সময়ই জীবন
উর্দু ভষায় একটি কথা আছে
وقت کی ، وقت پر قدر کریں
وقت کے پاس بھی اتنا وقت نہیں
کہ آپکو دوبارہ وقت دے سکے
যার অর্থ হল তুমি সময়কে সময় মত মূল্যায়ন কর, কেননা সময়ের কাছেও এই সুযোগ নেই যে তোমাকে অতীত সময় ফিরিয়ে দিবে। মনিষীদের ইংরেজীতে কিছু বাক্য প্রচলিত আছে যেমন:Time is Life.সময়ই জীবন। Life is death’s close companion.জীবন হচ্ছে মৃত্যুর ঘনিষ্ঠ সঙ্গী । Time is Money. সময়ই টাকা। Time is more valuable than money. টাকার চেয়ে সময় বেশি মূল্যবান ইত্যাদি।
আমাদের জীবন কিছু সময়ের সমষ্টি ।
এক একটি মুহূর্ত অতিবাহিত হয়ে যাওয়া মানে জীবনটা একটু একটু করে খুয়ে যাওয়া, এভাবেই একসময় ফুরিয়ে যাবে প্রার্থীব জীবনের পুরো সময়, বস্তুত আল্লাহ সুবহানাহু তা’য়লা দুনিয়াতে একটা নির্দিষ্ট হায়াত নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এ নির্দিষ্ট সময়টুকুতেই আমাদের নেক আমল করে আখেরাতের পাথেয় যোগাড় করে নিতে হবে।সুতরাং আমাদের আখেরাতের সাফল্য নির্ভর করবে দুনিয়ার এই সময়কে কাজে লাগানোর উপর । কিন্তু সরল সত্য টুকু আজ অনেকেই উপলব্ধি করেনা, সময়কে কাজে লাগানোর ব্যাপারে দুনিয়ার অধিকাংশ মানুষই উদাসীন থাকে। প্রতিনিয়ত তারা সময় বরবাদ করছে, নানান অনর্থক কাজে, খুব অল্প সংখ্যক মানুষই সময়ের কদর করে। আমরা দুনিয়ার মানুষ গুলোর দিকে লক্ষ্য করলে দেখব সময়কে ব্যবহারের দিক থেকে তারা দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত।
দুই শ্রেণির মানুষ:
এক শ্রেণীর মানুষ সময়ের মূল্য বোঝে, তারা ভালো করেই জানে সময়েই জীবন। সময়ের সঠিক ব্যবহারটি আখেরাতের সাফল্য বয়ে আনবে সময়ের অপচয় মানে নিজের জীবন ধ্বংস করা, নিজের আখেরাতের পুজি বরবাদ করা, তাই তারা অনর্থক কাজে সময় নষ্ট করে না। বরং আল্লাহর এবাদত বন্দেগীতে মশগুল থেকে সময়ের সৎ ব্যবহার করে তারা দিনের অপরিহার্য বিধানগুলো পালনের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল ইবাদতের সময় কাটায়। তারা হালাল রিজিক অন্বেষনের পাশাপাশি দাওয়াতের অঙ্গনে ভূমিকা রাখে, তাদের অবসর সময় কাটে কোরআন তেলাওয়াতে আল্লাহর জিকির ও তাজবীহ পাঠে এভাবে তারা নেক আমলের পাল্লা কে ভারী করে তোলে।
দ্বিতীয় শ্রেণীর মানুষ
সময়ের ব্যাপারে নিজেদের প্রতি জুলুমকারী, এরা নিজেদের সময় অপচয়ের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত, তারা মনে করে জীবন হলো খেল-তামাশা, মোজ-মস্তি, খাওয়া-দাওয়া ,আর ঘুমে বিভুর থাকার নাম। তাই তাদের সময় কাটে খেলাধুলা ভোগবিলাসিতায় আর মনের কামনা-বাসনা পূরণের মাঝে। তাদের জীবনটা ভরে ওঠে মন্দ কাজের প্রবৃত্তিতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যে তাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তের হিসাব নেবেন এই চিন্তাই তাদের নেই নিজের সময়ের ব্যাপারে এমন উদাসীন মানুষগুলো বর্তমানে যে সব অনর্থক কাজে সময় নষ্ট করছে, সময় নষ্ট করে কিভাবে তারা আপন সময়কে হত্যা করছে,কিভাবে সময় নষ্ট করে তারা নিজেদের উপর জুলুম করে চলেছে । এর কিছু উদাহরণ আমি নিম্নে তুলে ধরছি । মনোযোগ সহকারে 10মি. সময় নিয়ে পড়ুন অনেক উপকারে আসবে, ইনশা আল্লাহ।
