google-site-verification=rXaFmwSiYigXRnCfxubQMUMfWDLuTGq64pGk6OzeFd4

শাউয়াল মাসের ৫ম খুৎবাহ,আউলিয়ায়ে কেরামের মর্যাদা

Sawoal%205

 

শাউয়াল মাসের ৫ম খুৎবাহ,আউলিয়ায়ে কেরামের মর্যাদা

الخطبة الخامسۃ  لشهر شوال فی رتبۃ الاولیاء

শাউয়াল মাসের ৫ম খুৎবাহ – আউলিয়ায়ে কেরামের মর্যাদা সম্পর্কে।

اَعوذ باللہ من الشیطان
الرّجیم 0

بسم الله الرّحمن الرّحيم 0

 (1) الحمد لله نحمده ونستعينه ونستغفره

(১) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার, আমরা তাঁহারই গুণকীর্তন করিতেছি এবং তাঁহারই সাহায্য চাহিতেছি ও তাঁহারই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি।

(2) ونعوذ بالله من شرور انفسنا –

(২) এবং আমরা আমাদের  প্রবৃত্তির কুচক্র হইতে বাঁচিবার জন্য,আল্লাহর সাহায্য ভিক্ষা করিতেছি।

 (3) من يهد الله فلا مضل له ومن يضللہ فلا هادي له ۔

(৩) আল্লাহ পাক যাহাকে হেদায়েত করেন কেহ তাহাকে গোমরাহ করিতে পারে না, পক্ষান্তরে বান্দা নিজ ইচ্ছায় গোমরাহ হইবার জন্য দৃঢ় হইবার পর আল্লাহ যদি তাহার জন্য গোমরাহী নির্ধারণ করেন তবে আর কেহ তাহাকে হেদায়েত করিতে পারে না।

(4) ونشهد أن لا اله الا الله وأن محمدا عبده ورسوله صلى الله عليہوعلى الہ وسلم ارسله بالحق بشيرا ونذيرًا بين يدي الساعة –  

(৪) আমরা সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কেহই উপাস্য নাই এবং মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহরই বান্দা এবং রাসূল ।আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের পূর্বে তাঁহাকে সত্য (ইসলাম) সহ সুসংবাদদাতা এবং ভীতি প্রদর্শক করিয়া পাঠাইয়াছেন।

(5) مَنْ یُّطِعِ اللّہَ وَ رَسُوْلَہٗ فَقَدْ رَشَدَ – وَ مَنْ یَّعْصِھِمَا فَقَدْ غَوٰی –

(৫) যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তাঁহার রাসূলকে মান্য করিল সে জ্ঞানীর কাজ করিল, আর যে ব্যক্তি তাহাদিগের নাফরমানী করিল সে বোকামী করিল। (ধ্বংস ডাকিয়া আনিল)।

 (6)  امّا بعد. فيا ايها المسلمون الحاضرون ۔ احِبُّوا اولیاء اللہ فَاِنَّھُم ھُمُ الْمَقبُوْلُون ۔  

হে উপস্থিত মুমিনগণ! আপনারা ওয়ালি আল্লাহগণকে মুহাব্বত করিবেন, কেননা তাহারা আল্লাহর গ্রহণীয় /পচন্দনীয় বান্দা।  

(7) ولا تُبْغِضُوْهُمْ فَانَّهُم هُمُ الْمَنْصُوْروْنَ.

 (৭) তাহাদের সহিত শত্রুতা করিবেন না, কারণ তাহারা আল্লাহর সাহায্য প্রাপ্ত বান্দা।

 (8) فَاِنَّ النَّبِیّ صَلَّی اللہ علیہ وسلّم و اٰلہ وَ سَلّم قَال ۔ اِنّ اللہَ تبارک تعالی وقال ۔ من عادٰى لِي وليّا فقد آذنته بالحرب. رواه البخاري

(৮) হজুর সাঃ বলিয়াছেন ( হদীসে কুদছী ) আল্লাহ তা’য়ালা বলেন, যে ব্যাক্তি আমার ওয়ালির সঙ্গে শত্রুতা করে তাহাকে আমি যুদ্ধের জন্য আহবান করিতেছি – ছহী বুখারী।

 

