মীলাদুন্নাবী (সাঃ) শ্রেষ্ঠ নবীর জিবনী
(অনুসৃত বই:- জুমুআর বয়ানে সমকালীন বিশ্ব )
أعوذ بالله من الشيطان الرجيم . بسم الله الرحمن الرحیم وما ار سلنك الارحمة اللعلمين (سورة الأنبياء:۱۰۷)
মুহতারাম হাযিরীন!
পবিত্র মাহে রবিউল আউয়ালের আজ প্রথম জুমু‘আ। এ মাসেরই ১২ তারিখ মতান্তরে ৮ বা ৯ তারিখ সোমবার সাইয়্যিদুল মুরসালীন খাতামুন্নাবিয়্যীন। রাহমাতুল্লিল আলামীন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা. এই পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন। তাঁর আগমন গােটা সৃষ্টিকুলের জন্য ছিল রহমতস্বরূপ। তিনি মানবের জন্যও রহমত, দানবের জন্যও রহমত, আরবের জন্যও রহমত, আজমের জন্যও রহমত। এক কথায় কুল কায়েনাত অর্থাৎ সমগ্র সৃষ্টিকুলের জন্য তিনি ছিলেন রহমত। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
وَمَا اَرْسَلْنٰكَ اِلَّارَحْمَۃً لِّلْعٰلَمِيْنَ 0
“(হে মুহাম্মাদ!) আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য রহমতসরূপ প্রেরণ করেছি।” (সূরা আম্বিয়া: ১০৭)।
কবির ভাষায়:
شد وجودش رحمة لِّلْعالمین # مسجد او شد ہمہ روئے زمین
“তার অস্তিত্বই হলো জগৎবাসীর জন্য করুণা। তাই গোটা পৃথিবীকে তার জন্যে মসজিদ বানিয়ে দেয়া হয়েছে।” কেননা তিনি পৃথিবীর জন্য আর পৃথিবী তাঁরই জন্য।
বিশ্ব মানবের সর্বশেষ ও চূড়ান্ত নবী মুহাম্মাদ সা.
و ما ارسلنٰک اِلَّا کَافَّۃَ لِّلنَّاسِ بَشِیْرًا وَّ نَظِیْرًا
قُل یَایُّهَا النَّاس انِّی رَسُولُ الله إليکم جَمِيْعًا –
“আপনি বলে দিন, হে লােক সকল! আমি তােমাদের সকলের নিকট রাসূল হিসেবে আগমন করেছি।” (সূরা আ‘রাফ: ১৫৮)
কাফেরদের অভিযােগ খণ্ডন:-
পৃথিবীর কোন মানুষ যেন পরকালে একথা বলতে না পারে যে, আমাদের কাছে কোন সুসংবাদদাতাও আসেনি এবং কোন সতর্ককারী, ভীতিপ্রদর্শনকারীও আগমন করেনি। সুতরাং আমরা তাে দীন-শরীয়ত সম্পর্কে কিছুই জানতাম না । পরকাল সম্পর্কে আমরা ছিলাম অজ্ঞ। আল্লাহ সম্পর্কে আমরা ছিলাম বে-খবর।
يٰاَهْلَ اْلِكتٰبِ قَدْ جَاءَ کُمْ رَسُوْلُنَا يُبَيِّنُ لَکُمْ عَلٰى فَتْرَۃٍ مِّنَ الرُّسُلِ آن تَقُوْلُوْا مَا جَاءَنَا مِنْ بَشِيْرٍ وَلا نذير – فَقَدْ جَاءَکُمْ بَشِیْرٌ وَّ نَذِیْرٌ – وَاللہُ عَلٰی کُلِّ شئٍ قَدِیْرٌ 0
“হে আহলে কিতাব! দীর্ঘদিন রাসূল আগমনের বিরতির পর তােমাদের কাছে আমার রাসূল এসেছেন। (আর আমি রাসূলকে এজন্য পাঠিয়েছি) যাতে তােমরা বলতে শুরু না কর যে, আমাদের কাছে তাে কোন সুসংবাদদাতা কিংবা ভীতিপ্রদর্শনকারী আসেনি। সুতরাং এখন তাে তােমাদের কাছে সুসংবাদদাতাও এসেছেন ভীতিপ্রদর্শনকারীও এসেছেন।” (সূরা মায়েদা: ১৯)। | মােটকথা, রাসূলুল্লাহ সা.-এর জন্ম, তাঁর এ ধরায় আগমন সমগ্র পৃথিবীবাসীর জন্য রহমত, সুসংবাদ ও আনন্দের বিষয়। তার মাধ্যমে আমরা কুরআন পেয়েছি। আর তারই মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক্ব লাভ করেছি। তাই এ দু’টি নি’আমাতের জন্য পৃথিবীবাসীকে আনন্দিত হওয়ার ও আনন্দিত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে:
قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَ بِرَ حْمَتِه فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُوْنَ-