সময়কে আমরা কিভাবে অপচয় করতেছি:
এক হারাম ফোন আলাপে সময় নষ্ট করা: বর্তমানে একদিকে চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহশিক্ষা ব্যবস্থা এবং কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষের অবাধ বিচরণ ফলে নারী পুরুষের মধ্যে পর্দাহীনতা ও প্রেমিক্সিং এর ব্যাধি বাড়ছে আরেকদিকে মোবাইল যোগাযোগ সহজলভ্যতার কারণে তাদের মাঝে লম্বা সময় চ্যাটিং ও আলাপ চারিতার সুযোগ হয়েছে এর ফলে সমাজে নারী পুরুষের মাঝে আশংকা জনক ভাবে বেড়ে চলেছে অবৈধ প্রেম পরক্রীয়ার ঘটনা আজকের যুবক-যুবতীরা দিনরাত ঘন্টার পর ঘন্টা প্রেমে ব্যস্ত থাকে । এভাবে হারাম রিলেশন করে ফোন আলাপে তারা লম্বা সময় নষ্ট করে। তাদের মধ্যে না আছে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগীর প্রতি আগ্রহ আর নিজের পড়ালেখা বা কর্তব্য পালনের প্রতি মনোযোগ এ ধরনের হারাম রিলেশনের পরিনাম খুবই ভয়াবহ আবার একসময় দেখা যায় তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেয়েরা নিজের সম্ভ্রম হারিয়ে ফেলে । তখন তার কাছে জমিনের উপর থেকে জমিনের নিচে থাকাই স্বস্তির মনে হয়। ফলে যন্ত্রণার আগুনে দগ্ধ হতে হতে একসময় সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আজকাল তো শুধু মেয়েরাই নয় অবৈধ প্রেম পরক্রীয় লিপ্ত অনেক ছেলেও হতাশায় ভোগে নিজের জীবনকে শেষ করে দিচ্ছে । প্রায় প্রতিদিনই সংবাদমাধ্যমগুলোতে এমন বহু ট্রাজেডির কথা উঠে আসছে হারাম সম্পর্কে জড়িয়ে নিজের জীবন নষ্টকারী এমন কত নারী পুরুষের আর্তনাদ আমাদের কানে আসছে আত্মভোলা আল্লাহকে ভুলে গেছে তাই আল্লাহ তা’য়ালা ও তাদের আত্মভোলা করে দিয়েছেন আল্লাহ তা’য়ালা বলে-
وَلَا تَکُوْنُوْا کَلّذِیْنَ نَسُوا اللہَ فَاَنْسٰھُمْ اَنْفُسَھُمْ –
তোমারা তাদের মত হইয়ো না, যারা আল্লাহকে ভুলে গেছে ফলে, আল্লাহ তাদেরকে আত্মভোলা করে দিয়েছেন ।
দুই ফেসবুক, ইউটিউব, নেটপ্লিক্স ,টিক-টক লাইক ইত্যাদি, ব্যবহারে অনলাইনে সময়ের অপচয়:- বর্তমানে মানুষ অনলাইনে এসব ফাঁদে সবচেয়ে বেশি সময় নষ্ট করছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নারী পুরুষ ছোট বড় প্রায় সকল মানুষই লম্বা সময় বোধ হয়ে থাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় অহেতুক স্ক্রোলিংয়ে এসব মাধ্যমে তারা সেলফি, হাসি ঠাট্টা মুলক পোস্ট, গান-বাজনা, নাটক মুভি দেখার মাঝে মজে থাকে এভাবে যে তারা জীবনের কত সময় নষ্ট করছে তার কোন হিসেব নেই ।
তিন গেমিং এর বিষয়টি আমি তুলে ধরতে চাই:- আজকের তরুণরা অনলাইন গেমিং-এ আসক্ত থেকে নিজেদের সময় নষ্ট করছে এটা যে সময় নষ্ট করার কতটা ক্ষতিকর দিক তার বলার অপেক্ষা রাখে না আজকের প্রায় অভিভাবকই আপন সন্তানদের নিয়ে খুব চিন্তিত। সবার অভিযোগ আমার সন্তান আর আগের মত পড়ালেখায় মনোযোগী নয়। মোবাইলে pubg , free fire প্রবৃতি গেমিং এ তারা মত্ত হয়ে থাকে। আজ শুধু ছোটরা সময় নষ্ট করার এই মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত নয় অনেক কর্মক্ষম মানুষও এসব ইলেকট্রনিক গেমিং-এ নিজের মূল্যবান সময় নষ্ট করে দিচ্ছে।