(9) بارك الله لنا ولكم في القران العظيم

(৯) আল্লাহ তা’য়ালা মহাগ্রন্থ কুরআনের বরকত আমাদিগকে ও আপনাদিগকে দান করুন।

10)) اَعوذ باللہ من الشیطان الرّجیم  ۔

(১০) বিতাড়িত শয়তানের প্রতারণা হেইতে বাঁচিবার জন্য আল্লাহ তা’য়ালার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিতেছি।

(11) الَا اِنَّ اَوْلِیَاءَ اللہِ لَا خَوْفٌ عَلَیْھِمْ وَ لَاھُمْ یَحْزَنُونَ ۔ اَلّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ کَانُوْا یَتَّقُوْنَ لَھُمُ البُشْرٰی فَی الْحَیَوٰۃِ الدُّنْیَا وَ فِی الْاٰخِرَۃِ ۔ لَا تَبْدیْلَ لِکَلِمَاتِ اللہِ ذٰلِکَ ھُوَ الْفَوزُ الْعَظِیمِ ۔

(১১) অর্থ: নিশ্চয়ই আল্লাহর অলীদের অতীত ও ভবিষ্যতের কোন চিন্তা নেই। যাঁরা ঈমান এনেছে এবং তাকাওয়া অবলম্বন করেছেনইহকাল ও পরকালে তাঁদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ। [আল ক্বোরআন: সূরা ইউনুসআয়াত- ৬২-৬৪] আল্লাহর কথার পরিবর্তন নাই। ইহাই গৌরবময় কৃতকার্যতা। আল-কুরআল। 

আলোচনাঃ

عَنْ ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اِنَّ الله قال من عادلى وَلِيًّا فقد اذنته بالحرب ومَا تقرّب الى عبدى بشئ اَحَبَّ اِلىَّ مِمَّا افترضت عليه وما يزال عبدى يتقرب الىّ بالنوافل حتّى اَحبّه فاذا احببته كنت سمعه الذى يَسْمَعُ به وَبَصَرهُ الذى يُبصِرُبه وَبَدَهُ التى يبطش بها وَرِجْلَهُ التى يمشى بها وَاِنْ سألنى لاُعطينّه ولئن استعاذنى لَاُعيذنّة وما تيردّدتُ عن شى انا فاعِلُهُ تَرَدَّدى عَنْ نفسِ المؤمن الموت وانا اكره مساءته – [رواه البخارى ]

অনুবাদ: হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহু
থেকে বর্ণিত
, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তাআলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে আমার ওলীর সাথে শত্রুতা পোষণ করে আমি তার সাথে যুদ্ধের ঘোষণা করছি। আমার বান্দাগণ ফরজ কাজ সমূহ পালন করার মাধ্যমে আমার এতটা নৈকট্য অর্জন করেন যে, যার সাথে তুলনা কারার মত দ্বিতীয় কোন আমল নেই। এবং আমার বান্দাগণ নফল ইবাদতসমূহ দ্বারা আমার নেকট্য অর্জন করে থাকে এভাবে আমি তাকে নিজের প্রিয় করে নিই। আর যখন আমি তাকে ভালোবাসি তখন আমি তার কান হয়ে যাই যা দ্বারা সে শুনে। আমি তার চোখ হয়ে যাই যা দ্বারা সে দেখে, আমি তার হাত হয়ে যাই যা দ্বারা সে ধরে । আমি তার পা যাই যা দ্বারা সে চলে, যখন সে আমার কাছে কিছু চায় তখন আমি অবশ্যই তাকে দিই। যখন আমার কাছে আশ্রয় চায় আমি তাকে অবশ্যই আশ্রয় দিই। আমি কোন কাজ করতে কখনো তেমনি সংশয় করি না যেমন মুমীন বান্দার প্রাণ বের করার সময় সংশয় করে থাকি। মৃত্যু তার পছন্দ নয় তাকে কষ্ট দেয়া আমার পছন্দ নয়। [বুখারী শরীফ, হাদীস নং-৬১৩৭]

 