“(হে মুহাম্মাদ) আপনি বলে দিন, তারা যেন শুধু আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়ার উপর আনন্দিত হয়। কারণ, তা দুনিয়া ও দুনিয়ার সবকিছুর চেয়ে উত্তম।” (সূরা ইউনুস: ৫৮)
আয়াতের জাহেরী অর্থের সাথে মীলাদুন্নাবীর কোন সম্পর্ক নেই। তবে আয়াতে যেহেতু দু’টি বিশেষ নি’আমাতের উল্লেখ করে তাতে আনন্দ প্রকাশের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর সমস্ত নি’আমাতের উৎস হচ্ছে এ ধরায় রাসূলুল্লাহ সা.-এর আগমন। সুতরাং মীলাদুন্নাবীতে আনন্দিত হওয়া ঈমানের দাবী। এতে বাঁধা দেয়ার অধিকার কারও নেই।
خَيْرُ أُمَّتِی قَرْنِي ثُمَّ الَّذِین یَلُوْنَھُمْ ثُمَّ الَّذِین یَلُوْنَھُمْ (السنن الكبیرى للبيهقی رقم:(۲۱۱۰۹) – البخاری، الشهادات / لا يشهد على شهادة جور,۳۹۲/۱ رقم: ۲۶۵۱
“আমার (এই বর্তমান) সময়কার উম্মতগণই সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত। তারপর তার পরবর্তী যামানার উম্মতগণ শ্ৰেষ্ঠ । তারপর তাদের পরবর্তী কালের উম্মতগণ শ্ৰেষ্ঠ।”
এই শ্রেষ্ঠ তিন যামানার শ্রেষ্ঠ উম্মতগণের কেউই মীলাদুন্নাবীর অনুষ্ঠান প্রবর্তন করলেন না। ইমাম আবু হানীফাও মীলাদুন্নাবী পালন করলেন না। ইমাম মালিকও নয়, ইমাম শাফিঈও নয়, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলও নয়। মাযহাব চতুষ্টয়ের কোন ইমামই এ মীলাদুন্নাবীর উৎসব-অনুষ্ঠান পালন করলেন না; এর প্রয়ােজন বােধ করলেন না। একে সওয়াবের কাজ মনে করলেন না এবং তাঁদের কোন কিতাবেও তা লিপিবদ্ধ করলেন না। ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম তিরমিযী, ইমাম আবু দাউদ, ইমাম নাসায়ী, ইমাম ইবনে মাজা এসব মহামনীষীগণ তাঁদের জীবনে কোনদিন কোথাও মীলাদুন্নাবী উদযাপন করেন নি। কিয়ামও করেন নি। এমন কি তাদের পরবর্তীতে ছয়শ বছর পর্যন্ত দুনিয়ার কোথাও এর অস্তিত্ব ছিল না। তা হলে বুঝা যায় যে, নবীর জন্মে তার শুভাগমনে আনন্দিত হওয়ার দ্বারা উদ্দেশ্য জশনে জুলসের বর্ণাঢ্য র্যালী বের করে শহর প্রদক্ষিণ করা আর হাজার হাজার গরু-ছাগল জবাই করে নারী-পুরুষ মিলে মিশে মীলাদ-ক্বিয়াম করে শিরনি বিতরণের মাধ্যমে আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া নয়। বরং আনন্দ-খুশি হওয়ার দ্বারা উদ্দেশ্য হলাে নবীর আগমনকে নি‘আমত মনে করা, তার কদর করা, তাঁর আদর্শকে ভালবাসা, সারা জীবন তার আদর্শের উপর থাকতে আনন্দ বােধ করা। জীবনের বিনিময়ে হলেও নবীর আদর্শ থেকে বিচ্যুত না হওয়া। | আর যদি শুধু নবীর জন্মেই খুশি বা আনন্দ প্রকাশ করা হয়, তার আদর্শে খুশি না হওয়া যায়, তা হলে আবু লাহাবের যে অবস্থা হয়েছে, তথাকথিত আশেকে-রাসূলদের অবস্থাও তাই হবে। ঈমান নিয়ে কবরে যাওয়া যাবে কি-না, তাতে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। যে আবু লাহাবকে ভাতিজা মুহাম্মাদ সা.-এর জন্মের খবর দিলে আনন্দে-খুশিতে সংবাদ দানকারিনী দাসী ছুওয়াইবাকে আযাদ করে দিয়েছিল, ঠিক সেই আবু লাহাবকে যখন নবীর আদর্শ গ্রহণ করার জন্য দাওয়াত দেয়া হলাে, তখন সে
চিৎকার করে বলেছিল: تَبًّا لَّکَ اَلِھٰذَا جَمَعْتَنَا “তােমার ধ্বংস হােক, তুমি কি এজন্য আমাদেরকে সমবেত করেছ?”