চার আজকের মানুষ বিভিন্ন খেলাধুলা উপভোগে সময় নষ্ট করছে:- কুফফারদের পৃষ্ঠপোষকতায় বিশ্বব্যাপী একের পর এক আয়োজন হতে থাকে হরেক রকমের খেলাধুলার আসর। কখনো বিশ্বকাপ ফুটবল, কখনো বিশ্বকাপ ক্রিকেট, কখন অলিম্পিক আসর, এভাবে আবার দেশে দেশে আইপিএল, বিপিএল এমন হরেক লীগ বা সিরিজ খেলাধুলার আয়োজন চলতেই থাকে একটা আয়োজন শেষ না হতেই শুরু হয় আরেকটা আয়োজন। আর বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ এসব খেলাধুলা উপভোগ করেই নষ্ট করছে নিজের জীবনের মূল্যবান সময়।
পাঁচ আজকের তরুণ তরুণীরা বন্ধুদের নিয়ে বিভিন্ন খেলাধুলায় মেতে থেকে সময় পার করে দিচ্ছে। আজকের তরুণ যুবকরা টিভি পর্দায় বিভিন্ন খেলাধুলা উপভোগের পাশাপাশি নিজেরাও খেলাধুলায় মেতে থেকে নিজের জীবনের সময় গুলোকে নষ্ট করছে বন্ধুদের নিয়ে চলে তাদের নানা রকমের খেলার আয়োজন কখনো ক্রিকেট কখনো ফুটবল, কখনো ব্যাডমিন্টন, কখনো ভলিবল, অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় তাদের জীবনটাই যেন কেবল খেলাধুলার জন্য।
ছয় ট্যুর-ট্রাবেলিং উদ্দেশ্য ছাড়া বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানো আজ এক ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন বিনোদন স্পট বা দর্শনীয় স্থানে অহেতুক ঘুরে বেরিয়ে অনেকে সময় নষ্ট করে থাকে। আজ সমুদ্র সৈকতে তো কাল কোন পার্কে এভাবে বিভিন্ন স্পটে ঘোরাঘুরি করে এরা জীবনে অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট করে দিচ্ছে ।
সাত ক্লাব বা দোকানপাটে বসে সময় নষ্ট করন: ক্লাব বা দোকানপাটে বসে অনর্থক আড্ডা না দিলে তো আমাদের চলেই না। ছেলে বুড়ো যোয়ান বৃদ্ধ অধিকাংশ মানুষই প্রতিদিন এভাবে ক্লাব বা দোকানপাটে বসে অনর্থক গল্পগুজব করে বেড়ায় এসব আড্ডায় তাদের বেশিরভাগ সময় কাটে অন্যের সমালোচনা ও গীবত পরনিন্দায়।
আট গান বাজনা ও নাটক সিনেমা দেখায় সময় নষ্ট করুন: নারী-পুরুষ অনেকেই আজ এভাবে বিনোদনের নামে গান-বাজনা শুনে কিংবা নাটক সিনেমা দেখে হারাম কাজের সময় নষ্ট করছে ফলে তাদের অন্তর কলুষিত হয়ে পড়েছে এবং চারিত্রিক অবনতি ঘটছে এসব গুনায় নিমজ্জিত থাকার কারণেই তাদের কাছে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করতে ভালো লাগেনা বা তা করতে আগ্রহী হয় না দ্বীনি ইলম অর্জন করতে।
নয় বিভিন্ন গল্প উপন্যাস পড়ে সময় নষ্ট করন: এক ধরনের বিকৃত স্বভাবধারী লেখক আছে যারা অশ্লীলতার বিস্তার ঘটাতে যৌনসুরসুড়ি মূলক বিভিন্ন গল্প উপন্যাস লেখে আর এসব পড়ে পড়ে একটা অথর্ব জেনারেশন নিজেদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে এমনকি নিজেদের বাস্তব জীবনকে তারা সেভাবে গড়ে তোলে