প্রাসঙ্গিক আলোচনা

বর্ণিত হাদীস শরীফে আউলিয়া কেরামের সম্মান ও খোদপ্রদত্ত মর্যাদা আলোকপাত করেছে। এক শ্রেণির মুসলমান আছেন যারা ক্বোরআন সুন্নাহ্ তথা ইসলামের অনুসরণের কথা বলেন পক্ষান্তরে আউলিয়ায়ে কেরামের মর্যাদা তথা তাঁদের খোদাপ্রদত্ত ক্ষমতার কথা স্বীকার করতে নারাজ। এরা ইসলামের প্রকৃত অনুসারী নয়। কলেমা, নামায, রোজা, হজ্ব, যাকাত ইসলামের বিধি-বিধানের কথা বলে এরা সরলপ্রাণ মুসলমানদের প্রতিনিয়ত বিভ্রান্ত করছে। ওলীদের প্রতি বিষোদগার করা, কটূক্তি ও সমালোচনা করা তাঁদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করাকে তারা খাঁটি তৌহিদ মনে করে। অথচ ক্বোরআন-সুন্নাহর কোন নির্দেশনা উপেক্ষা করা, অবহেলা করা, কোন আয়াত তথা হাদীসে রাসূলকে অস্বীকার করে কখনো মুমীন হওয়া যায় না। প্রকৃত পক্ষে অলীদের বিদ্বেষ খোদাদ্রোহীতিার নামান্তর। কারণ নবীজির পূর্ণাঙ্গ আদশের অনুসারী আল্লাহর পূণ্যান্ত সালেহীন মুমীন বান্দারাই ইসলামের ধারক বাহক। তাঁদের ত্যাগ, শ্রম ও ব্যবহারিক জীবনের আদর্শের বদৌলতে পৃথিবীর দিগ দিগন্তে ইসলামের মর্মবাণী তৌহিদ ও রিসালতের জয়গান সর্বত্র প্রচারিত ও প্রসারিত। অলীশব্দটি কোন অভিধানবেত্তার উদ্বাবন বা আবিস্কার নয়। আরবি ঊনত্রিশটি বর্ণমালার তিনটি বর্ণ নিয়ে গঠিত শব্দটি পবিত্র ক্বোরআনুল করীমের আয়াতের অংশ বিশেষ। ক্বোরআনের কোন আয়াত বা আয়াতের অংশ অলীদের অস্তিত্ব, প্রয়োজনীয়তা, গুরত্ব মর্যাদা ও খোদাপ্রদত্ত ক্ষমতা অস্বীকারকারী কিভাবে মুমীন হতে পারে। তাঁরাতো মহান আল্লাহর সুসংবাদ প্রাপ্ত প্রিয় বান্দা। পবিত্র ক্বোরআনে তাঁদের মর্যাদা প্রসঙ্গে এরশাদ হয়েছে-

الا ان اولياء الله لاخوف عليهم ولاهم
يخزنون- الذين امنوا وكانوا يتقون- لهم البشرى فى الحيوة الدنيا وفى الاخرة

অর্থ: নিশ্চয়ই আল্লাহর অলীদের অতীত ও ভবিষ্যতের কোন চিন্তা নেই। যাঁরা ঈমান এনেছে এবং তাকাওয়া অবলম্বন করেছেন, ইহকাল ও পরকালে তাঁদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ। [আল ক্বোরআন: সূরা ইউনুস, আয়াত- ৬২-৬৪]  অলীর পরিচয় প্রদানে মহান আল্লাহ্ এরশাদ করেন-

اِنْ اولياؤه اِلّا المتقون

অর্থ: মুত্তাকীরাই তাঁর ওলী। আল্ ক্বোরআন: সূরা আনফাল, আয়াত- ৩৪

* ইমাম ফখরুদ্দীন আবু আবদুল্লাহ্ মুহাম্মদ বিন ওমর রাযী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি (ওফাত- ৬০৬ হিজরী) ওলীর পরিচয় ব্যক্ত করেন এভাবে যে, অলী হচ্ছেন যিনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সহীহ আক্বিদা পোষণ করেন এবং শরীয়তের বিধি-বিধান মোতাবেক আমল পালন করেন। তাঁর কাছে কোন কিছুর ভয় ভীতি অনুভূত হয় না।

[সূত্র: তাফসীরে কবির: সূরা ইউনুস সংশ্লিষ্ট আয়াত- ৬২৬/৬২৭] * আল্লামা খাদ উদ্দীন মসউদ বিন ওমর তাফতাযানী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি (ওফাত-৭৯৩ হিজরী) ওলীর সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন-

الولىّ صوالعارف بالله تعالى وصفاته حب
مايمكن المواظب على الطاعات المجتنب عن المعاصى المعرض عن الانهماك فى اللذات
والشهوات