এর জবাবে আল্লাহ তা’আলা নাযিল করলেন: تَبَّتْ یَدَا اَبِیْ لَھَبٍ وَّ تَبَّ “ ধ্বংস হােক আবু লাহাবের দুই হাত এবং সে নিজেও ”
মীলাদুন্নাবী উদযাপন ও জশনে জুলুস বিদআত:
মীলাদুন্নাবীতে আনন্দ প্রকাশের বর্তমান যে পদ্ধতি তা পরবর্তীযুগে আবিষ্কৃত বিদআত। প্রখ্যাত ইসলামী ঐতিহাসিক আল্লামা ইবনে খাল্লিকান বলেন, আকূল আখতাব উমার ইবনে দেহয়া নামক দরবারী আলিম দ্বারা ইরাকের তদানীন্তন বাদশাহ আবু সাঈদ মুজাফফরুদ্দীন কুকরী ৬০৪ হিজরীতে ইরাকের মুসিল শহরে সর্বপ্রথম মীলাদ-কিয়ামের প্রবর্তন করে। এরপর ধীরে ধীরে তা অগ্রসর হতে থাকে। এক সময় এসে এ মীলাদের সাথে যােগ হয় ‘ঈদ’ হয়ে যায় ঈদে মীলাদুন্নাবী বা নবীর জন্ম দিবস উপলক্ষে খুশির উৎসব। চলতে চলতে আরাে ছয়শত বছর পর ইংরেজদের শাসনামলে লাহােরে হাজী এনায়েতুল্লাহ এবং মৌলভী মজিদ সাহেবদের নেতৃত্বে শুরু হয় “জশনে জুলুসে ঈদে মীলাদুন্নাবী।” অর্থাৎ, নবীর জন্মদিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য মিছিল। আর বাংলাদেশে জশনে জুলুস আসে ১৯৭৪ইং সালে পাকিস্তানের ছিরকোট দরবারের ভণ্ডপীর তায়্যিব শাহ-এর নির্দেশে আঞ্জুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাষ্টের উদ্যোগে প্রথম জশনে জুলুস বের হয়। বর্তমানে তারই গদীনশীন পুত্র তাহের শাহ্ সে ধারা চালিয়ে যাচ্ছেন। | এ ধারাবাহিকতায় আজ অবস্থা এই দাঁড়িয়েছে যে, রবিউল আউয়াল মাস আসলেই শুরু হয়ে যায় ঈদে মীলাদুন্নাবী উদযাপনের যাবতীয় প্রস্তুতি। ঘরে ঘরে দোকানে দোকানে চাদা কালেকশন শুরু হয়। মসজিদ সমূহে অতিরিক্ত আলােকসজ্জা করা হয়, সড়কগুলােতে রঙ বেরংয়ের পতাকাও শােভা পেতে থাকে। রাস্তার মােড়ে মােড়ে তােরণ নির্মাণ করা হয়। কোথাও কোথাও কাবা শরীফের প্রতিকৃতি স্থাপন করে তার চতুর্পার্শ্বে তাওয়াফ করা হয়। রওযা শরীফের প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়। যুবতী মেয়েদের দিয়ে নবীর জন্মদিবসকে স্বাগত জানাবার জন্য রাজপথে মিছিল ও শােভাযাত্রা বের করা হয় এবং পত্রপত্রিকায় সে ছবি ফলাও করে প্রচার করা হয়। আল্লাহ তাআলা উলামায়ে কেরামকে জাযায়ে খায়ের দিন; তাদের প্রতিবাদের কারণে এ ধরনের নারীদের মিছিল ইদানিং আর দেখা যায় না। এগুলাে সবই দীনের নামে বে-দীন, বিদ্আত ও কুসংস্কার চর্চা। আর এগুলাে তারা করছে সওয়াবের কাজ মনে করে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
قُلْ ھَلْ اُنَبِّئُکُمْ بِالْاَخْسَرِیْنَ اَعْمَالًا – اَلَّذِیْنَ ضَلَّ سَعْیُھُمْ فِی الْحَیٰوۃِ الدُّنْیَا وَھُمْ یَحْسَبُوْنَ اَنَّھُمْ یُحْسِنُوْنَ صُنْعًا –
“বলুন, আমি কি তােমাদেরকে সে সব লােকের সংবাদ দিব, যারা কর্মের দিক দিয়ে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত। তারাই সে লােক, যাদের প্রচেষ্টা পার্থিব জীবনে বিভ্রান্ত হয়; অথচ তারা মনে করে যে তারা সৎকর্ম করছে।” (সূরা কাহফ: ১০৩-১০৪)
কবির ভাষায়:
قوت نیکی نہ داری بد من # بر وجود خود ستم بے حد مکن
