নূরানী পদ্ধতিতে তরিকায়ে তালিম: ২য় সংস্করণ ১ম পর্ব।

 

নূরানী পদ্ধতিতে তরিকায়ে তালিম: ২য় সংস্করণ ১ম পর্ব।

সর্ব প্রথম জেনে রাখুনযে, এইগুলি ট্রেনিংয়ের খোলাছা কথাঃ

১। বিসমিল্লাহ, দুরুদ শরীফ, বসার আদব ডান বাম;

২ । প্রণালী পদ্ধতিতে আট ভাগ;

৩। হরফের তমিজ

৪ । ২৯ হরফের তরতীব;

৫। তবকা;

৬। মাখরাজের তারতীবে হরকতে ছালাছা:

৭। হরকতে ছালাছার দাউর;

৮। হরকতে ছালাছার তমিজ

৯ । মুরাক্কাব;

১০। মদ্দের হরফ;

১১। মদ্দের হরফ ও হরকতের পার্থক্য;

১২ । লীনের হরফ;

১৩। মদ্দের হরফ ও লীনের হরফের পার্থক্য:

১৪ । মদ্দে লীন;

১৫। মদ মোট ১০ প্রকার;

১৬। জযম, ক্বলক্বলাহ, তাশদীদ, ওয়াজিব গুন্নাহঃ

১৭। নুনে সাকিন ও তানভীন ৪ প্রকার;

১৮ । মীমে সাকীন ৩ প্রকার;

১৯ । আউজু এর ৫ সুরত; অর্থাৎ প্রথম জামাত পড়ানোর নিয়ম;

২০। উপরের এইগুলি শিখানোর পর বাচ্চাদেরকে কোরআনের ছবক দিবে।

ছাত্রদেরকে প্রথমে বসার আদব শিক্ষা দিবেন: বসার আদব শিক্ষা দেয়ার নিয়ম

বসার আদব তিন প্রকার

১। দোনো হাটু ফেলিয়া নামাযের মতো।

২ । এক হাটু উঠাইয়া লিখার সময় ।

৩। দোনো হাটু উঠাইয়া খাওয়ার সময় ।

প্রথমে ওস্তাদ ছাত্রদেরকে বলিবেন সামনের দিকে ফিরিয়া আপনাদের ভাত খাওয়ার হাত খানা উঠান, এই কথা বলে ওস্তাদ তার নিজের হাত খানা উঠাইয়া দেখানোর পর ছাত্রদের দিকে ফিরিয়া দুই বার পড়াইবেন- ভাত খাওয়ার হাতের নাম ডান হাত (২ বার) তার পর ওস্তাদ বলবেন:- অপর হাত খানা উঠান এই কথা বলে ওস্তাদ অপর হাত খানা উঠাইয়া দেখানোর পর সামনের দিকে ফিরিয়া ২ বার পড়াইবেন- অপর হাতের নাম বাম হাত ।

তারপর ওস্তাদ সামনের দিকে ফিরিয়া ডান হাতকে লম্বা করে ডানদিকে দেখাইয়া ছাত্রদের দিকে ফিরিয়া দুই বার পড়াইবেন- ডান হাতের দিককে ডান দিক বলে। তারপর ওস্তাদ নিজের বাম হাতকে বামদিকে দেখাইয়া ছাত্রদেরকে দুই বার পড়াবেন- বাম হাতের দিককে বাম দিক বলে। তারপর ওস্তাদ নিজের হাতের শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে উপরে দিকে ইশারা করে ছাত্রদেরকে ২ বার পড়াইবেন— মাথার দিককে উপর দিক বলে ।

তারপর ওস্তাদ নিজের হাতের শাহাদাত আঙ্গুল দিয়ে নিচের দিকে ইশারা করে ২ বার পড়াইবেন: পায়ের দিককে নিচের দিক বলে। তারপর পড়াইবেন ডানের ফজিলত বেশি বামের তুলনায়। এখন ছাত্রদেরকে ডান এবং বামের ফযিলতের কথা বলিয়া দিবেন ।

ছাত্রদেরকে প্রশ্ন করিবেন: আমরা কোন হাত দিয়ে কোরআন মাজিদ ধরে পড়ি? আমরা কোন হাত দিয়ে ভাই খাই? এই ভাবে ডান হাতের অনেক ফযিলত বলবেন।

তারপর বাম হাতের কিছু কথা বলবেন:- “অমিরী কোন হাত দিয়ে নাক পরিষ্কার করি? আমরা কোন হাত দিয়ে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করি?”