দশ ফর্ন সাইটে নগ্ন অশ্লিল মুভি দেখে সময় নষ্ট করুন: নিজের সময় নষ্ট এবং চরিত্র ধ্বংস করার সবচেয়ে ক্ষতিকর দিক এটা এই ব্যাধিতে যেই আসক্ত হয়েছে তার সময় অর্থ স্বাস্থ্য চরিত্র সবই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে
এগারো কনসার্ট প্রভৃতি হারাম আয়োজনে সময় নষ্ট করন: আজকের যুব সমাজ শুধু একা কি নিজে গান-বাজনা শুনে সময় পার করে না তারা এখন সম্মিলিতভাবে ঘটাকরে ক্যাম্পাসে বিনোদনের স্পটে বিয়ে বাড়ি সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কনসার্ট বা গানবাজনার আসর জমায়। গানের সুর তরঙ্গে মাতালের মত আচরন করতে থাকে।
বারো বিভিন্ন বিজাতি উৎসব দিবস পালনের সময় নষ্ট করেন: বর্তমানে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠার জন্য চলছে নানান দিবস পালন আজ এই দিবস তো কাল ঐদিবস আগে এসব ভিন্ন অপসংস্কৃতি গুলো কাফের মুশরিকদের মাঝে সীমাবদ্ধ ছিল কিন্তু বর্তমানে বিজাতিদের অনুসরণে এক শ্রেণীর অজ্ঞ নামধারী মুসলিমরাও এসব ভিন্ন উৎসবে মত্ত হয়ে যায় ভ্যালেন্টাইন ডে, থার্টিফার্স্ট নাইট, হেপি নিউ ইয়ার ,বসন্ত বরণ ,পহেলা বৈশাখ, হোলি খেলা, বার্থডে এমন নানান বিজাতি উৎসব পালনে তারা নিজেদের সময় ওঅর্থ নষ্ট করছে ।
তেরো ফ্যাশনের নামে পাশ্চাত্যের ব্যাসভূসা ধারণ: অধিক সাজসজ্জায় সময় নষ্ট করেন ফ্যাশন কিংবা স্টাইলের নামে আজকের অনেক যুবক-যুবতী পাশ্চাত্যের অন্ধ অনুকরণে ব্যস্ত হয়ে থাকে নিজের সৌন্দর্য প্রদর্শনে তারা অধিক সাজসজ্জায় মেতে থাকে এজন্য তারা নানান রং ঢঙের পোশাক ক্রয়ে বিভিন্ন শপিংমহলে ঘুরে বেড়ায় এতে তাদের সময় ও অর্থ দুটোরই অপচয় ঘটে। আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন এখানে আমি সময় নষ্ট করার উল্লেখযোগ্য কিছু পয়েন্ট তুলে ধরেছি এছাড়াও আরো বহু বিষয় রয়েছে যে গুলোতে লিপ্ত হয়ে মানুষ সময় নষ্ট করে থাকে বড়ই আফসোস এমন ব্যক্তির জন্য যেভাবে নিজের জীবনের সময়গুলোকে নষ্ট করে চলেছে আর ভাবছে সে সঠিক পথে আছে নেক কাজ থেকে বিমুখ থাকার পরও নিজের মুক্তির ব্যাপারে শুধারনা রাখছে এমন লোকদের ব্যাপারে হাসান আল বাছরী (র:) বলেন একজন লোককে দুনিয়া ধোঁকা দিয়েছে ফলে তারা কোন নেকের পুঁজি ছাড়াই এখান থেকে বিদায় নিয়েছে তারা বলে আমরা আল্লাহর ব্যাপারে সুধারনা রাখি কিন্তু তারা মিথ্যা বলেছে যদি তারা আল্লাহর ব্যাপারে সুধারনা রাখতো তাহলে অবশ্যই নেক কাজ করত আল্লাহ তায়ালা তাদের ব্যাপারে বলেন
সময় অপচয়কারীদের ব্যাপারে আল্লাহর বানী:
قُلْ ھَلْ نُنَبِّئُکُمْ بِالْاَخْسَرِینَ اَعْمَالًا – (سورۃ الکھف آیۃ – ۱۰۳)
বলুন আমি কি তোমাদের সেসব লোকের সংবাদ দিবো? যারা কর্মের দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
اَلَّذِیْنَ ضَلَّ سَعْیُھُْمْ فِی الْحَیٰوۃِ الدُّنْیَا وَھُمْ یَحْسَبُوْنَ اَنَّھُمْ یّحْسِنُوْنَ صُنْعًا – (سورۃ الکھف آیۃ – ۱۰۴)
তারা সে সব লোক যাদের প্রচেষ্টা প্রার্থীব জীবনে বিভ্রান্ত হয় অথচ তারা মনে করে যে তারা সৎকর্ম
করছে আল্লাহ তা’য়ালা লা আরো বলেন