“ভাল কাজ করতে না পারলেও মন্দ কাজ করাে না, এবং নিজের ওপর সীমাহীন জুলুম করাে না।” মােটকথা, মীলাদুন্নাবী উদযাপন, জশনে জুলুস বের করা কুরআন, হাদীছ, ইজমা, কিয়াস, ইসলামের এই দলীল চতুষ্টয়ের ভিত্তিতে পরিত্যাজ্য। এখনই যদি এর গতি রােধ না করা হয়, যদি এটা সামাজিকভাবে বর্জন না করা হয়, তা হলে অদূর ভবিষ্যতে এ জাতির এক বিরাট অংশ শুধু কেবল এ বাড়াবাড়ীর কারণে গুমরাহীর অতল গহ্বরে নিমজ্জিত হবে। যেমনটি হয়েছে খ্রিস্টানদের বেলায়। আজকের এ মীলাদুন্নাবী উদযাপন মূলত খ্রিস্টানদের বড়দিন উদযাপনের অনুকরণ বৈ কিছুই নয়।
খ্রিস্টানদের অনুকরণেই মীলাদুন্নাবী উদযাপন:
পঁচিশ ডিসেম্বর খ্রিস্টানরা হযরত ঈসা আ.-এর জন্মদিবস বড়দিন পালন করে। হযরত ঈসা আ.-কে স্ব- শরীরে আসমানে তুলে নেয়ার প্রায় তিনশ’ বছ পর এ বড়দিনের উৎসব শুরু হয়। কিছু সংখ্যক লােকের মাথায় একটা চিন্তা আসল, আমরা হযরত ঈসা আ.-এর জন্মদিবস পালন করবাে। তখন যে সব লােক খ্রীস্টধর্মের পরিপূর্ণ অনুসারী ছিল, তারা এতে বাধ সাধলাে। বললাে, যা হযরত ঈসা আ. করেন নি, তাঁর হাওয়ারীগণ করেন নি, এমনকি তিনশ’ বছর পর্যন্ত ঈসায়ী ধর্মের যে সব অনুসারীগণ অতিবাহিত হয়ে গেছেন তাঁরা করেন নি। আমাদের জন্য এমনটি করা ঠিক হবে না। কিন্তু যারা এটা প্রবর্তন করছিল, তারা উল্টো অভিযােগ করলাে যে, এরা ঈসা আ: এর দুশমন। আমরা ঈসা আ.এর জন্মদিনে সমবেত হয়ে তার বাণী আলােচনা করবাে, তার জীবনচরিত পর্যালােচনা করবাে- এতে ক্ষতি কী? বরং এতে আমাদের বিশ্বাস আরও সজীব হবে, শক্তিশালী হবে। সুতরাং সব বাধা উপেক্ষা করে তারা নির্দিষ্ট দিনে গীর্জায় উপস্থিত হয়ে ধর্মযাজকের ওয়ায-নসীহাতের মাধ্যমে বড়দিনের উৎসব পালনের সূচনা করলাে। এভাবে বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হলাে। নির্দিষ্ট দিনে অর্থাৎ ২৫ শে ডিসেম্বর আসলে খ্রিস্টানরা গীর্জায় সমবেত হতাে। একজন ধর্মযাজক দাঁড়িয়ে হযরত ঈসা আ.-এর বাণী ও তাঁর জীবনচরিত আলােচনা করতাে। তারপর সমাবেশের সমাপ্তি ঘটতাে। অর্থাৎ, নির্ভেজাল
ও ত্রুটিমুক্ত পন্থায় তারা বড়দিন পালন করতাে। এর কিছুকাল পর তারা চিন্তা করলাে, আমরা শুধু ধর্মযাজকদের বক্তৃতা শুনে চলে যাই, এ তাে নিরস এক অনুষ্ঠান। এতে যুবকেরা, অভিজাত শ্রেণীর লােকেরা অংশগ্রহণ করে না। তাই এতে কিছু | আকর্ষণীয় চিত্তাকর্ষক বিষয় থাকা চাই। ফলে এতে বাদ্যযন্ত্রের সাথে কবিতা আবৃত্তি শুরু হলাে। এরপর দেখা গেল এতেও মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে না। তাই তারা পরামর্শক্রমে এই কবিতা আবৃত্তি ও বাদ্যযন্ত্রের মাঝে কিছু নাচ-গানের ব্যবস্থা করলাে। এরপর এটাকে আরাে জাকযমকপূর্ণ করার জন্য এ | দিনে কিছু বিশেষ খেলাধুলারও আয়ােজন করতে থাকলাে। এভাবে একদিন যে | অনুষ্ঠান হযরত ঈসা আ.-এর জীবনচরিত, তার উপদেশবাণী আলােচনার জন্য শুরু হয়ে ছিল, ধীরে ধীরে কালের আবর্তনে তা একটা আঁকযমকপূর্ণ উৎসবে পরিণত হলাে। নাচ-গান, বাদ্য-বাজনা, মদ-জুয়া কোন কিছুই এ থেকে বাদ থাকলাে না। বর্তমানে অবস্থা এই দাঁড়িয়েছে যে, পাশ্চাত্য দেশসমূহে এ দিনে অপকর্মের বন্যা বয়ে যায়। এ একদিনে যে পরিমাণ মদ পান করা হয়, গােটা বছরেও তা পান করা হয় না।