ছাত্ররা উভয়টার উত্তর ডান ও বাম দেয়ার পর ওস্তাদ বলিবেন- এই জন্য ডানের ফজিলত বেশি বামের তুলনায়।

১. প্রথমে ওস্তাদ প্রশ্ন করবেন, প্রশ্ন হচ্ছে :

আমি এখন হাতে প্রশ্ন করবো আপনারা মুখে উত্তর দিবেন। তখন ওস্তাদ ডান দিকে হাত রাখবে ছাত্ররা উত্তরে বলবে ডান, উছাদ যখন বাম দিকে হাত রাখবে, ছাত্ররা বলবে বাম। ওস্তাদ আঙ্গুল উপরে উঠাইলে ছাত্ররা বলবে উপর, ওস্তাদ আঙ্গুল নিচের দিকে দেখাইলে ছাত্ররা বলবে নীচ

২. ওস্তাদ বলবেন আমি যখন বোর্ডের ডান পার্শ্বে হাত রাখব। আপনারা বলবেন, ডান। বামপাশে হাত রাখিলে বার্য, উপরে হাত রাখিয়ে উপর, নীচে হাত রাখিলে নীচ। ওস্তাদ এই কথা বলে বোর্ড হাত রেখে ছাত্রদের প্রশ্ন করবেন, তখন ছাত্ররা উত্তর দিবে।

৩. ওস্তাদ বলবেন আমি এখন মুখে প্রশ্ন করবো, আপনারা হাতে উত্তর দিবেন, তখন ওস্তাদ একটা শ্লেট হাতে নিয়ে ছাত্রদেরকে দেখাইয়া দিবেন, আমি যখন ডান বলব তখন আপনারা প্লেট এইভাবে ধরে দেখাবেন, বার্ম বললে এইভাবে, উপর বললে এইভাবে, নীচ বললে এইভাবে।

নূরানী পদ্ধতিতে তরিকায়ে তালিম: ২য় সংস্করণ ১ম পর্ব  আলিফ (ا) পড়ানোর নিয়ম:

প্রথমে ওস্তাদ ছাত্রদেরকে বলবেন আপনারা সকলে বোর্ডে আমার হাতের দিকে দেখতে থাকেন। তারপর ওস্তাদ বোর্ডের মাঝখানে একটা আলিফ (1) লেখা অবস্থার ছাত্রদেরকে প্রশ্ন করবেন: আমার হাত কোন দিক থেকে কোন দিকে যাইতেছে? ছাত্ররা উত্তর দিবে উপর দিক থেকে নিচের দিকে যাইতেছে। তারপর ওস্তাদ নিজে একবার বলবেন, আমার হাত উপর দিক থেকে নিচের দিকে যাইতেছে । তারপর আবার ওস্তাদ ছাত্রদেরকে প্রশ্ন করবেন; আমার হাত

কোন দিক থেকে কোনদিকে যাইতেছে? তখন ছাত্ররা উত্তর দিবে উপর দিক থেকে নিচের দিকে যাইতেছে। তারপর ওস্তাদ বলবেন, ‘আপনাদের শ্লেটের মাঝখানে এইভাবে একটা লেখেন। তারপর ওস্তাদ বলবেন, ‘শ্লেট উল্টাইয়া রাখেন, সকলে আমার মুখের দিকে দেখতে থাকেন। তারপর ওস্তাদ আলিফ, আলিফ বলতে বলতে হেটে হেটে মঙ্ক করাবেন এবং বলবেন যে, ‘এইভাবে হরফের নামের মশ্ক কমপক্ষে ১০০ বার।

