সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ

%E0%A6%96%E0%A7%81%E0%A7%8E%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B9

 

সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ

ছারছিনা প্রকাশনী –  শাওয়াল মাসের ৪র্থ খুৎবাহ

الخطبة الرّابؑعۃ  لشهر شوال امر بالمعروف و نھی عن المنکر

শাউয়ালের ৪র্থ খুৎবাহ – সৎকাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ

اَعوذ باللہ من الشیطان
الرّجیم 0

بسم الله الرّحمن الرّحيم 0

 (1) الحمد لله نحمده ونستعينه ونستغفره

(১) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার, আমরা তাঁহারই গুণকীর্তন করিতেছি এবং তাঁহারই। | সাহায্য চাহিতেছি ও তাঁহারই নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি।

(2) ونعوذ بالله من شرور انفسنا –

(২) এবং আমরা আমাদের  প্রবৃত্তির কুচক্র হইতে বাঁচিবার জন্য,আল্লাহর সাহায্য ভিক্ষা করিতেছি।

(3) من يهد الله فلا مضل له ومن يضللُ فلا هادي له ۔

(৩) আল্লাহ পাক যাহাকে হেদায়েত করেন কেহ তাহাকে গোমরাহ করিতে পারে না, পক্ষান্তরে বান্দা নিজ ইচ্ছায় গোমরাহ হইবার জন্য দৃঢ় হইবার পর আল্লাহ যদি তাহার জন্য গোমরাহী নির্ধারণ করেন তবে আর কেহ তাহাকে হেদায়েত করিতে পারে না।

(4) ونشهد أن لا اله الا الله وأن محمدا عبده ورسوله صلى الله عليہ وعلى الہ وسلم ارسله بالحق بشيرا ونذيرًا بين يدي الساعة –  

(৪) আমরা সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কেহই উপাস্য নাই এবং মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহরই বান্দা এবং রাসূল । আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের পূর্বে তাঁহাকে সত্য (ইসলাম) সহ সুসংবাদদাতা এবং ভীতি প্রদর্শক করিয়া পাঠাইয়াছেন।

(5) مَنْ یُّطِعِ اللّہَ وَ رَسُوْلَہٗ فَقَدْ رَشَدَ – وَ مَنْ یَّعْصِھِمَا فَقَدْ غَوٰی –

(৫) যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তাঁহার রাসূলকে মান্য করিল সে জ্ঞানীর কাজ করিল, আর যে ব্যক্তি তাহাদিগের নাফরমানী করিল সে বোকামী করিল। (ধ্বংস ডাকিয়া আনিল)।

 (6)  امّا بعد. فيا ايها المؤمنون نصرَکُمُ اللہُ فی دِیْنِکُم وَ دُنْیَاکُم ۔

হামদ্ ও সালাতের পর:  হে মুমিনগণ! আল্লাহ পাক আপনাদিগকে দ্বীন ও দুনিয়ায় সাহায্য করুন।

(7) مُروْا بِالمعروف وَانھَوا عَن الْمُنْکَر – یَسْتَغْفِرْ لَکُم من فی السّمٰوٰتِ ومَن فِی الارْضِ بالعَشِیِّ وَالْابْکَارْ ۔

(৭) যদি আপনারা নেক কাজের আদেশ করেন এবং পাপের কাজে বাধা দেন। তাহা হইলে আসমান যমীনের সকল মাখলুকাত সর্বদা অপনাদের জন্য খোদার নিকট ইস্তিগফার করিবে ।

(8) وقال النّبی ﷺ مَنْ رَاٰی مِنکُم مُنْکَرًا فَلْیُغَیِّرْہُ بِیَدِہ ۔ فَاِنْ لَّم یَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِہ ۔ فَاِنْ لَّم یَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِہ ۔ وَذٰلِکَ اضْعَفُ الْاِیْمَانِ– رَوَاہُ مُسْلِمٌ ۔