‘ এ একদিনে যে পরিমাণ অঘটন ঘটে, গােটা | বছরেও তা ঘটে না। আর যে পরিমাণ নারীর সম্ভ্রম নষ্ট হয়, যে পরিমাণ ব্যভিচার হয়, সারা বছরেও তা হয় না। আর এ সবকিছু হয় হযরত ঈসা আ.এর জন্মদিনের নামে। | আজকে আমাদের যেসব ভাইয়েরা মীলাদুন্নাবীর জশনে জুলুসের পাগল, এ ব্যাপারে তাদের দলীল ও যুক্তি বড় হাস্যকর। তারা খুব জোরেশােরেই বলেন, হিন্দুরা যদি শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন (জন্মাষ্টমী) পালন করতে পারে, খ্রিস্টানরা যদি যীশুখ্রিষ্টের জন্মদিন (বড়দিন) পালন করতে পারে, তা হলে আমরা নবীর | জন্মদিন মীলাদুন্নাবী পালন করলে ক্ষতি কী? কী চমৎকার যুক্তি! ‘হিন্দু ধর্মে বৈধ হলে, খ্রিস্ট ধর্মে বৈধ হলে, ইসলাম ধর্মে বৈধ হবে না কেন? তা হলে বুঝা যায় | যে মুসলমানগণ এখন তাদের ধর্মকর্মে বিধর্মীদের কাছ থেকে ছবক নেবে | (নাউযুবিল্লাহ)। ইসলাম কি অসম্পূর্ণ? ইসলামে কি কোন বিষয় এমন রয়েছে যে | বিষয় সম্পর্কে সমাধান না দিয়ে ইসলামের নবী বিদায় নিয়েছেন? না, বরং ইসলামের নবীরই একমাত্র বৈশিষ্ট্য যে, তিনি জীবনের শেষ পর্যায় এসে লক্ষাধিক সাহাবায়ে কেরামের সমাবেশে অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে দীনের পূর্ণতার ঘােষণা করেছেন। আল্লাহ বলেন:
اَلْيَوْمَ اَکْمَلْتُ لَکُمْ دِیْنَکُمْ وَ اَتْمَمْتُ عَلَیْکُمْ نِعْمَتِی وَرَضِیْتُ لَکُمُ الْاِسْلَامَ دِیْنًا –
“আজ আমি তােমাদের জন্য তােমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম, তােমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম, এবং ইসলামকে তােমাদের জন্য দীন হিসেবে মনােনীত করলাম।” (সূরা মায়েদা: ৩)।
সাথে সাথে উপস্থিত লােকদের কাছ থেকে এ মর্মে স্বীকারােক্তিও নিয়েছেন, اَلَا ھَلْ بَلَّغْتَ “আমি কি পয়গাম পৌছে দিয়েছি?” সাহাবায়ে কেরাম সমস্বরে বললেন: بَلٰی یَا رَسُوْلَ اللہ “অবশ্যই! হে আল্লাহর রাসূল।” এরপর তিনি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে তিনবার বললেন: اَللّٰھُمَّ اشْھَدْ – اَللّٰھُمَّ اشْھَدْ – اَللّٰھُمَّ اشْھَدْ “হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাকো, হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থাকো! হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থাকো!” | সুতরাং নবীর ইন্তেকালের পর দীন মনে করে, সওয়াবের কাজ মনে করে এমন কোন রুসুম-রেওয়ায চালু করা, এমন কোন প্রথা চালু করা যা নবী বা সাহাবাদের যামানায় ছিল না, তা অবশ্যই বিদ’আত ও কুসংস্কার এবং তা পরিত্যাজ্য। | আরও আশ্চর্যের বিষয় হলাে, এতসব কিছু যা করা হয় ১২ ই রবিউল রাউয়াল নবীর জন্মদিন মনে করে এতে তাে মতভেদ আছে। মিশরের বিখ্যাত জ্যোতিষশাস্ত্রবিদ মাহমুদ পাশা ফালাকী গাণিতিক যুক্তিতর্কের সাহায্যে প্রমাণ করেছেন যে, হযরত মুহাম্মাদ সা.৫৭১ খ্রিস্টাব্দের ২০ এপ্রিল রবিউল আউয়াল মাসের ৯ তারিখ সুবহে সাদিকের অব্যবহিত পরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। পক্ষান্ত রে ১২ই রবিউল আউয়াল নবীর যে ইন্তেকাল হয়েছে এ বিষয় তাে প্রায় সকল ঐতিহাসিকদের ঐকমত্য রয়েছে। বড় আফসােসের বিষয়! নবীর আশেক হওয়ার দাবি করছি, আবার নবীর ওফাত দিবসে আনন্দ প্রকাশ করছি।