তারপর ওস্তাদ বলবেন ‘শ্লেট পরিষ্কার করেন’ সাথে সাথে ওস্তাদও বোর্ড পরিষ্কার করবেন এবং ওস্তাদ বলবেন, “সকলে বোর্ডে দেখতে থাকেন’ এই কথা বলে ওস্তাদ বোর্ডের ডান দিক থেকে চারটি আলিফ (1) লিখবেন এবং পড়বেন। তারপর ছাত্রদেরকে বলবেন, ‘আপনাদের শ্লেটের ডান দিক থেকে এইভাবে লেখতে থাকেন, পড়তে থাকেন।

তখন ছাত্ররা নিজেদের শ্লেটে ডান দিক থেকে লিখবে এবং পড়বে, (এইখানে ওস্তাদের কাজ হচ্ছে ছাত্রদের শ্লেটে লিখিয়া দেয়া তারপর ওস্তাদ বলবেন ‘শ্লেট দেখান’ ছাত্ররা শ্লেট দেখাবে তখন ওস্তাদ বলবেন ‘মাশাআল্লাহ খুব সুন্দর হয়েছে। আরও সুন্দর করে লেখার চেষ্টা করবেন। শ্লেট পরিষ্কার করেন।’

(لفظ اللہ) আল্লাহু পড়ানোর নিয়ম :

সকলে বোর্ডে দেখতে থাকেন, [বলিয়া ওস্তাদ বোর্ডের মাঝখানে ফাঁক ফাঁক করে চারটা ا – ا – ا – ا) আলিফ লিখবেন]

‘আমার সঙ্গে গণেন, (এক, দুই, তিন, চার)’ এভাবে ৩ বার ,আপনারা গণেন’ বলে ওস্তাদ আলিফের নিচে হাত দিয়ে ধরবেন, ছাত্ররা গুণবে (এক দুই তিন চার- ৩ বার) ।

তারপর ওস্তাদ বলবেন যে, ‘আপনাদের শ্লেটের মাঝখানে ফাঁক ফাঁক করে এইভাবে চারটি আলিফ ( ا – ا – ا – ا ) লেখেন।’ তখন ছাত্ররা শ্লেটের মাঝখানে   ফাঁক ফাঁক করে চারটি আলিফ (ا – ا – ا – ا) লিখবে।

ওস্তাদ বলবেন, ‘সকলে বোর্ডে দেখেন- প্রথম আলিফ বাদ দিয়ে ২য় আলিফ ৩য় আলিফের সঙ্গে এইভাবে মিলাইয়া দেন, ৩য় আলিফ চতুর্থ আলিফের সঙ্গে এইভাবে মিলাইয়া দেন, চতুর্থ আলিফের বাম পাশে এইভাবে গোল করে দেন।

ওস্তাদ বলবেন, ‘এই চারটি আলিফ দিয়ে আমরা কি লিখতে পারলাম, জানেন?’ ছাত্ররা উত্তরে বলবে, আল্লাহু (اللہ)। সাথে সাথে ওস্তাদও বলে দিবেন “আল্লাহু (اللہ)।

তারপর ওস্তাদ বলবেন, ‘আল্লাহ (اللہ) কে চেনেন?’

ছাত্ররা উত্তর দিচ্ছে জ্বি।

ওস্তাদ আল্লাহ সম্পর্কে কিছু বলবেন, যেমন‘আমাদেরকে কে সৃষ্টি করেছেন? চন্দ্র সূর্য্য কে সৃষ্টি করেছেন? পাহাড় পর্বত কে সৃষ্টি করেছেন? এই বিশাল পৃথিবীর মালিক কে?’ এইভাবে আরও অনেক প্রশ্ন করবেন ।

