার করলে বলা চলে নাস্তি কতা বলতে কিছু নেই; এর অস্তিত্বটা শুধু মৌখিক। প্রকৃতপক্ষে নাস্তিকের আত্মাও অবচেতনভাবে স্রষ্টাকে স্মরণ করেন, মানেন বা বিশ্বাস করেন ।

যদিও কোন কোন মানুষ মৌখিকভাবে স্রষ্টাকে অস্বীকার বা অবিশ্বাস করে থাকেন। আবার মৌখিকভাবে স্রষ্টাকে স্বীকার করেন না এমন লোকের সংখ্যাও পৃথিবীতে খুবই নগন্য । আর এ সংখ্যা আস্তিকের ধারে কাছেও আসার অযোগ্য যা একেবারেই সংখ্যা লঘু । তাই নাস্তিকের বিষয়টি বিচার বিশ্লেষণের মানদণ্ডে বর্জণীয়। আবার ধর্মান্ধতা ও ধর্মভীরুতাই ধর্ম বিশ্বাস কিংবা ধার্মিকের পরিচয় নয়, বরং ধর্ম সচেতনতা ও স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাসই ধার্মিকের প্রকৃত পরিচয় ।

‘আইয়্যামে জাহেলীয়াহ্’ বা অজ্ঞতার যুগে যখন মানুষ নানারূপ কু-সংস্কারে আচ্ছন্ন, অন্ধকারে নিমজ্জিত তখন পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন সর্বযুগের, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মদ (দঃ)। এমনিভাবে পৃথিবীতে অসংখ্য, অগণিত মহামানবের আবির্ভাব ঘটেছে। তাঁরা নিয়ে এসেছেন ধর্ম । মানুষকে করেছেন সভ্য ও সুরুচির কারিগর।

এমনিভাবে পৃথিবীর যেখানেই যে ধর্মের প্রবর্তন হয়েছে: সেখানেই মানুষ নিজেদের মঙ্গল, সমাজ সভ্যতা ও পরস্পরের সাথে সম্প্রীতির বন্ধনের সাথে হবেই। সেটা দু’দিন আগে নয়তো দু’দিন পরে। এ প্রসঙ্গে- আল্লাহ্ তা’আলা পবিত্র কোরআন শরীফে ইরশাদ করেছেন, “কুল্লু নাফছিন যায়েকাতুল মাউত।”

অর্থাৎ প্রত্যেক জীবকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। জীবন একটি মৌলিক ধারা। যে ধারা মানুষ থেকে শুরু করে অপরাপর প্রত্যেক জীবের মাঝে কাজ করে। আর জীবন হল মহামূল্যবান ও অপার এক অদৃশ্য শক্তির নাম। মানবীয় জীবন একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবর্তিত।

আর এ সময়ের একটি মাধ্যম হল মৃত্যু। অর্থাৎ সময়ের সমষ্টির নামই হল জীবন এবং জীবনের জন্যে মৃত্যু। এখানেই স্রষ্টার অস্তিত্ব, কর্তৃত্ব-আধিপত্য, দয়া-মায়া, শাস্তি-ক্ষমা, আশ্রয়-সাহায্য, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, জীবন-মৃত্যু, দেয়া না দেয়া, সৃজন-প্রতিপালন, পরিচালনা, গ্রহণ-বর্জন সবকিছুতেই তার একক অধিকার পরিলক্ষিত। স্রষ্টা আদি, স্রষ্টা অনন্ত, স্রষ্টা একক, স্রষ্টা নিত্য, নিরাকার, স্থিতিবান, সদা সচেতন, সদা বিরাজমান ও বিকশিত।

মানুষের এ মৃত্যু তারই হাতে। তাই মানুষকে এ জীবনের হিসেব মেলাতে হয়। জগতে প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষকে জীবনের যে হিসেবগুলো মেলাতে হয়, তার উপাদানগুলোও স্রষ্টা নিয়ন্ত্রিত। যেমন-সময়, দিন-রাত ও মানব জীবন। সময়কে যেমন কেউ কখনও বেধে রাখতে পারেনি, তেমনি জীবন ও মৃত্যুকেও কেউ ঠেকাতে পারেনি। দিন ও রাতও তাই । এ সবই স্রষ্টার নিয়ন্ত্রণে অনন্ত গতির প্রতীক।