নবী করীম সাঃ বলিয়াছন: তোমাদের কেহ যদি অন্যায় কার্য দেখে তবে সে যেন তাহার হস্ত দ্বারা বাধা প্রদান করেন, যদি সে তাহাতে সক্ষম না হয় তবে সে যেন বাক্য দ্বারা বারণ করে, যদি তাহাতেও অসমর্থ হয়  তবে সে যেন মনে মনে ঘৃনা  করে, তবে শেষোক্ত পন্থাটি দুর্বল ঈমানের পরিচায়ক। মুসলিম শরীফে বর্ণিত।

(9) وَ عَنْہُ ﷺ مَنْ دَعٰا اِلٰی ھُدًی کَانَ لَہٗ مِنَ الْاَجْرِ مِثْلَ اُجُوْرِ مَنْ تَبِعَہٗ ۔ لَا یَنْقُصُ ذٰلِکَ مِنْ اُجُوْرِھِمْ شَیْئًا ۔ 

(৯) হুযূর (সাঃ) বলেন — সৎপথের দিকে আহ্বান কারী তাহার অনুবর্তীগণের সমান ছওয়াব পাইয়া থাকে, ইহাতে অনুবর্তীগণের ছওয়াবের কোন লোকসান হয় না

    وَمَنْ دَعَا اِلٰی ضَلَالۃٍ کَانَ عَلَیْہِ مِنَ الْاِثْمِ مِثْلَ اٰثَامِ مَنْ تَبِعَہٗ ۔ لَا یَنْقُصُ ذٰلِکَ مِنْ اٰثَامِھِمْ شَیْئًا ۔ مسلم ۔

আবার গোমরাহীর দিকে আহ্বানকারীও তাহার অনুবর্তীগণের সমান পাপ অর্জন করে, ইহাতে ঐ অনুবর্তীগণের পাপের পরিমাণ কমে না।—মুসমিল।

   وَقَالَ ﷺ کُلُّکُمْ رَاعٍ وَ کُلُّکُم مَسؤُوْلٌ عَنْ رَعِیَّتِہ ۔

(১০) হুযুর (সাঃ) বলেন, তোমাদের প্রতিটি লোকই এক একজন রক্ষক এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তোমাদের অধীনস্থগণ সম্পর্কে কেয়ামতে জিজ্ঞাসা । করা হইবে যে, তাহাদিগকে শরীয়ত মত চালাইয়াছ কিনা—

اَلْاِمَامُ رَاعٍ مَسؤُوْلٌ عَنْ رَعِیَّتِہ ۔ وَالرَّجُلُ رَاعٍ فِی اَھْلِہ مَسؤُوْلٌ عَنْ رَعِیَّتِہ ۔

বাদশাহ একজন রক্ষক, তাহাকে তাহার প্রজাবৃন্দ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হইবে; পুরুষ তাহার পরিবারের রক্ষক, তাহাকে তাহার পরিবার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হইবে

وَالْمَرْاۃُ رَاعِیَۃٌ فی بیتِ زوجِھا وَ مَسؤُوْلٌ عَنْ رعیتھا ۔

 নারী তাহার স্বামীর ঘরের রক্ষিকা, তাহাকে তাহার রক্ষিত বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হইবে।

   وَالخادمُ رَاعٍ فی مَالِ سَیِّدِہ مَسؤُوْلٌ عَنْ رَعِیَّتِہ ۔ مُتَّفَقٌ عَلیہ ۔

চাকর তাহার মুনীবের মাল আছবাবের রক্ষক, তাহাকেও সেই সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হইবে।   বুখারী, মুসলিম!

و عنہ علیہ السّلام مَثَلُ الْمُدھِنِ فی حُدود اللہ والواقعِ فِیھا ۔

(১১) হুযুর (সাঃ) বলেন, — শরয়ী আহকাম প্রতিষ্ঠায় শিথিলতা অবলম্বনকারীগণ ও গুণাহে লিপ্তগণের উদাহরণ এই যে,

   – مَثَلُ قَوْمِ نِ استَھَمُّوا سَفِیْنَۃً فَصَارَ بَعْضُھُمْ  فی اَسْفَلِھا وصار بعضهم في اعلاها.