অর্থ: ঐ ব্যক্তিকে অলী বলা হয়, যিনি আল্লাহ্ তাআলার গুণাবলী ও পরিচয় লাভ করেছে। সাধ্যমত আনুগত্য করে গুনাহের কাজ হতে বিরত থাকে এবং প্রকৃতিগত বিষয়াদি ও প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বিরত থাকে।

ওলীদের অনুসরনের নির্দেশ

পবিত্র ক্বোরআন মজীদে অলীদের অনুসরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরশাদ হয়েছে-

يا ايها الذين امنوا اتقوا الله وكونوا
مع
الصادقين

অর্থ: হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো, এবং সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও। [সূরা তাওবা: আয়াত-১৯] যারা সত্যকে ধারণ করেন সত্য কথা বলেন, সত্য পথে চলেন, সত্যের উপর অটল অবিচল থাকেন, সত্যের বাণী প্রচারে জীবন উৎসর্গ করেন, সত্য ও ন্যায়ের পথে আল্লাহ্র বান্দাদের পরিচালিত করেন। মানুষের অন্তরে দ্বীনের মহব্বত আল্লাহ্ ও তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু তাআলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর মুহব্বত সৃষ্টি করেন, কুফর শির্ক, ও শরীয়ত গর্হিত কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকেন ও বিরত রাখেন, বাতিলপন্থী, গোস্তাহে রাসূল, নবীদ্রোহী ইসলাম নামধারী ঈমান আক্বিদা হিফাজতে ঈমান দায়িত্ব পালন করেন তারাই আল্লাহ্র অলী। অলীদের সান্নিধ্যে জীবন আলোকিত হয় হাদীসে শরীফ এরশাদ হয়েছে-

مثل الجليس الصالح كمثل صاحب المسك اِنْ لَمْ يُعبك منه شئ اصابك من ايحه- (رواه ابوداود)

অর্থ: নেককার লোকদের সান্নিধ্যে সুগন্ধি ওয়ালার মতো তার সান্নিধ্যে থাকলে আতর পাওয়া না গেলেও আতরের সুগন্ধি পাওয়া যাবে। [আবু দাঊদ শরীফ] আল্লামা রুমী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন-

محبت صالح ترا صالح كند

محبت طالح ترا طالح كند

অর্থ: সৎ লোকের সহচর্য তোমাকে সৎ লেঅক বানাবে, হতভাগ্যের সাহচর্য তোমার সর্বনাশ ঘটাবে। কলীদে মসনবী:
১: ৭২২] আউলিয়ায়ে কেরামের অনুসৃত পথ থেকে বিচ্যূৎ হওয়া তাঁদের বিরোধীতা করা
, গোমরাহীর অন্যতম কারণ। এক শ্রেণির বিপদগামী জ্ঞানপাপী শিক্ষিত মানুষেরাও অলীদের সাহচর্য অবলম্বন করাকে অর্থহীন গুরুত্বহীন মনে করে। তাঁদের ব্যাপারে বিভিন্ন ধৃষ্টতাপূর্ণ উক্তি ও মন্তব্য করে, বলে বেড়ায় তারাও মানুষ আমরাও মানুষ। একই যুক্তিতে আবু জেহেলও নবীজির সুমহান মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বকে মেনে নিতে পারেনি। একই যুক্তিতে যুগে যুগে অসংখ্য বনী আদম সত্য পথ থেকে বিচ্যূত হয়ে পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্ত হয়ে নিজেদের সর্বনাশ করেছে। আল্লামা আরেফে রুমী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন-

جمله عالم زيں سبب گمراه شد

كم كسى ز ابدال حق اكاه شد

অর্থ: সমগ্র জগৎ গোমরাহ্ হল এই একটি কারণে কম লোকই চিনল আল্লাহ্র আবদালগণে।

 

অলীগণের এক প্রকার হচ্ছেন আবদাল যাদের ব্যাপারে হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে-

 

عن عبادة رضى الله عنه روى الطبرانى فى الكبير الابدال فى امتى ثلاثون بهم تقوم الارض وبهم تمطرون وبهم تنصرون