জীবন এক বিশাল রণক্ষেত্র। যার সৈন্য হচ্ছে জগতের প্রত্যেকটি মানুষ। আর যুদ্ধ হচ্ছে আত্মার বিরুদ্ধে। এ যুদ্ধের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে সময়, ঢাল হচ্ছে শ্রম ও তলোয়ার হচ্ছে কর্মোদ্দম বা চেষ্টা। সময়কে শ্রমের দ্বারা চেষ্টার মাধ্যমে জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য লক্ষ্য স্থির করতে পারলেই জীবনের হিসেব মেলানো সম্ভব হবে। জীবনের হিসেব মেলানোর অংক শাস্ত্র হচ্ছে সময় আর তা ব্যবহারের পথ হচ্ছে শ্রম এবং শ্রমকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে প্রয়োজন উদ্যম বা চেষ্টা, দৃঢ় প্রত্যয়, দৃঢ় সংকল্প ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ।

যুদ্ধক্ষেত্রে যেমন অবহেলা ও সামান্য ত্রুটির কারণে পরাজয় অনিবার্য হয়ে পড়ে; তেমনি আত্মার সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে সময়কে ঠিকমত ব্যবহার করতে না পারলে সাফল্য অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এ প্রসঙ্গে প্রবাদ হচ্ছে, Time and tide wait for none”. অর্থাৎ সময় এবং স্রোত কারও জন্যে অপেক্ষা যে জাতির মাঝেই আপনার জন্ম হোক না কেন স্রষ্টার দর্শন ও সৃষ্টির রহস্য মূলত একই। ‘যত মত তত পথ।’ যত ধর্ম তত সমাধানের ভিত্তিতে আপনি মহা সত্যের দর্শন লাভ করে জীবনকে সুন্দর ও সমৃদ্ধির পথে পরিচালিত করতে পারবেন। এটাই মানুষের মঙ্গলের পথ। কারণ মানুষের জন্য ধর্ম, ধর্মের জন্য মানুষ নয় ।

জীবনের হিসাব মেলাবেন কীভাবে:

সাধারণত আমরা দৈনন্দিন যেসব হিসাব করি তাতে অংক শাস্ত্রের আশ্রয় নেই। মোট কথা অংক শাস্ত্রের সাহায্যে আমরা আমাদের যাবতীয় হিসেব- নিকেশ করে থাকি। কিন্তু জীবনের হিসেব কীভাবে মেলানো যায় তার পথ, পন্থা আমরা অনেকেই জানি না। কেউ জানলেও তা ব্যবহার করি না। যারা জানেন এবং ব্যবহার করেন তারাই জীবনে সফলতা লাভ করেন। আর যারা জানেন না বা জেনেও ব্যবহার করেন না তারা ব্যর্থতার বশে জীবনে হতাশা ডেকে আনেন যা তার জীবনকে প্রতিটি পদে পদে বিপদের সম্মুখীন করে তোলে ।

বিলি জীবন একটি গতির প্রতীক। আর এ গতির সমষ্টির নামই হচ্ছে জীবন । বাল্যকাল, ল ও বৃদ্ধকাল এই তিন কালই হচ্ছে তার সমষ্টি । কিন্তু এই তিনটি কালই সময়ের ছকে বাঁধা। তাই মানব জীবন সময়ের ছকে আবদ্ধ। সময়ের গতির সাথে সাথে এ জীবনের কালগুলো একে একে ঝরে যায়। এভাবে এক পর্যায়ে তাকে বৃদ্ধের কোঠায় পৌছে দেয়।

আর তখনই তার জীবনের অবসান ঘটে। কিন্তু এ অবসান থেকে তার মুক্তি নেই। মৃত্যু তার অবধারিত; অনিবার্য। তাই বলতে হয়; Life is nothing.” অর্থাৎ জীবন কিছুই নয়। জীবনের যে কোন সময় মৃত্যু হতে পারে।