রাসূল সা.-এর ইন্তেকালে সাহাবায়ে কেরামের অস্থিরতা:
নবীর ইন্তেকালের খবরে গােটা আরবের সর্বত্র এক নিস্তদ্ধতার অমানিশা নেমে এসেছিল, সাহাবায়ে কেরাম পেরেশান হয়ে ঘুরছিলেন। আবু বকর পেরেশান, উমার পেরেশান, আলী পেরেশান, ওসমান রাযি. পেরেশান। যিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন, তিনি দাঁড়িয়ে রইলেন, যিনি বসা ছিলেন, তিনি বসেই রইলেন। যিনি হাল চাষ করছিলেন তিনি হাল ছেড়ে ‘থ’ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন। মদীনার অলিতে গলিতে সর্বত্র শােকের ছায়া নেমে এলাে। বেলাল রাযি. মদীনা ছেড়ে চলে গেলেন, বললেন, মদীনায় থেকে যদি হুযূর সা.-কে দেখতে না পারি, তা হলে আমি বরদাশত করতে পারব না। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ ইবনে আব্দে রাব্বিহী হাল চালাচ্ছিলেন; যখন রাসূলের ইন্তেকালের খবর পেলেন সাথে সাথে হাল ছেড়ে দিলেন, আর দুআ করলেন:
اَللّٰهُمََّ اذھَبْ بَصَرِیْ حَتّٰی لَا اَرٰی آحَدًا بَعْدَ حَبِيْبِيْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ فَکُفَّ بَصَرَهٗ –
“হে আল্লাহ! তুমি আমার দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নাও, যাতে আমি আমার মাহবুব সা.-এর পর আর কাউকে দেখতে না পারি। সাথে সাথে তার চোখ অন্ধ হয়ে গেল।”হযরত ফাতেমা রাযি. কেঁদে কেঁদে কবিতা আবৃত্তি করছিলেন:
صُبَّتْ عَلَىَّ مَصَائِبٌ لَوْ اَنَّهَا٭ صُبَّتْ عَلَى الْأَيَّامِ صِرْنَ لَیَالِيَا
مَاذَا عَلٰى مَنْ شَمَّ تُرْبَةَ اَحْمَدِیْ ٭ اَنْ لَّايَشُمَّ مَدٰى الزّمَانِ غَوَالِیَا
“আমার উপর এমন মুসিবত এসে পড়েছে, যদি এ মুসিবত দিনের উপর আসতাে, তা হলে দিন রাতে পরিণত হয়ে যেতাে। যে ব্যাক্তি মুহাম্মাদ সা.-এর কবরের মাটির ঘ্রাণ শুকেছে, সে সারা জীবনও যদি غوال আতরের ঘ্রাণ নাও শুকে, তাতে তার কী আসে যায়!” আর হযরত উমর রাযি.-এর পেরেশানি ও অস্থিরতা ছিল সবচেয়ে বেশি। তিনি নাঙ্গা তালােয়ার হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন; উঁচু কণ্ঠে ঘােষণা করলেন “মুনাফিকদের ধারণা যে রাসূলুল্লাহ সা.-এর ইন্তেকাল হয়ে গেছে। তিনি কখনাে মৃত্যুবরণ করতে পারেন না। তিনি তাে আল্লাহর সঙ্গে দেখা করতে গেছেন, যেমন মূসা আ. তূর পাহাড়ে গিয়েছিলেন। তিনি অবশ্যই আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।” কারও হিম্মত ছিল না যে, উমর রাযি.-এর সামনে হুযূর সা.-এর ইন্তেকালের বিষয় নিশ্চিত করে বলবে। হযরত আবু বকর রাযি. একটু আগেই হুযূরের অনুমতি নিয়ে ঘরে গিয়েছিলেন। হঠাৎ শুনলেন, রাসূলুল্লাহ সা.