وَمَنْ یَّعْشُ عَنْ ذِکْرِ الرَّحْمٰنِ نُقَیِّضْ لَہٗ الشَّیْطٰنًا فَھُوَ لَہٗ قَرِیْنٌ – ۳۶
যে ব্যক্তি আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ থাকে আমি তার জন্য এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই অতঃপর সেই হয় তার সঙ্গী । (সূরা আয-যুখরুপ আয়াত – ৩৬)
وَإِنَّهُمْ لَيَصُدُّونَهُمْ عَنِ السَّبِيلِ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُمْ مُهْتَدُونَ
শয়তানরাই মানুষকে সৎ পথে বাধা দান করে আর মানুষ মনে করে যে তারা সৎ পথে রয়েছে
(সূরা আয-যুখরুপ আয়াত – ৩৭)
আর যারা সময় নষ্ট করছে তারা একদিন আফসোস করবে নেক আমল করার আশায় দুনিয়াতে আবার ফিরে আসতে চাইবে কিন্তু তখন তাদের প্রার্থনায় সারা দেয়া হবে না আল্লাহ তাআলা বলেন
حَتَّى إِذَا جَاءَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ارْجِعُونِ *
যখন তাদের কারো কাছে মৃত্যু আসে তখন সে বলে হে আমার পালনকর্তা আমাকে দুনিয়াতে ফেরত পাঠান । (সূরা আল মুমিনূন – আয়াত নং ৯৯)
لَعَلِّی اَعْمَلُ صَالِحًا فِیْمَا تَرَکْتُ –
যাতে আমি সৎ কাজ করতে পারি যা আমি ছেড়ে দিয়েছিলাম ।
وجِاْئَ يَومئِذِ يجهنّمَ يوميذٍ يَنَذَكُرُ الْإِنسَانُ وَأَنَّى لَهُ الذِكْرَى
আর সেদিন জাহান্নামকে আনা হবে সেদিন মানুষ অনুশোচনা করবে কিন্তু এই অনুশোচনা তার কি কাজে আসবে (সূরা আল-ফজর আয়াত নং ২৩)
یَقُوْلُ یٰلَیْتَنِیْ قَدَّمْتُ لِحَیَاتِیْ –
সে বলবে হায় এই জীবনের জন্য আমি যদি কিছু অগে প্রেরণ করতাম। (সূরা আল-ফজর আয়াত নং ২৪)
হ্যাঁ সেদিনের আফসোস করতেই পারবো কিন্তু কোন কাজে আসবে না। দুনিয়াতে থাকতেই যদি নিজের সময়ের সৎ ব্যবহার করে নেক আমলের পুঁজি সংগ্রহ করা যায় তবে সেদিন মুখে হাসি ফুটবে
আমাদের সালাফ গন সময়কে অপচয় করার ব্যাপারে কি বলেছেন:
আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন আপনারা যারা আজ নিজেদের সময় গুলো নষ্ট করে চলেছেন, নেক আমল থেকে বিমুখ হয়ে আছেন আমি আপনাদের বলছি দেখো আমাদের সালাফ গন সময়কে কাজে লাগানোর ব্যাপারে কতটা যত্নশীল ছিলেন। আব্দুল্লাহ বিন মাসমাউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন সূর্য ডুবে যাওয়া সেদিনের চেয়ে অন্য কোন ব্যাপারে আমি এতটা লজ্জিত হইনা যেদিন আমার বয়স কমে গেছে কিন্তু আমার আমল বাড়েনি।
আবুদদারদা (র:) বলতেন প্রত্যেকের জ্ঞান প্রজ্ঞায় ঘাটতি রয়েছে আর তাই এই কারণে যে তার কাছে যখন দুনিয়ার সম্পদ অধিক পরিমাণে আসে তখন সে খুব আনন্দিত হয় কিন্তু দিনরাত অবিরতভাবে সে নিজ জীবন ধ্বংস করছে এটাতে কিন্তু সে মোটেও চিন্তিত নয় সম্পদ বেড়ে কি লাভ হবে যখন বয়স কমে যাচ্ছে । আবু বকর বিন আইয়াশ রাহঃ বলেন যদি তোমাদের কারো একটি দিরহাম হারিয়ে যায় তাহলে তার পুরো দিন এই বলে কেটে যায় ইন্নালিল্লাহ আমার দিরহামটি হারিয়ে গেছে কিন্তু সে এটা বলে না যে আমার দিনটি নষ্ট হয়ে গেছে আমি এই দিনে কি করেছি আমি এই দিনে আখিরাতের কি পাথেয় সংগ্রহ করেছি আমি এই দিনে কি করেছি? আমি এই দিনে আখিরাতের কি পাথেয় সংগ্রহ করেছি ?