ছাত্ররা প্রতি প্রশ্নের উত্তরে বলবে : আল্লাহ ।

তারপর ওস্তাদ বলবেন, ‘সকলে বোর্ডে দেখেন’ বলে ওস্তাদ আল্লাহ (ঝা) শব্দের প্রত্যেক হরফের নিচে হাত রেখে ভাঙ্গা উচ্চারণ দুইবার বলবেন, সাথে সাথে ছাত্ররাও বলবে। যেমন আলিফ, লাম, লাম, হা; আলিফ, লাম লা, হা বলে তারপর ওস্তাদ এক সাথে দুইবার বলবেন আলিফ লাম লাম হা; আলিফ লাম লাম হা- (I) আল্লাহু। সাথে ছাত্ররাও বলবে (اللہ)।

তারপর ওস্তাদ বলবেন, ‘আপনাদের শ্লেটে হাতে ধরে এইভাবে কয়েকবার পড়েনছাত্ররা প্লেট হাতে ধরে পড়বে। তারপর ওস্তাদ বলবেন, ‘সকলে বোর্ডে দেখেনএই কথা বলে ওস্তাদ বোর্ডে দুই বার আল্লাহু শব্দের উপর হাত ঘোরাইবেন এবং সাথে সাথে পড়বেন। তারপর ওস্তাদ ছাত্রদেরকে বলবেন- ‘আপনাদের শ্লেটে এইভাবে কয়েকবার হাত ঘোরানতারপর ওস্তাদ বলবেন ‘শ্লেট পরিষ্কার করেন।

বলে ওস্তাদ বলবেন, ‘সকলে বোর্ডে দেখতে থাকেনবলে ওস্তাদ বোর্ডের ডান দিক থেকে হরফের নাম বলে বলে ২টি (اللہ – اللہ) শব্দ লিখবেন এবং বলবেন এইভাবে  (যেমন আলিফ লাম লাম হা- আল্লাহু, আলিফ লাম লাম হা- আল্লাহু ।

তারপর ওস্তাদ বলবেন, ‘আপনাদের শ্লেটের ডান দিক থেকে এইভাবে লিখতে থাকেন; পড়তে থাকেন।ছাত্ররা শ্লেটের ডান দিক থেকে লিখবে এবং হরফের নাম (আলিফ লাম লাম হা (اللہ) আল্লাহু, আলিফ লাম লাম হা (اللہ) আল্লাহু বলবে  আর লিখেবে। তারপর ওস্তাদ বলবেন ‘শ্লেট দেখান’ ছাত্ররা শ্লেট দেখাবে, ওস্তাদ বলবেন, ‘মাশাআল্লাহ খুব সুন্দর হয়েছে। আরও সুন্দর করে লেখার চেষ্টা করবেন।

ওস্তাদ বলবেন ‘শ্লেট পরিষ্কার করেন’ ছাত্ররা শ্লেট পরিষ্কার করবে, তারপর ওস্তাদ বলবেন- ‘আপনাদের শ্লেটের মাঝখানে সুন্দর করে একটা আল্লাহু (اللہ) লেখেন।ছাত্ররা লিখবে। তারপর ওস্তাদ বলবে ‘শ্লেট দেখান ছাত্ররা দেখাবে, ওস্তাদ বলবেন ‘ঘুরান নিজের দিকে।ছাত্ররা ঘুরাইবে। তারপর ওস্তাদ,বলবেন,‘হরফ উচ্চারণ’ ছাত্ররা উচ্চারণ করবে- (আলিফ লাম লাম হা ১বার) ওস্তাদ বলবেন- ‘আলিফটা মুছেন’ ছাত্ররা মুছবে। ওস্তাদ বলবে ‘দেখান, ঘুরান নিজের দিকে। তারপর ওস্তাদ ভাঙ্গা ভাঙ্গা ২ বার উচ্চারণ করবে- ‘লাম, লাম হা; লাম লাম হা; সাথে সাথে ছাত্ররাও বলবে। তারপর ওস্তাদ এক সাথে বলবে ২ বার ‘লাম লাম হা-লিল্লাহিللہ  “ লাম লাম হা লিল্লাহি للہ সাথে সাথে ছাত্ররাও বলবে ২ বার।

