ছায়্যেদুল ইছতেগফার
দোআ-মুনাজাতের পরিচয়।
الدّعاء শব্দের আভিধানিক অর্থ ডাকা, আহ্বান করা। মানুষ দুনিয়া ও আখেরাতের বিভিন্ন বিষয়ে আল্লাহর নিকট যে প্রার্থনা বা আবেদন জানায় তা-ই দোআ। দোআর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত আরেকটি শব্দ হলো مُنَاجَاتُ (মুনাজাত)। এর আভিধানিক অর্থ অন্তরের কথা চুপিসারে বলা বা চুপেচুপে কথা বলা। আল্লাহর সাথে বান্দার সকল কথা, কথোপকথন, জিকির, প্রার্থনা ও দোআকেই মুনাজাত বলা হয়। দোআ অন্যতম ইবাদত। হাদিস শরিফের ভাষায় الدّعاء مخ العبادۃ দোআ ইবাদতের সার বা মগজ। দোআর আদব হলো বিনীতভাবে, কায়মনোবাক্যে আল্লাহর নিকট চাওয়া। এতে উদাসীন ও অমনযোগী হওয়া উচিত নয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, উদাসীন ও অমনোযোগী ব্যক্তির দোআ আল্লাহ কবুল করেন না। দোআ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন :
أُدْعُوْنِيْ أَسْتَجِب لَكُمْ
অর্থ : তোমরা আমার নিকট দোআ করো, আমি তোমাদের দোআ কবুল করব। (সুরা মুমিন-৬০)
ছায়্যেদুল ইস্তেগফার এর ফজিলত:
এই দোয়াটির নাম স্বয়ং নবী করীম সাঃ “ছায়্যেদুল ইস্তেগফার” রেখেছেন। ছায়্যেদুল ইস্তেগফার এর আভিধানিক অর্থ “ইস্তেগফারের সরদারর” আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা নেয়ার একটি শ্যেষ্ঠ দোয়া। তাই আমারা এই দোয়াটি বেশি বেশি পাঠ করার চেষ্টা করবো।
হাদীসঃ
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দৃড় বিশ্বাসের সাথে এই দোয়াটি পাঠ করবে, দিনের বেলায় তিলাওয়াত করে রাতে মারা যায় এবং রাতে পাঠ করে দিনে মারা যায় সে জান্নাতী হবে।
সায়্যিদুল ইস্তিগফার। সায়্যিদুল ইস্তিগফার হলো সকাল-সন্ধ্যায় পড়ার সর্বোত্তম দুয়া বুখারি শরিফে আছে যে, কোনো ব্যক্তি নিম্নলিখিত সায়্যিদুল ইস্তিগফার সন্ধ্যা বেলা পাঠ করলে সকাল হওয়ার পর্বে যদি সে মারা যায় তবে তার জন্য জান্নাত অবধারিত। আর সকাল বেলা পাঠ করলে সন্ধ্যা হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করলে তার জন্যও জান্নাত অবধারিত।
اللّٰھُمَ اَنْتَ رَبِّی لَا اِلٰہَ الَّا اَنْتَ خَلقْتَنِی وَاَنَا عَبْدُکَ وَ اَنَا عَلٰی عَھْدِکَ وَ وَعْدِکَ مَاسْتَطَعْتُ اَعُوْذُبِکَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ اَبُوْءُلَکَ بِنِعْمَتِکَ عَلَیَّ وَاَبُوْءُ لَکَ بِذَانْبِی فَاغْفِرْلِی فَاِنَّہٗ لَا یَغْفِرُ الذُّنُوْبَ اِلّا اَنْتَ ۔
বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আঁন্ তা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আন্তা খলাক্বতানী ও আনা আবদুকা ও আনা আলা আহ্দিকা , ও ওয়াদিকা ,মাছতা তা’তু, আউযুবিকা, মিন শাররী মা ছনা’তু । আবু- উ লাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা, ওয়া আবূঊ বিযামবি, ফাগফিরলী, ফাইন্নাহু লা ইয়াগপিরুয যনূবা ইল্লা আঁন্ তা ।
অর্থ:- ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রভু। তুমি ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমার চাকর. আমি আপনার প্রতি আমার প্রতিশ্রুতি এবং প্রতিশ্রুতিতে যতটা সম্ভব দৃড়। আমি যা করেছি তার অনিষ্ট থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। আমি আমার প্রতি তোমার অনুগ্রহ স্বীকার করি এবং আমি আমার পাপ স্বীকার করি। তাই আমাকে ক্ষমা করুন। কারণ তুমি ছাড়া পাপ ক্ষমা করার কেউ নেই
প্রীয় মুসলমান ভাই ও বন্ধুগন আপনাদের সুবিধার্থে মুসলমানদের পালনীয় ফজিলতপূর্ণ দোয়া নামাযের মাসআলা মাসায়েল পেতে বা জানাতে আমার এই ওয়েব সাইটকে সাব্সক্রাইব করে রাখুন । যেন পরবর্তী পোষ্টের এর বিজ্ঞপ্তী সহজে পেতে পারেন, ফরজ আমলের পাশা-পাশি নফল আমল করতে উৎসাহিত হোন কারণ নফল আমল বান্দার আমলকে মিজানের পাল্লায় ভারি করে। হাশর ময়দানে অর্থাৎ বিচার দিবসে মিযানের পাল্লায় ফরজের ঘাটতি দেখা দিলে নফল দ্বারা ঘাটতি পূরণ করা হবে। আমার লেখনিতে কোন ভুল-ভ্রান্তি পরিলক্ষিত হলে কমেন্ট এর মাধ্যমে অবহিত অবশ্যই করিবেন যাতে আমি সংশোধন করে নিতে পারি। আমলী জিন্দেগী হলো আসল জিন্দেগী, তাই আমারা আমল করার চেষ্টা করি। কারণ ( العلم بلا عمل کالشجر بلا ثمر ) আমল ছাড়া ইলেম, ফল বিহীন গাছের মত।
আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন। ছুম্মা আমীন।
Thank you for reading the post.