ছারিয়া ছাকতী রাহঃ বলেন সম্পদের ঘাটতিতে যদি তুমি চিন্তিত হও তাহলে বয়সের ঘাটতিতে ক্রন্দন করো হাসান আল বছরী রাহিমাহুল্লাহ বলেন দিনরাত প্রতিটি নতুন কে পুরাতন করে দেয় এবং প্রতিটি দূরবর্তী জিনিসকে নিকটবর্তী করে দেয় এবং প্রতিটি অঙ্গীকার ও শাস্তির প্রতিজ্ঞা নিয়ে আসছে। ওমর বিন আব্দুল আজিজ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, দিনরাত তোমার পেছনে কাজ করছে সুতরাং তুমিও তাতে কাজ করো । ইমাম জুহরী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ওমর বিন আব্দুল আজিজ সকাল হলে নিজের দাড়ি ধরে তিলাওয়াত করতেন
اَفَرَءَیْتَ اِنْ مَتَّعْنٰھُمْ سِنِیْنَ –
আপনি ভেবে দেখুন তো আমি যদি তাদের বছরের পর বছর ভোগ বিলাস করতে দেই ।
(সূরা আশ-শূআরা আয়াত নং- ২০৬
ثُمَّ جَاءَھُمْ مَّاکَانُوْا یُوْعَدُون –
ٖঅতপর যে বিষয়ে তাদের ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা তাদের কাছে এসে পড়ে।
(সূরা আশ-শূআরা আয়াত নং- ২০৬)
مَا اَغْنٰی عَنْھُمْ مَا کَانُوا یُمَتَّعُون –
তখন তাদের এই ভোগবিলাস তাদের কোন উপকারে আসবে না (সূরা আশ-শূআরা আয়াত নং- ২০৭) এরপর তিনি কেঁদে কেঁদে বলতেন হে প্রতারিত তোমার দিবস কাটে অমানোযোগিতায় আর রাত কাটে ঘুমে ঘুমে ধ্বংশ তোমার জন্য অনিবার্য্য তাই তুমি যখন জাগ্রত থাকো তখন বিচক্ষণ জাগ্রত ব্যক্তির মত নয়, আর যখন ঘুমন্ত থাকো তখন সফল ঘুমন্ত ব্যক্তির মত নয়, কামনা-বাসনায় তুমি আনন্দিত এবং ধ্বংসশীল জিনিসে তুমি খুব খুশি, যেমন ঘুমের ঘরে স্বপ্ন দেখালো খুব খুশি প্রকাশ করে তুমি এমন জিনিসের পেছনে দৌড়াচ্ছ যার পরিণাম দেখে অচিরেই তুমি অপছন্দ করবে ।
চতুস্পদ জন্তুরাই তো এভাবে দুনিয়াতে বসবাস করে ইয়াজিদ আর রাক্কাশী নিজের হিসাব করে বলতেন হে ইয়াজিদ তোমার মৃত্যুর পর কে তোমার পক্ষ থেকে সালাত আদায় করবে হে ইয়াজিদ তোমার মৃত্যুর পর কে তোমার পক্ষ থেকে রোজা রাখবে হে ইয়াজিদ তোমার মৃত্যুর পর কে তোমার পক্ষ থেকে তোমার রব কে সন্তুষ্ট করবে এরপর তিনি কেঁদে কেঁদে বলতেন হে লোক সকল তোমরা কি নিজেদের অবস্থার ব্যাপারে ক্রন্দন করবে না মৃত্যু যাকে খুঁজছে, কবর যার আবাস, মাটি যার বিছানা এবং কীটপতঙ্গ যার সঙ্গী এত কিছু সত্বেও তাকে কবরে প্রতীক্ষা করতে হবে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত। তখন তার অবস্থা কেমন হবে?
রাবী বিন খুসাইম প্রসিদ্ধ তাবেয়ীদের অন্যতম তিনি তার ঘরে একটি কবর খনন করে রেখেছিলেন যখন তার অন্তরে কাঠিন্য অনুভব হতো তখন তিনি কবরে গিয়ে চিত হয়ে বেশ কিছুক্ষণ শুয়ে থাকতেন আর বলতেন।
رَبِّ ارْجِعُونِ لَعَلَّى أَعْمَلُ صَالِحًا فِيمَا تَرَكْتُ
হে আমার রব আমাকে (দুনিয়াতে) আবার ফিরিয়ে দিন। যাতে আমি নেক আমল করতে পারি যা আমি পূর্বে করিনি (সূরা আল-মুমিনূন – আয়াত নং – ৯৯-১০০)
অতঃপর তিনি কবর থেকে বেরিয়ে নিজেকে উদ্দেশ্য করে বলতেন হে রাবী! তোমাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে এখন পুনরায় কবরে যাওয়ার পূর্বে নেক আমল করে নেও।
সাবিত আল-বুনানী রাহিমাহুল্লাহ বলেন আমি আর আবু সা’দ মুমূর্ষ অবস্থায় তার কাছে কালিমার তালকীন করতে গেলাম। তিনি বললেন ব্যাটা আমাকে ছেড়ে দাও আমি আমার নিয়মিত আমলে ব্যস্ত আছি।
হ্যাঁ এরাই আমাদের সালাফ জীবনের অন্তিম মুহূর্তকে কিভাবে আল্লাহর আনুগত্যে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন তারা। জনৈক সালাফের মৃত্যুর সময় কিছু লোক তার কাছে প্রবেশ করে দেখলো তিনি সালাত আদায় করছেন। তিনি তাদের বললেন তোমরা আমাকে ছেড়ে দাও এখন আমার আমলনামা গুটিয়ে ফেলা হবে । জনৈক সালাফ বলেন আমরা এমন এক সম্প্রদায়ের সাথে অবস্থান করেছিলাম যারা সময়ের ব্যাপারে তোমাদের দিরহাম ব্যয়ের চেয়ে বেশি কৃপণ ছিলেন আমি সম্পদ সঞ্চয় কে সৌভাগ্য মনে করি না বস্তুত মুত্তাকী ব্যাক্তিই হলেন সৌভাগ্যবান ।