আর কখন, কোথায়, কীভাবে তার মৃত্যু হতে পারে তাও মানুষ জানে না। কেননা সে ক্ষমতা স্রষ্টা সব মানুষকে দেননি। মানুষের জীবন খাতায় তিনি একটি নামই লিখে দিয়েছেন, তা হল; “Man is mortal” মানুষ মরণশীল। মরতে তাকে মায়ের সঙ্গে দেখা করার ন্যায় সুনির্দিষ্টভাবে বিজয়ী হওয়ার জন্য দৃঢ় প্রত্যয়ী হয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে ঝাপিয়ে পড়ি তাহলে অবশ্যই আমরা বিজয়ী হব। এরপর নেপোলিয়ান নতুন রণ কৌশলের জন্য সৈন্যদের সামরিক মহড়ার ব্যবস্থা করলেন। এভাবেই তিনি যুদ্ধের পর যুদ্ধে জয়লাভ করে ফরাসীর বিখ্যাত সম্রাট ও সমর নায়ক হওয়ার গৌরব মুকুট অর্জন করেছিলেন

রবার্ট পিল প্রাথমিক জীবনে কিছুই জানতেন না। মঞ্চে উঠলে কথা বলতে তাঁর শরীর অসম্ভব কাঁপতো। কিন্তু তাতে তিনি বিচলিত হননি। অধ্যবসায় ও সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর মাধ্যমে তিনি একদিন বিখ্যাত তর্কবিদ হয়েছিলেন। এ সীমাহীন উৎসাহ বুকে নিয়ে অনুশীলন ও অধ্যবসায়ের দ্বারা কলম্বাস আজকের ও উন্নত বিশ্বের শক্তিশালী দেশ আমেরিকা আবিস্কার করতে সক্ষম হন ।

আপনি যদি পেশায় ছাত্র হয়ে থাকেন তাহলে আপনার উচিত তাদের এ অধ্যবসায়ী জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া । সময়, শ্রম ও অধ্যবসায় ছাড়া জীবনে কিছুই অর্জিত হয় না। এমনকি পরীক্ষার ফলাফলও নয়। অতএব আপনার জীবনের লক্ষ্য স্থির করুন। আপনি কি হতে চান? মনে মনে নেপোলিয়ানের মত বলুন; আমি অবশ্যই সফল হব। আমি জিতবই, আমি জীবনে প্রতিষ্ঠিত হবই ।

আপনি একজন বিখ্যাত মনীষী, বিজ্ঞানী, ডাক্তার, বিখ্যাত গবেষক, কবি হতে চান, আপনার সবচেয়ে বড় পরিচয় হচ্ছে আপনি একজন মানুষ। আর মানুষের অসাধ্য কিছুই নেই। মানুষ সাধনা ও অধ্যবসায়ের দ্বারা পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজকেও হাতের মুঠোয় আনতে পারে। আর কাজের প্রতি অবহেলা ও সময়ের প্রতি অপব্যবহার মানুষকে ব্যর্থতার সর্বনিম্ন স্থানে পৌঁছে দেয়। এরও বহু নজীর চোখে পড়ে। শ্রমবিমুখ জীবন শিকড়বিহীন বৃক্ষের সমতুল্য ।

সামান্যতম তুফানে যেমন শিকড় বিহীন বৃক্ষটি উপড়ে পড়তে পারে; তেমনি শ্রমবিমুখ জীবন প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাধার সম্মুখীন হয়। জীবনের অস্তিত্ব তখন হুমকীর মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়। হতাশার সৃষ্টি করে প্রতিটি ক্ষেত্রে। এগুলোকে মাড়িয়ে চলাই মানব ধর্ম। বিজয়ীদের কাজ। বিজয়ীরা বিপত্তিকে দু’পায়ে পিশে ফেলে সামনের দিকে দুর্গম গতিতে এগিয়ে চলে ।

বিজয়ী হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে যখন আপনি ঠিক এইভাবে করে না। যে সময় একবার অতিক্রান্ত হয়ে যায়; শত সাধনার দ্বারাও তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় । আর তাই সময়ের গতির সাথে তাল মিলিয়ে জীবনের গতিকে সাফল্যময় পথে পরিচালিত করতে হবে।

আমাদের এ ক্ষণস্থায়ী জীবনকে গৌরবময়, স্মরণীয়, বরণীয় ও সাফল্য মণ্ডিত করে তোলার জন্য একমাত্র অস্ত্র হচ্ছে, সময়, শ্রম ও উদ্যম, আর তাই পাশ্চাত্যে সময়কে বলা হয়ে থাকে;- “Time is all best of money. অর্থাৎ সময়ই হচ্ছে সকল সম্পদের শ্রেষ্ঠ সম্পদ । আর প্রখ্যাত মনীষী M. K. Ghande বলেন; Time is life, Life is time balance between life and time can help one reach the highest apex of Success.