তারপর ওস্তাদ বলবেন- ‘প্রথম লামটা মুছেন’ ছাত্ররা মুছবে, ওস্তাদ বলবেন ‘দেখান, ঘুরান নিজের দিকে।ওস্তাদ ভাঙ্গা ভাঙ্গা উচ্চারণ করাইবে দুই বার, ছাত্ররাও বলবে দুইবার। যেমন, লাম হা, لہ লাম হা;لہ  তারপর ওস্তাদ এক সাথে বলবেন লাম হা-  لہলাহু, লাম হা- لہ লাহু, সাথে সাথে ছাত্ররাও ওস্তাদকে অনুসরণ করিবে I

 

তারপর ওস্তাদ বলবেন ‘ডানপাশে একটা আলিফ (لہ+ا  )  বাড়াইয়া দেন, এই কথা বলে ওস্তাদ বোর্ডে, ছাত্ররা শ্লেটে আলিফ বাড়াইবে । তারপর ওস্তাদ বলবেন- ‘দেখান, ঘুরান নিজের দিকে’ ওস্তাদ ভাঙ্গা ভাঙ্গা উচ্চারণ ২ বার পড়াইবেন, ছাত্ররাও পড়বে। যেমন- এইভাবে আলিফ, লাম, হা;  আলিফ, লাম, হা তার পর ওস্তাদ একসাথে দুইবার বলবেন সাথে ছাত্ররাও বলবে- আলিফ লাম হা- الہ ইলাহুন, আলিফ লাম হা- الہ ইলাহুন । তারপর ওস্তাদ বলবেন ‘শ্লেট পরিষ্কার করেন। ‘

বি. দ্র. প্রণালী :

১. হরফের নামের মশক কমপক্ষে ১০০ বার

২. লেখা পড়া কমপক্ষে এক ঘন্টা





( م ) মীম পড়ানোর নিয়ম:

ওস্তাদ প্রথমে বলবেন, ‘আপনারা সকলে বোর্ডে আমার হাতের দিকে দেখতে থাকেন। এ কথা বলে ওস্তাদ বোর্ডে লেখা অবস্থায় ছাত্রদেরকে প্রশ্ন করবেন (১ বার) ‘আমার হাত কোন দিক থেকে কোন দিকে যাইতেছে? তখন ছাত্ররা উত্তর দিবে নিচের দিক থেকে সোজা উপর দিকে যাইতেছে? আবার ওস্তাদ প্রশ্ন করবেন ‘আমার হাত কোন দিক থেকে কোন দিকে যাইতেছে, ছাত্ররা উত্তর দিবে, বাম দিক থেকে ডান দিকে গোল হয়ে, ওস্তাদ আবার প্রশ্ন করবেন ‘আমার হাত কোন দিক থেকে কোন দিকে যাইতেছে? তখন ছাত্ররা উত্তর দিবে ডান দিক থেকে সোজা বাম দিকে যাইতেছে।

এইভাবে প্রথম বার ওস্তাদ প্রশ্ন করবে ছাত্ররা উত্তর দিবে ।

২য় বার ওস্তাদ নিজেই বলিয়া দিবেন, ছাত্ররা শুনবে- আমার হাত নিচের দিক থেকে সোজা উপরের দিকে যাইতেছে, বাম দিক থেকে ডান দিকে গোল হয়ে, ডান দিক থেকে সোজা বাম দিকে যাইতেছে।

 

৩য় বার ওস্তাদ প্রথম বারের মতো আবার প্রশ্ন করবেন, ছাত্ররাও প্রথম বারের মত উত্তর দিবেন।

তারপর ওস্তাদ বলবেন, ‘আপনাদের শ্লেটের মাঝখানে এইভাবে একটা লেখেন।’ ছাত্ররা লিখবে, আবার ওস্তাদ বলবে, ‘সকলে বোর্ডে দেখেন।’ এই কথা বলে ওস্তাদ বোর্ডে কয়েকবার হাত ঘুরাইবেন এবং বলবেন ‘আপনাদের প্লেটে এইভাবে কয়েকবার হাত ঘুরান।’ তারপর ওস্তাদ বলবেন ‘শ্লেট পরিষ্কার করেন’ বলে ওস্তাদ বোর্ড পরিষ্কার করবেন। ওস্তাদ বলবেন-