একদল লোক নৌকায় আরোহণ করিয়া নির্বাচন গুটিকা দ্বারা নিজেদের বসিবার স্থান নির্দিষ্ট করিয়া লইয়াছে  তাহাদের মধ্যে একজন বা কতক লোক নৌকার তলদেশে (গর্ভে) ও অন্যান্য লোক উপরভাগে অবস্থান করিয়াছে।

 فكان الذي في اسفلها يمرّ بالماء على الذين في اعلاها۔ فتأذّوْابہ فأَخَذَ فَأسًا ۔ فَجَعَلَ یَنْقُرُ اَسْفَلَ السَّفِیْنَۃِ فَاَتَوْہُ فَقَالُوْا مَالَکَ

তলদেশের ব্যক্তি পানির জন্য উপরভাগের লোকদিগের মধ্যে চলাফেরা করায় তাহারা  বিরক্ত হইয়াছে। ইহাতে  তলদেশের ব্যক্তি একটি কুঠার লইয়া নৌকার তলদেশ ফাড়িয়া ফেলিবার জন্য উদ্ধত হইয়াছে। তখন উপরস্থ লোকগণ তাহার নিকটে আসিয়া বলিল তোমার কি হইয়াছে?

قَالَ تَاَذَّیْتُمْ بِیْ وَلَا بُدَّ لِیَ مِنَ الْمَاءِ ۔  فَاِنْ اَخَذُوا عَلٰی یَدَیْہِ اَنْجَوْہُ وَاَنْجَوْ اَنْفُسَھُمْ  –

সে উত্তর করিল–আমার পানি আনা-নেওয়া করায় তোমরা বিরক্ত হইয়াছে। অথচ আমার পানির দরকার (তাই এখন নৌকা চিড়িয়া পানি বাহির করিব ।) এই সময় যদি তাহারা ঐ ব্যক্তির হাত ধরে তবে তাহাকেও বাঁচাইবে আর নিজেরাও বাঁচিবে,

 وَاِنْ تَرَکُوْہُ اَھْلَکُوْہُ وَاَھْلَکُوْا اَنْفُسَھُمْ – رواہ البخاری –

আর যদি তাহাকে ছাড়িয়া দেয় তবে তাহাকেও ধ্বংস করিবে এবং নিজেরাও  ধ্বংসপ্রাপ্ত হইবে।—বুখারী। (১২)

(12) اللّٰھُمَّ وَفِّقْ لَنَا اَنْ نَّعْمَلَ صَالحَ الْاعْمَالِ ۔ وَنَامُرَ بِا لْمَعْرُوفِ وَ نَنْھٰی عن جَمِیعِ الاَفْعَالِ ۔

 হে আল্লাহ! আমাদিগকে নেক কাজ করার এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে বাধাদানের তওফীক দান করুন।।

بَارَکَ اللہُ لَنَا وَلَکُمْ فی الْقُرْاٰنِ الْعَظِیْمِ –

(১৩) আল্লাহ তায়ালা মহাগ্রন্থ কুরআনের বরকত আমাদিগকে ও আপনাদিগকে দান করুন। |

اَعوذ باللہ من الشیطان الرّجیم –

 (১৪) বিতাড়িত শয়তানের প্রতারণা হইতে বাঁচিবার জন্য আল্লাহ তায়ালার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিতেছি।

وَمَن اَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّنْ دَعَا اِلَی اللہِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَّ قَالَ انَّنِیْ مِنَ الْمُسْلِمِیْنَ ۔

 (১৫) যে ব্যক্তি লোককে আল্লাহর দিকে ডাকে এবং নেক কাজ করে ও বলে আমি নিশ্চয়ই মুসলমানদের অন্তর্ভুক্ত, তাহার চাইতে ভাল বক্তা আর কে আছে?-কুরআন।

Thank you for reading the post.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top