মানুষ আপন কর্মের মাধ্যমেই জগতে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। যার কর্ম নেই, তার বেঁচে থাকার কোন অধিকার নেই ।

ফরাসী সম্রাট ও সমর নায়ক নেপোলিয়ান একদিন সমুদ্রের তীরে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন । হঠাৎ দেখতে পেলেন। এক ইংরেজ বালক, একটি ছোট্ট নৌকা তৈরী করায় ব্যস্ত। তিনি ঐ ছোট্ট বালকটির কাণ্ড দেখে অবাক হলেন ।

ছেলেটিকে তাঁর সামনে আনা হল । নেপোলিয়ান তখন খুশি মনে বালকটিকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তুমি এটা দিয়ে কি করবে, বালকটি বলল, “সাগর পাড়ি দেব, সমুদ্রের ওপারে আমার দেশ। মাকে বড় ভালবাসী, তাঁকে বহুদিন ধরে দেখিনা । আমাকে দেশে যাইতে দিন।”

নেপোলিয়ান দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও সময়, শ্রম ও কঠোর অধ্যবসায়ের মাধ্যমে ফরাসীর বিখ্যাত সম্রাট হয়েছিলেন। তাই বালকের চেষ্টা ও শ্রম তাঁর হৃদয়ে গভীরভাবে রেখাপাত করতে লাগল । তিনি মুগ্ধ হয়ে বালককে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন এবং সহচরবৃন্দদের জানালেন যে, পরিশ্রম, চেষ্টা ও সময়কে যথাযথ ব্যবহার ছাড়া পৃথিবীতে কোন কিছুই অর্জিত হয় না। যেমন ছোট্ট বালকটি তার প্রমাণ ।

সে যদি এভাবে নৌকা বানানোর চেষ্টা না করতো; তাহলে হয়তো আমার দৃষ্টি তার উপর এভাবে পড়ত না আর তার দেশও যাওয়া হত না। নেপোলিয়ান বালকের থেকেই একটা নতুন শিক্ষা পেলেন, বালকের তৈরীকৃত নৌকাটি সমুদ্র পাড়ি দেয়ার জন্য যথেষ্ট নয় তবুও বালকটি চেষ্টার কোন ত্রুটি করেনি ।

মায়ের সঙ্গে দেখা করার একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য তাকে নৌকা বানাতে উৎসাহ- উদ্দীপনা যুগিয়েছে। নেপোলিয়ান সৈন্যদের জানালেন আমরা যদি বালকের দুর্গম গতিতে এগিয়ে যাবেন তাহলে অবশ্যই আপনিও বিজয়ী হবেন। মনে রাখবেন, পৃথিবীর কেউ একদিনে বড় হয়নি; অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা ও শ্রম সাধনার বিনিময়ে ইউরোপ কান্ট্রিগুলো উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে গেছেন।

আপনার জীবন কিন্তু থেমে নেই; সুতরাং আপনিও থেমে থাকবেন না। জীবনের হিসেব মেলাতে সময়, শ্রম, উদ্যম ও লক্ষ্য স্থির করে দুর্গম গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে চলুন। দেখবেন আপনি ক্রমে ক্রমেই বিজয়ীর আসনে সমাসীন হয়ে যাচ্ছেন ।

প্রতিটি মানব শিশু জন্ম গ্রহণের পর একে একে বাল্যকালে উপস্থিত হয়, তারপর যৌবনকালে এবং শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধকালে পতিত হয়; এভাবেই একদিন তাকে মৃত্যুবরণ করতে হয়। আর মৃত্যু হলে তার নাম পৃথিবী থেকে মুছে যেতে থাকে। কেবল তাঁদের নামই সকল মানুষের হৃদয়ে কৌতূহলের বিস্ময় হয়ে চির অম্লান হয়ে থাকে। যারা সময়কে কাজে লাগিয়ে আপন কর্মের দ্বারা সাফল্যের পাহাড় রচনা করেছেন। সবাই শ্রদ্ধা ভরে তাঁদেরই স্মরণ করেন ।

 

 

 

 

 

 

 

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Scroll to Top