আমর বিন ক্বাইছকে এক লোক বলল আমার সাথে একটু আলাপ করুন তখন তিনি বললেন তুমি সূর্যকে আটকে রাখো যদি তুমি সূর্যকে আটকে রাখতে পারো তবে আমি তোমার সাথে আলাপ করব। তিনি আমলে এতই মশগুল ছিলেন যে লোকটির সাথে কথা বলে সময় নষ্ট করতে চাননি আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন নিজের সময়গুলো নেক কাজে ব্যয় করার ক্ষেত্রে এমনি ছিল আমাদের সালাফদের অবস্থা। কিন্তু আমাদের কি হল? সময় ব্যবহারে আজ আমাদের কি অবস্থা? সালাফের পথ ছেড়ে আজ কোথায় আমরা কিভাবে স্বপ্ন দেখি যে অনেক লম্বা হায়াত পাব এখন একটু আনন্দ বিনোদনের সময় কাটিয়ে নেই বয়স যখন আশি কোটায় পৌঁছবে তখন না হয় আমল করব হায় এটা শয়তানের ধোকা ছাড়া কিছু নয় এজন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন।
نِعْمَتَانِ مَغْبُونٌ فِیْھِمَا کَثِیْرٗ مِّنَ النَّاسِ : الصِّحَّۃُ وَالْفَرَغُ
দু’টি নেয়ামতের ব্যাপারে অনেক মানুষ প্রতারিত তা হল সুস্থতা ও অবসরতা।
তাই রাসূল (সাঃ) আমাদেরকে সতর্ক করে বলেছেন
اغْتَنِمْ خَمْسًا قَبْلَ خَمْسٍ: شَبَابَكَ قَبْلَ هِرَمِكَ، وَصِحَّتَكَ قَبْلَ سَقَمِكَ، وَعِنَاءَكَ قَبْلَ فَقْرِكَ، وَفَرَاغَكَ قَبْلَ شُغْلِكَ، وَحَيَاتَكَ قَبْلَ مَوْتِكَ
পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিসের পূর্বে মূল্যায়ন করো তোমার যৌবনকে তোমার বার্ধক্যের পূর্বে । তোমার সুস্থতাকে তোমার অসুস্থতার পূর্বে । তোমার ধনাঢ্যতাকে তোমার দারিদ্রের পূর্বে । তোমার অবসরতাকে তোমার ব্যস্ততার পূর্বে এবং তোমার জীবনকে তোমার মৃত্যুর পূর্বে।
আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন অন্যান্য উম্মতের তুলনায় এই উম্মতের হায়াত কম। অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন আমাদের হায়াত কম হওয়ার কারণে তিনি আমাদের সওয়াব ও প্রতিদান বাড়িয়ে দেবেন এই উম্মতকে বিধান দেয়া হয়েছে সহজ সরল কিন্তু প্রতিদান দেয়া হবে অনেক বেশি। একটি নেক কাজে ১০ নেকি, আর আল্লাহ যাকে চান তাকে আরো বাড়িয়ে দিবেন।
ষাট বছরের হিসাব:
আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত রাসূল সাঃ বলেছেন।
أَعْمَارُ أُمَّتِي مَا بَيْنَ السِّتِّينَ إِلَى السَّبْعِينَ، وَأَقَلُّهُمْ مَنْ يَجُوزُ ذَلِكَ
আমার উম্মতের বয়স 60 থেকে 70 এর মাঝে আর এই সময় সময়কে ডিঙ্গিয়ে যাওয়ার মতো লোক খুবই কম আমরা ধরে নেই যে আমাদের কেউ ৬০ বছর জীবন লাভ করলো সে যদি প্রতিদিন ৮ ঘন্টা করে ঘুমায় তাহলে ২০ বছর সময় কাটে ঘুমে ঘুমে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পূর্বে চলে যায় ১৫ বছর ২ বছর বা ৩ বছর কেটে যায় খাওয়া দাওয়ায় এবং জরুরত সারার কাজে । আর বাকী থাকে ২২ বা ২৩ বছরের মত যদি এই সময়টাকে সে যথাযত কাজে ব্যবহার না করে নিয়মিত নেক আমলে সচেষ্ট না থাকে, তাহলে আখেরাতের পুঁজি সে কখন সংগ্রহ করবে
ইমাম গাজালী রাহিমাহুল্লাহ বলেন
যে ব্যক্তি দিনের ২৪ ঘন্টা থেকে ৮ ঘন্টা ঘমিয়ে কাটায় সে ৬০ বছর জিন্দেগী থেকে ২০ বছর কাটায় ঘুমে ঘুমে আর বাকী ৪০ বছরে খেলতামাশা অবাধ্যতা সীমালঙ্গন এবং দীনার দিরহামের ব্যস্ততায় থাকে তাহলে জীবনের আর বাকী থাকে কী? পরিতাপের দিন কি বান্দা নিজের নেক আমলের পুঁজির তামান্না করবে না? রাসূল সাঃ এর আগের পরের সব গুনাহ করে দেয়া সত্ত্বেও তিনি পুরো রাত দাড়িয়ে সালাত আদায় করতেন, এমনকি তার পা মোবারক পর্যন্ত ফুলে যেত। তাকে জিজ্ঞেস করা হত ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনার তো পূর্বের ও পরের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। তাহলে আপনি কেন এতো মেহনত করছেন? তখন তিনি বলতেন