-এর ইন্তেকাল হয়ে গেছে। দৌড়ে ছুটে আসলেন। উম্মুল মু’মিনীনদের অনুমতি নিয়ে হুজরা শরীফে প্রবেশ করলেন, চেহারা মুবারাক থেকে চাদর উঠালেন, কপালে চুমু খেলেন। এরপর তিনবার বললেন: وَانَبِیَّاہْ – وَاخَلِیْلَاہْ – وَاصَفِیَّاہْ – আমার পিতামাতা আপনার উপর উৎসর্গ হােক। খােদার কসম! আল্লাহ তাআলা আপনাকে দ্বিতীয়বার মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করাবেন না। যে মৃত্যু আপনার জন্য অবধারিত ছিল তা হয়ে গেছে। এরপর হুজরা শরীফ থেকে বাইরে আসলেন, দেখলেন উমার বড় বেহাল অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছেন। শােকে-দুঃখে তিনি যেন খেই হারিয়ে ফেলেছেন। হযরত আবু বকর রাযি. উমর রাযি.-কে ডেকে বললেন, তুমি কি আল্লাহ্ তা’য়ালার এ বানী শুননি।
اِنَّکَ مَیِّتٌ وَاِنَّھُمْ مَیِّتُوْنَ –
“নিশ্চয় তােমারও মৃত্যু হবে এবং তাদেরও মৃত্যু হবে।” (সূরা যুমার: ৩০)
وَمَا جَعَلْنَا لِبَشَرٍ مِّنْ قَبْلِکَ الْخُلْدَ – اَفَائِنْ مِّتَّ فَھُمُ الْخٰلِدُوْنَ –
“আপনার পূর্বেও কোন মানুষকে আমি অনন্ত জীবন দান করিনি। সুতরাং আপনার মৃত্যু হলে তারা কি চিরজীবি হয়ে থাকবে?” (সূরা আম্বিয়া: ৩৪)
এরপর তিনি (আবূ বকর) মসজিদে নববীর মিম্বারের দিকে অগ্রসর হলেন। সমবেত লােকদেরকে শান্ত হয়ে বসার জন্য অনুরােধ করলেন। এরপর আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করে এক নাতীদীর্ঘ ভাষণ দিলেন:
مَنْ کَانَ مِنْکُمْ یَعْبُدُ مُحَمَّدًا فَاِنَّ مُحَمَّدًا قَدْ مَاتَ وَمَنْ کَانَ مِنْکُمْ یَعْبُدُ اللہَ فَاِنَّ اللہَ حَیٌّ لَا یَمُوْتُ قَالَ اللہُ تَعَالٰی وَمَا محمَّدٌ اِلَّا رَسُوْلٌ قَدْ خَلَتْ مِنْ قبلِہِ الرُّسُلَ اَفَائِنْ مَّاتَ اَوْ قُتِلَ انْقَلَبْتُمْ عَلٰی اَعْقَابِکُمْ وَمَنْ یَّنْقَلِبْ عَلٰی عَقِیْبَیْہِ فَلَنْ یَّضُرُّ اللہَ شَیْئًا وَسَیَجْزِ اللہُ الشّٰکِرِیْنَ ( البخاری ، المناقب / لو کنت متّخذا خلیلا 1/ 517 رقم: 3668
“তােমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ সা.-এর ইবাদত করতাে, তার জেনে রাখা উচিত নিশ্চয় মুহাম্মাদ সা. ইন্তেকাল করেছেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করতাে তার জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ চিরঞ্জীব, তিনি কখনাে মৃত্যুবরণ করবেন না। মুহাম্মাদ সা. একজন রাসূল ছিলেন। তার পূর্বে অনেক রাসূল অতিবাহিত হয়েছেন। সুতরাং তিনি যদি মারা যান বা নিহত হন, তা হলে কি তােমরা তােমাদের পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে? আর যে ব্যক্তি দীন-ইসলাম থেকে ফিরে যাবে সে আল্লাহ’র কোন ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ তাআলা অতিসত্ত্বর কৃতজ্ঞদেরকে বদলা দেবেন।” | এ ভাষণ শুনে হযরত উমর রাযি. বললেন- “আল্লাহর কসম! আমি যখনই আবু বকর রাযি.-কে এ আয়াত তিলাওয়াত করতে শুনলাম, তখন হতভম্ব হয়ে গেলাম। আমার পা স্থির রাখতে পারলাম না এবং জমিনের উপর বসে পড়লাম।”
মােটকথা, যেখানে ১২ রবিউল আউয়ালে সাহাবায়ে কেরাম ও আহলে বায়তের লােকেরা নবীর ইন্তেকালের শােকে মুহ্যমান, সেখানে আমাদের তথাকথিত সুন্নী নামধারী বিদ’আতী ভাইয়েরা ১২ রবিউল আউয়ালে মীলাদুন্নাবীর আনন্দে জুলুস মিছিলে অথৈ সাগরের তরঙ্গের ন্যায় ভেসে বেড়ায়!