সকলে বোর্ডে দেখতে থাকেন। ছাত্ররা বোর্ডে দেখবে এবং ওস্তাদ বোর্ডের ডান দিক থেকে তিন চারটি মীর্যের মাথা লিখবেন। তারপর ওস্তাদ, বলবেন, ‘আপনাদের পেটের ডান দিক থেকে এইভাবে/লেখতে থাকেন। ছাত্ররাও তিন চারটি মীমের মাথা লিখবে। তারপর ওস্তাদ বলবেন, শ্লেট দেখান, শেট পরিষ্কার করেন।

তারপর ওস্তাদ বলবেন, শ্লেটের মাঝখানে সুন্দর করে একটা লেখেন- (ওস্তাদ ও লিখবেন) ছাত্ররা লিখবে এবং ওস্তাদ বলবেন, সকলে বোর্ডে দেখেন’- ছাত্ররা বোর্ডের দিকে দেখবে- তখন ওস্তাদ বলবেন, “বাম/ পাশে এইভাবে একটা আলিফ লাগাইয়া দেন।

তখন ছাত্ররা ওস্তাদের সাথে আলিফ লাগাইরে। তারপর ওস্তাদ বলবেন, ‘শেট উল্টাইয়া রাখেন, সকলে আমার মুখের দিকে দেখতে থাকেন। এই বলে ওস্তাদ ছাত্ররদের সারির মাঝে হেঁটে হেঁটে কয়েকবার (যীগ বমি বলে) মশক করাইবেন এবং বলবেন, ‘এইভাবে হরফের নামের মশক কমপক্ষে ১০০ বার।

ওস্তাদ বলবেন, ‘শ্লেট পরিষ্কার করেন, সকলে বোর্ডে দেখতে থাকেন’ বলে ওস্তাদ বোর্ডের ডান দিক থেকে কয়েকটা মীম লিখাবেন এবং লিখার সময় পড়বেন। তারপর ওস্তাদ বলবেন, ‘আপনাদের পেটের ডান দিক থেকে এইভাবে লেখতে থাকেন, পড়তে থাকেন।’ তখন ছাত্ররা কয়েকটি মীম শেটে লেখবে এবং পড়বে (এইখানে ওস্তাদের কাজ হচ্ছে ছাত্রদের শ্লেটে একটা,একটা লিখিয়া দেয়া)। ওস্তাদ বলবেন, ‘শ্লেট দেখান’ ছাত্ররা শ্লেট দেখালে ওস্তাদ বলবেন, ‘মাশাআল্লাহ খুব সুন্দর হয়েছে। আরও সুন্দর করে লেখার চেষ্টা করবেন।’ ওস্তাদ বলবেন, ‘শ্লেট পরিষ্কার করেন। ছাত্ররা শ্লেট পরিষ্কার করেন।

বি. দ্র. প্রণালী :

১. হরফের নামের মশক কমপক্ষে ১০০ বার

২. লেখা পড়া কমপক্ষে এক ঘন্টা

নূরানী পদ্ধতিতে তরিকায়ে তালিম: ২য় সংস্করণ ১ম পর্ব ত্বা (ط) পড়ানোর নিয়ম:

ওস্তাদ প্রথমে বলবেন- ‘আপনারা সকলে বোর্ডে আমার হাতের দিকে দেখতে থাকেন।’ এ কথা বলে ওস্তাদ বোর্ডের মাঝখানে একটা ত্বাط  লিখবেন । তারপর ওস্তাদ ‘বলবেন আপনাদের শ্লেটের মাঝখানে এইভাবে একটা লেখেন।’ তারপর ওস্তাদ বলবেন, ‘শ্লেট উল্টাইয়া রাখেন, সকলে আমার মুখের দিকে খেতে থাকেন’ বলে ওস্তাদ ছাত্রদের সারির মাঝে হেঁটে হেঁটে কয়েকবার ط – ط – ط (ত্বা ত্বা বলে) মশক করাইবেন এবং বলবেন, এইভাবে হরফের নামের মশক কমপক্ষে ১০০ বার।