اَفَلَا اَکُوْنُ عَبْدًا شَکُوْرًا
আমি কি কৃতজ্ঞ বান্দা হবো না? (সহী বুখারী হাদীস নং:- ১১৩০, সহী মুসলিম হাদীস নং:- ২৮১৯)
আমরা প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন আমরা যদি কাউকে প্রতিদিন কিছু কিছু করে তার সম্পদ আগুনে জ্বালিয়ে দিতে দেখি তাহলে তার ব্যাপারে কি বলি? বলি যে লোকটা নির্বোধ পাগল (واللہ ) আল্লাহর কসম যে ব্যক্তি প্রতিদিন তার জীবনের একটা অংশ অনর্থক কাজে নষ্ট করে সে তো সম্পদ জ্বালিয়ে দেয়া লোকটির চেয়েও অধিক নির্বোধ কেন না ধনসম্পদের ক্ষতি হলে তার ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব কিন্তু জীবন চলে গেলে তার ক্ষতিপূরণ কখনোই সম্ভব নয়। তাই প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন নিজের জীবনের মূল্যবান সময়গুলো হেলায় খেলায় নষ্ট না করে নেক আমলের প্রতি সচেষ্ট হও। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত জৈনক লোক বলল ইয়া রাসূলাল্লাহ কোন ব্যক্তি সর্বোত্তম তিনি বললেন:-
مَنْ طَالَ عُمُرُہٗ وَ حَسُنَ عَمَلُہٗ
যে দীর্ঘ জীবন পেয়ে নেক কাজ বেশি করেছে (সুনানে তিরমিযি হাদীস নং:- ২৩২৯
আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন আজকের আলোচনায় আমি এটাই বোঝাতে চাচ্ছি সময় আমাদের জীবন, সময় আমাদের মূলধন, সুতরাং আমাদের জীবন থেকে একটা মুহূর্ত যেন অনর্থক ও অহেতুক কাজে নষ্ট না হয়ে যায়। সময়ের গুরুত্বের কারণেই আল্লাহ সুবহানাতায়ালা পবিত্র কুরআনে সময়ের কসম করেছেন । সূরাতুল আসরে যাহা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে।
وَالْعَصْرِ- إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ – إِلَّا الَّذِينَ ءَامَنُوا وَعَمِلُوا الصَّلِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ –
সময়ের কসম নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে কিন্তু তারা নয় যারা ঈমান আনে সৎ কাজ করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় এবং উপদেশ দেয় ধৈর্য ধারণের
দুনিয়ার এই মূল্যবান সময়ের ব্যাপারে কাল কেয়ামতের দিবসে আমরা জিজ্ঞাসিত হব হাদীস শরীফে এসছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :-
لَنْ يَزُولَ قَدَمَا عَبْدٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يَسْأَلَ عَنْ أَرْبَع عَنْ شَبَابِهِ فِيمَا أَبْلَاهُ، وَعَنْ عُمُرِهِ فِيمَا أَفْنَاهُ، وَعَنْ مَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ، وَفِيمَا أَنْفَقَهُ
(আল-মুজামুল আওসাত, হাদিস নং- ৪৭১০)
চারটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত কেয়ামত দিবসে কোন বান্দার দুটি পাশ সরবে না ।
১। তার যৌবন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে তা সে কিভাবে কাটিয়েছে।
২। তার জীবন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে তা সে কিভাবে অতিবাহিত করেছে।
৩। তার সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে কোথা থেকে সেটা উপার্জন করেছে ।
৪। এবং কোন কাজে তা ব্যয় করেছে।
তাই আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন আমরা যেন কোনভাবেই নিজের জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট না করি । নেক আমলে সচেষ্ট থেকে এবং আল্লাহর আনুগত্যে ব্যস্ত থেকে কাটুক আমাদের জীবনের সময়গুলো আল্লাহ তা’আলা আমাদের সেই তৌফিক দান করুন। আমীন। ইয়া রাব্বাল আলামীন।