সৌদী সরকারের ঘােষণা: নবীর জন্মদিবস পালন শিরকতুল্য:
বিগত ২০০২ ইং ২৩ মে ৯ রবিউল আউয়াল সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ হযরত মুহাম্মাদ সা.-এর জন্মদিনকে ঈদে-মীলাদুন্নাবী হিসেবে উদযাপনকে শিরকের সমতুল্য বলে ঘােষণা করেছে। | সাউদী মুফতী শেখ আব্দুল আজীজ আল শেখ মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতি এ দিনটি বিশেষভাবে উদযাপন না করার আহ্বান জানান। এবং বর্তমানে সাউদী আরবে রবিউল আউয়াল মাস এলেই শহরের বড় বড় স্থানসমূহে ব্যানার লিখে টানানাে হয়, “১২ রবিউল আউয়াল ঈদে-মীলাদুন্নাবী উদযাপন শিরক ও হারাম। এর থেকে বিরত থাকুন।” সৌদী আরবের মুফতীদের এ ফতােয়া যথার্থই। কেননা, এখন থেকে যদি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হয়, তা হলে এখন আমরা কেবল এর বাহ্যিক দিক দেখে বলছি যে, এটা খ্রিস্টানদের পরিকল্পনা ও প্ররােচনা, মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্যই এটা শুরু হয়েছে। এখন এ উৎসব সুন্নী নামধারী বিদ’আতীরা করছে। একদিন এমন আসবে যে, আমরা যদি এতে শরীক না হই, তবুও বিজাতিরা আর বসে থাকবে না। তারাই সরাসরি এর নেতৃত্ব দেবে।
অমুসলিমরাও সূফী!
ইতােপূর্বে ঢাকার আরামবাগে দেওয়ানবাগীর দরবারে বিশ্বসূফী সম্মেলন হতাে। এতে অনেক নামধারী সূফী অংশগ্রহণ করতাে। তাদের কেউ হিন্দু, কেউ খ্রীস্টান, কেউ বৌদ্ধ, আবার কেউ ইয়াহুদী সূফী! নাউযুবিল্লাহ।তা হলে বােঝা গেল সূফীবাদ এটা ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে একটা সর্বধর্মীয় মতবাদ। এর সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। এমনিভাবে একদিন মীলাদুন্নাবীর অনুষ্ঠান জশনে জুলুসও পরিচালিত হবে খ্রিস্টানদের দ্বারা, নেতৃত্বও দেবে তারাই। মুসলমানদের ইসলাম শিখাবে ইসলামের শত্রুরা ।।
মুসলিম-খ্রিস্টান মিলে মীলাদুন্নাবী উদযাপন:
‘মুসলিম ও খ্রিস্টান মিলে রাসূলুল্লাহ সা.-এর জন্মদিবস পালন।‘ শিরােনামে দৈনিক ইত্তেফাকের ‘ধর্মচিন্তা’ পাতায় ৮-এর কলামে ২০ মার্চ ‘০৯ শুক্রবার একটি খবর ছাপা হয়। যা হুবহু নিচে তুলে ধরা হলাে ।
“আফ্রিকা-মহাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত মালাউইতে হযরত মুহাম্মাদ সা.-এর জন্মদিবস মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায় একসাথে পালন করেছে। এ উপলক্ষে যে শােভাযাত্রা বের করা হয় তাতে স্থানীয় খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের লােকেরাও শামিল হন। এমন কি বিভিন্ন চার্চেও এই দিনে হুযূর সা.-কে নিয়ে আলােচনা হয়।”
আমীন!