ওস্তাদ বলবেন, শ্লেট পরিষ্কার করেন, সকলে বোর্ডে দেখতে থাকেন বলে ওস্তাদ বোর্ডের ডান দিক থেকে কয়েকটা ‘ত্বা’ ط লিখবেন, লিখার সময় পড়বেন । তারপর ওস্তাদ বলবেন- ‘আপনাদের শ্লেটের ডান দিক থেকে এইভাবে লেখতে থাকেন, পড়তে থাকেন।’ তখন ছাত্ররা কয়েকটি ত্বাط  শ্লেটে লেখবে এবং পড়বে (এইখানে ওস্তাদের কাজ হচ্ছে ছাত্রদের শ্লেটে একটা একটা লিখিয়া দেয়া)। ওস্তাদ বলবেন, ‘শ্লেট দেখান, ছাত্ররা শ্লেট দেখালে ওস্তাদ বলবেন ‘মাশাআল্লাহ খুব সুন্দর হয়েছে। আরও সুন্দর করে লেখার চেষ্টা করবেন । ‘ ওস্তাদ বলবেন শ্লেট পরিষ্কার করেন। ছাত্ররা শ্লেট পরিষ্কার করবে।

বি. দ্র. প্ৰণালী :

১. হরফের নামের মশক কমপক্ষে ১০০ বার

২. লেখা পড়া কমপক্ষে একঘন্টা

কঠিন প্রশ্নে পাঁচ দাউর :

১. ত্বা বানান, ২. দেখান, ৩. জ্বা বানান, ৪. দেখান। (চার প্রশ্নে এক দাউর হয়; এইভাবে ৫ দাউরে মোট ২০ প্রশ্ন)

দাউর ওস্তাদ বলবেন, শ্লেট পরিষ্কার করেন।

বি. দ্র. প্রণালী :

১. হরফের নামের মশক কমপক্ষে ১০০ বার

২. নুকতার মশক কমপক্ষে ২০ বার ।

৩. নুক্তাওয়ালা হরফের সঙ্গে নুক্তা ছাড়া হরফ মিলাইয়া সহজ প্রশ্ন পাঁচ

৪. কঠিন প্রশ্ন পাঁচ দাউর।

ভাগের পরীক্ষা পড়ানোর নিয়ম:

প্রথমে ওস্তাদ বলবেন, সকলে বোর্ডে দেখতে থাকেন, বলে ওস্তাদ বোর্ডের ডান দিক থেকে আলিফ-মীম-ত্বা-জ্বা ( ط – ط ط- ط ) লিখবেন। তারপর বলবেন, বলেন, বলে ওস্তাদ হরফের নিচে ধরবেন। ছাত্ররা নাম বলবে । এইভাবে ডান দিক থেকে তিনবার, বাম দিক থেকে তিনবার। তারপর উল্টা পাল্টা ধরবেন। ছাত্ররা বলবে, তারপর ওস্তাদ বলবেন, ভাগের পরীক্ষা। ওস্তাদ বোর্ড পরিষ্কার করবেন ।

হরফের দাউর পড়ানোর নিয়ম:

ওস্তাদ বলবেন, চক শ্লেট হাতে নেন আমি লিখার সঙ্গে সঙ্গে আপনারা লিখবেন। ওস্তাদ একটা হরফ বোর্ডে লিখবেন, সাথে সাথে ছাত্ররা তাদের শ্লেটে লিখবে। ওস্তাদ বলবেন, দেখান, ছাত্ররা দেখাবে, ওস্তাদ বলবেন, নাম বলেন, ছাত্ররা নাম বলবে। এভাবে প্রতিটি ভাগের হরফকে দাউর দিতে হবে এবং ক্লাশে নতুন সবক শুরু করার আগে প্রতিদিন পিছনের ছবককে দাউর দিতে হবে।

জ্বা (ظ) পড়ানোর নিয়ম:

ওস্তাদ প্রথমে বলবেন- আপনাদের শ্লেটের মাঝখানে সুন্দর করে একটা (ত্বা) লেখেন। এ কথা বলে ওস্তাদ বোর্ডের মাঝখানে একটা ط তা লিখবে এবং ছাত্ররাও লিখবে। তারপর ওস্তাদ বলবেন- ‘সকলে বোর্ডে দেখেন’ উপরে এই ভাবে (.) একটা দিন; ছাত্ররা দিবে। তারপর ওস্তাদ বলবে সকলে বোর্ডে দেখেন বলে পড়াইবেন যে, এইটার নাম নুক্তা (৩ বার), শুধু নুক্তা (৩ বার) সাথে সাথে হাত দ্বারা নুক্তা দেখাইয়া দিবেন ।

তারপর ওস্তাদ বলবেন শ্লেট উল্টাইয়া রাখেন, সকলে আমার মুখের দিকে দেখতে থাকেন বলে ওস্তাদ ছাত্রদের সারির মাঝে হেঁটে হেঁটে কয়েকবার ; ظ (জ্বা জ্বা বলে) মশক করাইবেন এবং বলবেন, এইভাবে হরফের নামের মশক

কমপক্ষে ১০০ বার ।

তারপর ওস্তাদ বলবেন সকলে বোর্ডে দেখেন- এই হরফে নুক্তা আছে? ছাত্ররা উত্তর দিবে- আছে। ওস্তাদ প্রশ্ন করবেন- কোন দিকে? ছাত্ররা উত্তরে বলবে- উপরে,, ওস্তাদ প্রশ্ন করবেন- কয় নুকতা? ছাত্ররা উত্তরে বলবে- এক নুক্তা। এই প্রশ্নগুলো করার সময় ওস্তাদ বোর্ডে হাত রাখবেন না, তখন ওস্তাদ বোর্ডে হাত দিয়ে ধরে (৩ বার) পড়াবেন- জ্বা’র উপর এক নুক্তা, জ্বা’র উপর এক নুক্তা। (ইয়াদ হওয়ার জন্য যতবার প্রয়োজন) এবং বলবে শ্লেট হাতে নেন হাতে ধরে পড়বেন বলে ওস্তাদ ছাত্রদের সারির মাঝে হেঁটে হেঁটে মশক করাইবেন আর ছাত্ররা হাতে ধরে পড়বে ‘জ্বা’র উপর এক নুক্তা। এইভাবে নুক্তার মশক কমপক্ষে ২০ (বিশ) বার। (তারপর ওস্তাদের বোর্ডের লেখা পরিষ্কার করবেন, ছাত্রদের শ্লেটের লেখা থাকবে) এবং ছাত্রদেরকে সহজ প্রশ্নে পাঁচ দাউর পড়াইবেন সহজ প্রশ্ন পাঁচ দাউর ।

১. নুক্তা মুছেন, ২. দেখান ৩. নাম বলেন, ৪. নুক্তা দেন, ৫. দেখান, ৬. নাম বলেন। এইভাবে সহজ প্রশ্ন পাঁচ দাউর। (ছয় প্রশ্নে এক দাউর হয়; এইভাবে ৫ দাউরে মোট ৩০ প্রশ্ন)

ঠিক আছে বন্ধুগন এই প্রর্ব এতটুকু আগামী পর্বে আমরা বা ب থেকে শুরু করবো ইনশা আল্লাহ্।।

আগামী পর্ব চলমান, আমার ওয়েব সাইটে দৃষ্টি রাখুন এখানে লিংক আসেবে ?

সম্মানিত বন্ধুগন! আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যদি আপনার সামান্নতম উপকারে আসে তাহলে একটি কমেন্ট ও শিয়ার করে যাবেন। ধন্যবাদ ২য় প্রর্বের আমন্ত্রন রইল।

২য় পর্ব দেখতে এখানে 👉  ক্লিক করুরন:

1 thought on “নূরানী পদ্ধতিতে তরিকায়ে তালিম: ২য় সংস্করণ ১ম পর্ব।”

  1. Pingback: নূরানী পদ্ধতিতে তরিকায়ে তালিম ২য় সংস্করণ ২য় পর্ব - Educational Tips & Tricks.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top