অর্থ: হযরত ওবাদা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তাআলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে ত্রিশজন আবদাল আছে তাদের দ্বারা জমিন বিদ্যমান থাকবে। তাদের দ্বারা তোমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষিত হচ্ছে, তাঁদের দ্বারা তোমরা সাহায্য প্রাপ্ত হচ্ছ। অলীদের এক প্রকার হচ্ছেন আবদাল-তাঁদের মাধ্যমে আল্লাহ্ সাত জমিনকে সংরক্ষণ করেন। তাঁদের প্রত্যেকের জন্য এক একটি জমিন নির্দিষ্ট। তাঁরা সাতজন সম্মানিত নবীর কদমের উপর বিদ্যমান থাকেন ও সাতজন নবী হচ্ছেন যথাক্রমে-১. হযরত ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ্ আলায়হিস্ সালাম, ২. হযরত মুসা কালিমুল্লাহ্ আলায়হিস্ সালাম, ৩. হযরত হারুন আলায়হিস্ সালাম, ৪. হযরত আদম ছফিউল্লাহ্ আলায়হিস্ সালাম, ৫. হযরত ইদ্রীস আলায়হিস্ সালাম, ৬. হযরত ইউসূফ আলায়হিস্ সালাম, ৭. হযরত ঈসা রুহুল্লাহ্ আলায়হিস্ সালাম।

অলীদের মর্যাদা বর্ণনায় আলা হযরত

লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরলভী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি অলীদের মর্যাদা বর্ননা প্রসঙ্গে তাঁর অবদ্য কাব্য সংকলন হাদায়েকে বখশিশগ্রন্থে বলেন-

خلق سے اولياء اولياء سے رسل

او رسولوں سے اعلى همارا نبى

অর্থ: সৃষ্টি থেকে অলীগণ শ্রেষ্ঠ, আর অলী থেকে রাসূলগণ শ্রেষ্ঠ এবং রাসূলগণের মধ্যে আমাদের প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম শ্রেষ্ঠ। বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ ইরশাদুস্ সারীগ্রন্থে রয়েছে-

النبى افضل من اللولىّ وهو امر تعطوع به والقائل بتخلافه كافرٌ لانّه معلوم من الشر بالضرورة

অর্থ: নবী অলীদেরকে উত্তম। এটা অকাট্য বিষয় এর বিপরীত মন্তব্যকারী কাফির। এটা শরীয়তের মৌলিক আবশ্যিক বিষয়। যাঁদেরকে দেখলে আল্লাহর স্মরণ হয় অলীদের সুহবতে মানুষ সঠিক পথের দিশা পায়, বেনামাযী নামাযী হয়, মিথ্যাচার ত্যাগ করে সত্যবাদী বান্দারূপে পরিগণিত হয়। অসংখ্য পথহারা দিশেহারা বিভ্রান্ত, বেআমল ফাসিক পাপিষ্ট বান্দা নেককার পরহেজগার আল্লাহ্ ওয়ালা, ইনসানে কামিল, মর্দেমুমীন অলীয়ে কামিল, মুর্শীদে বরহকের সান্নিধ্যে এসে নিজের চরিত্র উন্নত করার সুযোগ লাভ করেছে। অন্যায় অনাচার, পাপাচার, ব্যাভীচার, শরীয়ত বিরোধী ইসলামী বিরোধী পথ পরিহার করে সিরাতুল মুস্তাকীম তথা ইসলামের সঠিক রূপরেখা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শালোকে নিজেদের জীবন গড়ার সুবর্ণ সুযোগ লাভ করে ধন্য হয়েছে। এ জন্য পীর মাশায়েখগণ  বায়াত করানোর সময় অঙ্গীকার গ্রহণ করেন, ‘হাম উয়হ্ কাম করেঙ্গে জিসসে আল্লাহ্ ওয়া রাসূল রাযী হো, হাম ওয়াহ্ কাম নেহী করেঙ্গে জিসসে আল্লাহ্ ওয়া রাসূল নারাজ হো। অর্থ: আমরা এমন কাজ করবো যে কাজে আল্লাহ্ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু তাআলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সন্তুষ্ট হবে, এমন কাজ করব না যে কাজ করলে আল্লাহ্ ও রাসূল অসন্তুষ্ট হবেন। আল্লাহ্ তা’য়ালা আমাদেরকে অলীয়ে কামিলের পদাঙ্ক অনুসরন করার তাওফিক নসীব করুন।  আল্লাহুম্মা আমীন।

Thank you for reading the post.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top